বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে নারীর অবস্থান তুলে ধর?

অথবা, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে নারীর অবস্থান বর্ণনা কর।
অথবা, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে নারীর অবস্থান আলোচনা কর।
অথবা, বাংলাদেশের পার্লামেন্টে সংরক্ষিত আসনে নারীর অবস্থান সম্পর্কে বিবরণ দাও।
অথবা, বাংলাদেশের নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে ক্ষেত্রে সংরক্ষিত আসনে নারীর অবস্থানআলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সাধারণ আসন ৩০০ টি এবং সংরক্ষিত নারী আসন ৫০টি সাধারণ আসনে নারী পুরুষ সবাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্যগণ সংরক্ষিত নারী আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নারীদের নির্বাচন করেন। সাধারণত সংসদে যে দল সাধারণ আসনে বিজয়ী হয় তারাই সংরক্ষিত মহিলা
আসনের সদস্যদের নির্বাচিত করেন।
জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে নারীর অবস্থান : বর্তমানে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৫০টি। পূর্বে সংরক্ষিত নারী আসন ছিল ৪৫ টি। নিম্নে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে নারীর অবস্থান তুলে ধরা হলো :
১. ১৯৭৩ – ৭৫ : সংরক্ষিত আসনে ১৯৭৩ – ৭৫ পর্যন্ত প্রথম সংসদে ১৫ জন নারী সদস্য ছিলেন। এরা সবাই আওয়ামী লীগের মনোনীত । এ সময় অন্য কোনো দলের প্রার্থী ছিল না।
২. ১৯৭৯ : ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে ৩০ জন সদস্য নির্বাচিত হন। এরা সবাই বিএনপি হতে মনোনীত হন ।
৩.১৯৮৬ : ১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদে ৩০ জন নারী সদস্য নির্বাচিত হন। এরা সবাই জাতীয় পার্টি থেকে মনোনীত প্রার্থী ছিলেন।
৪. ১৯৮৮ : ১৯৮৮ সালের চতুর্থ সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এজন্য কোনো নারী সাংসদ নির্বাচিত হয়নি।
৫. ১৯৯০ – ৯১ : ১৯৯০ সালে সংরক্ষিত ৩০ টি আসনের মেয়াদ আরো ১০ বছর বাড়ানো হয়। ফলে ১৯৯১ সালের ৫ম সংসদে ৩০ জন নারী সাংসদ নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ২৮ জন ছিল বিএনপি মনোনীত ও ২জন জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সদস্য।
৬. ১৯৯৬ : ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচিত ৬ষ্ঠ সংসদে ৩০ জন নারী সদস্য ছিলেন। এরা সবাই বিএনপির মনোনীত। উল্লেখ্য এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জামায়াত, জাতীয় পার্টিসহ অধিকাংশ দল অংশ নেয়নি। এর বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন গড়ে উঠে। ফলে এ সংসদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস করে পদত্যাগ করে।
৭. ১৯৯৬ : ১৯৯৬ সালে সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ সংসদে ৩০ জন নারী সংসদ নির্বাচিত সাংসদ নির্বাচিত হয়। এর ২৭ জন ছিলেন আওয়ামী লীগের ০৩ জন ছিলেন জাতীয় পার্টির।
৮. ২০০১ – ২০০৫ : ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত হয় অষ্টম সংসদ নির্বাচন। ঐ বছর এপ্রিলে সংরক্ষিত আসনে নারী সাংসদের পদ বিলুপ্ত হয়। ফলে প্রথমে ২০০১ সালে সংরক্ষিত নারী আসনে কোনো সদস্য ছিল না। ২০০৪ সালে।
সংরক্ষিত আসন ৩০ থেকে ৪৫ টি করা হয়। এর মেয়াদ থাকবে পরবর্তী ১০ বছর। ফলে ২০০৫ সালে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ৪৫ জন নারী সাংসদ নির্বাচিত হয়। এর মধ্যে ৩৯ জন ছিল বিএনপির, ৩ জন জামায়াতের, ২ জন জাতীয় পার্টির ও ১ জন ইসলামী ঐক্যজোটের।
৯. ২০০৮ : নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালে। ২০০৯ সালে এর সংরক্ষিত আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগ পায় ৩৬ টি, বিএনপি পায় ৫ টি ও জাতীয় পার্টি পায় ৪ টি আসন ।
১০. ২০১৪ : ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিতব্য ১০ম সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করে। তবে এ নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগ পায় ৩৯ টি আসন, ওয়ার্কাস পার্টি পায় ১টি আসন, জাসদ পায় ১টি আসন, জাতীয় পার্টি পায় ৬টি আসন এবং স্বতন্ত্র পার্টি পায় ৩টি আসন।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, জাতীয় সংসদে নারীর অবস্থান মোটেই সন্তোষজনক নয়। কারণ জনসংখ্যার তুলনায় নারীর প্রতিনিধিত্ব খুবই কম। তাই সংসদে নারী আসন বাড়িয়ে সেখানে সরাসরি নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%b8%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%ae-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*