স্থানীয় নির্বাচনে নারী কিভাবে নির্বাচিত হয়?

অথবা, স্থানীয় নির্বাচনে নারী নির্বাচিত হওয়ার পদ্ধতি বর্ণনা কর ।
অথবা, স্থানীয় নির্বাচনে নারী নির্বাচিত হওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে লিখ।
অথবা, স্থানীয় নির্বাচনে নারী নির্বাচিত হওয়ার পদ্ধতি উল্লেখ কর।
অথবা, স্থানীয় নির্বাচনে নারী নির্বাচিত হওয়ার পদ্ধতি আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
স্থানীয় নির্বাচন গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সর্বনিম্ন প্রশাসনিক স্তর বা পর্যায়, স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে। বিভিন্ন গ্রামের সমন্বয়ে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদই বাংলাদেশের স্থানীয় পর্যায়ের সবচেয়ে কার্যকর প্রশাসনিক কাঠামো।
স্থানীয় নির্বাচনে নারী : বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদে নারীদের জন্য আসন সংরক্ষণের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার কাঠামোতে তাদেরকে সংযুক্ত করার বিধান করা হয়। ১৯৭৬ সালে স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ অনুযায়ী তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ২ জন নারী সদস্য মনোনয়নের ব্যবস্থা করা হয়। উল্লিখিত ২ জন্য নারী সদস্য মহকুমা প্রশাসক কর্তৃক মনোনয়ন পেতেন। পরে ১৯৮৩ সালে জারি করা হয় ‘ইউনিয়ন পরিষদ অধ্যাদেশ ১৯৮৩’ অনুসারে মনোনীত নারী সদস্যদের সংখ্যা ২ থেকে ৩ জনে বৃদ্ধি করা হয়। এই অধ্যাদেশ বলে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ৩ জন মহিলা সদস্য নিজ নিজ উপজেলা পরিষদ কর্তৃক মনোনয়ন পেতেন। কিন্তু ১৯৯৩ সালে ‘স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ ১৯৮৩’ সংশোধনীর মাধ্যমে নারী প্রতিনিধিদের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত করার ব্যবস্থা রাখা হয়। এই মনোনয়ন প্রথার নারী সদস্যরা নিজস্ব যোগ্যতার পরিবর্তে
চেয়ারম্যান মেম্বারদের সাথে আত্মীয়তা, পরিবার, বংশের প্রভাব ইত্যাদির ভিত্তিতে মনোনয়ন পেতেন। কিন্তু পরোক্ষ এই মনোনীত ব্যবস্থার কারণে নারীরা ইউনিয়ন পরিষদের কোন সভায়, আলোচনা, কিংবা নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারতেন না। ১৯৯৭ সালে স্থানীয় সরকার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী একটি নতুন আইন প্রবর্তিত হয়। ১৯৯৭ সালের স্থানীয় সরকার দ্বিতীয় সংশোধনী আইন এর মাধ্যমে নারীদের জন্য ৩টি (এক-তৃতীয়াংশ) সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের বিধান করা হয়। নতুন এই আইনে প্রতিটি ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে ৯ জন সাধারণ সদস্য প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবার ব্যবস্থা করা হয় এবং এই ৯টি ওয়ার্ডকে ৩ ভাগে ভাগ করে প্রতিভাগে ১টি করে সদস্যপদ নারী সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়। সরকারের নারীর ক্ষমতায়নে গৃহীত এই পদক্ষেপ একটি বিরাট অর্জন বলা যায়। এরপর স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নারীর প্রত্যক্ষ নির্বাচন নিঃসন্দেহে এক নব অধ্যায়ের সূচনা করে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নির্বাচিত নারীগণই তৃণমূল পর্যায়ে বিংশ শতাব্দীর নারীর ক্ষমতায়নের অগ্রসৈনিক। পুরুষ প্রভাবিত কাঠামোতে অংশগ্রহণের জন্য এটা ছিল বাঙালি নারীর এক ঐতিহাসিক গণজাগরণ ।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%b8%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%ae-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*