বেগম রোকেয়ার আবির্ভাবের সময়ে তৎকালীন যুগ ও সামাজিক পরিবেশ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা কর।

অথবা, রোকেয়ার তৎকালীন যুগ ও পরিবেশ সম্পর্কে যা আন লিখ।
অথবা, রোকেয়ার তৎকালীন যুগ ও পরিবেশ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা :
বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া নারীর মুক্তি ও সর্বাঙ্গীণ কল্যাণের জন্য যে অবদান রেখেছেন তা নিঃসন্দেহে অবিস্মরণীয়। তাঁর সমগ্র জীবনব্যাপী আত্যন্ত্রিক সাধনা ছিল অবহেলিত ও পশ্চাৎপদ স্বগোত্রীয় মুসলমান নারীসমাজের সর্বাঙ্গীণ মুক্তি। নারীমুক্তির মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণের উদ্দেশ্যে তিনি স্বীয় জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। বাংলার মুসলমান নারীসমাজ তথা দেশ ও জাতির কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করে তিনি অসীম পুণ্যের অধিকারী হয়েছেন। তিনি যেমন নারী জাগরণের অগ্রদূত তেমনি পুণ্যময়ী। একথা অনস্বীকার্য যে, বাংলার কূপমণ্ডূকতা মুসলমান নারীসমাজকে তিনিই সর্বপ্রথম মুক্তিমন্ত্রে উজ্জীবিত করেন । তিনিই প্রথম মুক্তিপথে বাংলার মুসলমান নারীসমাজকে আলোর পথ দেখিয়েছেন। এ কারণে তিনি মুসলিম নারী জাগরণের দিশারী হয়ে থাকবেন। নারী জাগরণের অগ্রদূত পুণ্যময়ী বেগম রোকেয়ার ইহলোক ত্যাগের অর্ধশতাব্দীকাল অতিক্রান্ত হওয়ার পরও এদেশের নারী জাগরণ তথা দেশ ও জাতির ইতিহাসে তাঁর অবদান অমলিন হয়ে আছে।
রোকেয়া তৎকালীন যুগ ও পরিবেশ : বেগম রোকেয়ার আবির্ভাবের প্রাক্কালে তৎকালীন যুগ ও পরিবেশের অবস্থা ছিল শোচনীয়। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
১. মুসলিম সমাজের অনগ্রসরতা,
২. হিন্দুসমাজের অবস্থা,
৩. মোহামেডান লিটারেরি সোসাইটি,
৪. সেন্ট্রাল মোহামেডান এসোসিয়েশন ও ন্যাশনাল মোহামেডান এসোসিয়েশনের লক্ষ্য,
৫. অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ ও
৬. ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভ।
নিম্নে বেগম রোকেয়ার তৎকালীন যুগ ও পরিবেশ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো :
১. ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে ভাগ্য বিপর্যয়ে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়। ইংরেজ অধিকারের পর থেকে।অবিভক্ত ভারত তথা বাংলাদেশের মুসলমানদের দুর্ভাগ্যের সূচনা।মুসলমানদের অর্থনৈতিক অধঃপতন সমাজকাঠামোকে অত্যন্ত দুর্বল করে ফেলে। ফলে জীবনের সর্বক্ষেত্রে মুসলমানগণ পরাজিত হতে থাকে। বিশেষ
করে শিক্ষার ক্ষেত্রে মুসলমান সম্প্রদায় অত্যন্ত পশ্চাৎপদ ছিল। এদেশে ইংরেজ সরকার কর্তৃক শিক্ষাবিস্তার কার্যক্রমের ধারা অনুসরণ করলে দেখা যায়, মুসলমানদের ধর্মীয় শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে ১৭৮০ সালে কলকাতা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে ১৮০০ সালে ইংরেজ সিভিলিয়ান কর্মচারীদের বাংলা ভাষা শেখানোর উদ্দেশ্যে স্থাপিত হয় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ। ১৮২৯ সালে কলকাতা মাদ্রাসায় ইংরেজি ক্লাস খোলা হয় এবং ১৮৩৩ সালে এ প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি অবশ্য পাঠ্য করা হয়। ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে আইনগত কোন বাধা না থাকলেও মূলত আর্থিক সংগতির অভাবেই মুসলমান ছাত্ররা ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত ছিল। ২. বাংলাদেশের হিন্দু সমাজ ইংরেজি শিক্ষার ক্ষেত্রে মোটেও পিছিয়ে ছিল না। রামমোহন রায়, বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায়, ডেভিড হেয়ার, স্যার হাইড ইস্টের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ১৮১৬ সালে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলার উদীয়মান হিন্দু মধ্যবিত্ত সমাজের শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে এটি একটি যুগান্তকারী ঘটনা। রাজা রামমোহন রায় ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মত যুগ পুরুষের আবির্ভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষাবিস্তার ত্বরান্বিত হয়েছিল, সে যুগে শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে মুসলমান সমাজ অনেক পিছিয়েছিল। বাংলার মুসলমান সমাজে তখনও পর্যন্ত রাজা রামমোহন রায় কিংবা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ন্যায় যুগ পুরুষের আবির্ভাব ঘটে নি। শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বাংলার মুসলমানদের পশ্চাৎপদতা কাটিয়ে উঠার জন্য উনিশ শতকের প্রথমার্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টার অভিব্যক্তি হিসেবে কোন সংঘ বা সমিতি প্রতিষ্ঠিত হতে দেখা যায় না। অথচ ধীরগতিতে হলেও উনিশ শতকের প্রথম থেকেই বাংলাদেশের হিন্দু সমাজের মধ্যে জাগরণের সাড়া সৃষ্টি হয়। ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে তারা চাকরির ক্ষেত্রে একচ্ছত্র সুবিধা ভোগ করতে থাকে।
