সংক্ষেপে সাক্ষাগ্রহণ প্রক্রিয়া আলোচনা কর ।

অথবা, সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
সামাজিক এর মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্যাবলি মৌখিক ভাষা বা কথোপকথন। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অত্যন্ত যৌক্তিক ও ফলদায়ক । মানুষের চিন্তাচেতনা ও মনের ভাব আদানপ্রদানের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে তার সন্তোষজনকভাবে যথার্থ ও নির্ভরযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে । তথ্যসংগ্রহের এ সমাজ অনুসন্ধান তথ্য সংগ্রহের একটি উল্লেখযোগ্য কৌশল হলো সাক্ষাৎকার।
সাক্ষাগ্রহণ প্রক্রিয়া : সাক্ষাগ্রহণকারীকে উত্তরদাতার নিকট থেকে সাক্ষাৎ গ্রহণের যেমন : পূর্বে কতিপয় বিষয় বিবেচনা করতে হয় ।
১. নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ : সাক্ষাৎ গ্রহণ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হচ্ছে উত্তরদাতাকে তার সুবিধামতো সময় দেয়ার জন্য অনুরোধ করা এবং কোন স্থানে তিনি আলোচনায় বসবেন তাও জানানোর জন্য অনুরোধ করা। এছাড়াও উত্তরদাতাকে সমীক্ষার (Study) উদ্দেশ্য এবং যে প্রতিষ্ঠান উক্ত সমীক্ষার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন এবং অর্থ সরবরাহ করেছেন তার নাম এবং ঠিকানাও জানাতে হবে । এ প্রেক্ষিতে উত্তরদাতা যদি বুঝতে পারেন যে, সমীক্ষাটি প্রয়োজনীয় এবং এক্ষেত্রে তার পরিবেশিত তথ্য (Informations) যথেষ্ট কাজে লাগবে, কেবল তখনই তিনি সময় দিবেন এবং সেই সময় অনুসারেই সাক্ষাগ্রহণকারীকে তার (উত্তরদাতার) নিকট যেতে হবে ।
২. যথাযথ ভূমিকা : সাক্ষাৎকার গ্রহণ প্রক্রিয়ার পূর্বে সমীক্ষার বিষয় সম্বন্ধে উত্তরদাতাকে সংক্ষেপে জানাতে হবে ।
সমীক্ষা পরিচালকের নিকট থেকে একটি পরিচয়পত্র (Credentials) উত্তরদাতার হাতে দিলে এবং ঐ পরিচয়পত্রে সমীক্ষার গুরুত্ব সংক্ষেপে বর্ণনা করে তার সাহায্য প্রার্থনা করলে উত্তরদাতার মনে কিছু আত্মনির্ভরশীলতা (Confidence) দেখা দিবে । এ প্রক্রিয়ার ফলে উত্তরদাতা সাক্ষাৎ গ্রহণ প্রক্রিয়ায় উত্তরদানে সহযোগিতা প্রদান করবে । ফলশ্রুতিতে অনেক সময় সাশ্রয় হবে এবং সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে ।
৩. সম্প্রদায়ের নেতাদের সহযোগিতা : প্রত্যেক সম্প্রদায়ের স্থানীয় কতিপয় নেতা থাকেন। তারা সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত। তাদের প্রতি এলাকাবাসীর যথেষ্ট শ্রদ্ধাভক্তি রয়েছে এবং কখনো তাদেরকে বিরক্ত (Annoy) করতে সচেষ্ট হয় না। দলনেতারা সাক্ষাগ্রহণকারীকে সহযোগিতা করতে সম্মত হলে দলের সকলেই তখন দলনেতাকে অনুসরণ করে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসে । সুতরাং প্রথমেই দলনেতার সাথে সাক্ষাৎ করে সমীক্ষার গুরুত্ব বুঝিয়ে বলা অধিকতর শ্রেয়। বহু লোককে বুঝানোর চেয়ে অল্প লোককে বুঝানো সহজতর । অধিকন্তু নেতাদের সাথে কিছু সময় অতিবাহিত করলে সমগ্র প্রক্রিয়াটি সহজ হয়ে উঠে।
৪. উৎসাহদান : সাক্ষাৎকার গ্রহণ প্রক্রিয়ায় উত্তরদাতাদের অধিকাংশই প্রথম দৃষ্টিতে (Prima facie) : সাক্ষাৎগ্রহণকারী এবং তার সমীক্ষার উদ্দেশ্য সম্বন্ধে সন্দেহপ্রবণ (Suspicious) থাকেন । সুতরাং সর্বাগ্রে এসব সন্দেহ নিরসন করা উচিত এবং সেই সাথে উত্তরদাতাকে উৎসাহদান করা অত্যাবশ্যক । এতে সাক্ষাৎকারের উদ্দেশ্য সফল হয়।
৫. সাক্ষাৎদাতার মনস্তত্ত্ব : একজন উত্তম সাক্ষাগ্রহণকারীকে সাক্ষাৎদাতার মনস্তত্ত্ব উপলব্ধি করা প্রয়োজন । কেননা অনেক লোক আছেন, যারা তোষামোদ (Flattery) পছন্দ করেন। উপাত্ত সংগ্রহের প্রয়োজনে তাদেরকে তোষামোদ করা উচিত । আবার অনেকে কাজ করতে পছন্দ করেন। তারা তোষামোদ কিংবা বাজে গল্প (Gossips) করে তাদের সময় নষ্ট করতে চান না । যত শীঘ্র সম্ভব তারা সাক্ষাৎকারের কাজ শেষ করতে চান। সুতরাং তাদের সাথে প্রয়োজনীয় কাজ দ্রুত সমাধা করা উচিত। প্রকৃতপক্ষে, সঠিক উপাত্ত সংগ্রহের জন্য সাক্ষাৎগ্রহণকারীকে সাক্ষাৎদাতার মনস্তত্ত্ব যথাযথভাবে উপলব্ধি করে সে অনুযায়ী আচরণ বা কাজ করা উচিত ।
৬. অল্প কথা : একজন উত্তম সাক্ষাগ্রহণকারীকে কম কথা বলা এবং অধিক শোনার গুণসম্পন্ন হতে হবে । অল্প কথায় সমীক্ষার গুরুত্ব বুঝিয়ে দিয়ে সাক্ষাৎদাতাকে কথা বলার স্বাধীনতা এবং প্রচুর সময় দিতে হবে, যেন তিনি স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক বেশি তথ্য সরবরাহ করতে পারেন। সাক্ষাৎদাতা যদি পূর্ণ তথ্য নিয়ে এগিয়ে না আসেন বা একই কথা পুনরাবৃত্তি করে অনর্থক সময় নষ্ট করেন বা মূল বিষয়বস্তু থেকে অন্যদিকে সরে যান, তখন তাকে সঠিক পথে আনার জন্য আলোচনার মধ্যে সাক্ষাগ্রহণকারী হস্তক্ষেপ বা বাধাদান (Intervene) করবেন ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহণ প্রক্রিয়ায় উপর্যুক্ত আনুষ্ঠানিকতাসমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করা হলে সাক্ষাৎকারের উদ্দেশ্য অর্জনে কোন অন্তরায় সৃষ্টি হবে না ।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*