রাজা রামমোহন রায় প্রতিষ্ঠিত আত্মীয় সভা (১৮১৫), মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত তত্ত্ববোধিনী সভা (১৮৩৯),ডক্টর মুয়াটের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বিদ্বোৎসাহিনী সভা (১৮৫৩), কিশোরী চাঁদ মিত্রের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত সুহৃদ সমিতি (১৮৫৪) প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের কর্মক্ষেত্র হিন্দুসমাজের মধ্যেই ছিল সীমাবদ্ধ। সভাসমিতি ও পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে এ প্রতিষ্ঠানগুলো স্ব-স্ব সমাজের উন্নতি সাধনে ছিল তৎপর। ইংরেজ শাসকবর্গের সাথে আপস আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে হিন্দু সমাজের উন্নতি সাধনে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানসমূহ কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। ফলে বাংলার হিন্দু সমাজ স্বল্প সময়ের মধ্যে জ্ঞানে, কর্মে, শিক্ষা, স্বাস্থ্যে প্রভূত উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হয়।
৩. উনিশ শতকের শেষার্ধে ১৮৬৩ সালের এপ্রিল মাসে নওয়াব আবদুল লতিফ এবং সৈয়দ আমীর আলী প্রমুখ মনীষীদের সহযোগিতায় কলকাতায় ‘মোহামেডান লিটারেরি সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ব্রিটিশ ভারতের তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড এলগিনের উৎসাহ ও সহযোগিতায় নবাব আব্দুল লতিফ উক্ত সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলার মুসলমানদের কৃষ্টি সচেতন করে তোলার জন্য এটা হলো প্রথম প্রচেষ্টা। ইংরেজ শাসকের সঙ্গে বাঙালি মুসলমান সম্প্রদায়ের সহৃদয় সম্পর্কের প্রতিষ্ঠা ঘটানোই ছিল মোহামেডান লিটারেরি সোসাইটির অন্যতম উদ্দেশ্য।
৪. ইংরেজ শাসকবর্গের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক আদর্শের সাথে যে ব্রিটিশ ভারত তথা বাংলাদেশের মুসলমানদের সহযোগিতার প্রয়োজন আছে, সে সম্পর্কে নওয়াব আব্দুল লতিফ বিশেষভাবে তাগিদ দিয়েছিলেন।নওয়াব আব্দুল লতিফের অনুসৃত পন্থা সে যুগের অনেক মুসলমান মনীষীর পছন্দনীয় হয় নি। পৃথক সংগঠন গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা তাই অনুভূত হতে থাকে। পরবর্তী সময়ে ১৮৭৭ সালে স্থাপিত হয় ‘ন্যাশনাল মোহামেডান এসোসিয়েশন’। পরে প্রতিষ্ঠানটি সেন্ট্রাল মোহামেডান এসোসিয়েশন’ নামে পরিচিত হয়। এ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন বিচারপতি সৈয়দ আমীর আলী (১৮৪৯-১৯০৫)। উনিশ শতকের বাঙালি শিক্ষিত মুসলমানদের মধ্যে তিনি শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি ছিলেন। তিনি বিচার বিভাগে কর্মনিযুক্ত থেকে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির আসন অলঙ্কৃত করেছিলেন। একজন চিন্তাশীল লেখক ও ঐতিহাসিক গবেষক হিসেবেও তাঁর কৃতিত্ব অতুলনীয়। মোহামেডান লিটারেরি সোসাইটির ন্যায় সেন্ট্রাল মোহামেডান এসোসিয়েশন ইংরেজি শিক্ষার আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে। তবে ইংরেজ শাসকের প্রতি প্রতিষ্ঠানটির দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। মুসলমানদের প্রতি ইংরেজ শাসকবর্গের মনোভাব এবং মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষাবিস্তারে ইংরেজ সরকারের সকল কার্যক্রমে সৈয়দ আমীর আলী সমর্থন জানাতে পারেন নি। মোহামেডান লিটারেরি সোসাইটি’ এর উদ্দেশ্য ছিল ইংরেজ শাসকবর্গের পৃষ্ঠপোষকতা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা লাভ। অপরপক্ষে, ধীরে ধীরে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার অর্জনই ছিল ন্যাশনাল মোহামেডান এসোসিয়েশনের প্রধান লক্ষ্য।
৫. ১৯০৬ সালে ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ’ স্থাপিত হয় । ভারতীয় মুসলমানদের রাজনীতি সচেতন করে তোলাই ছিল “অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ’ এর মুখ্য উদ্দেশ্য। উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মক্ষেত্র বাংলার নবাব নাইটদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। সমাজের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে তাদের ছিল না কোন প্রভাব। ফলে অত্যন্ত ধীরগতিতে আশারাফ মুসলমানদের জাগরণ শুরু হয়। এটিই যখন ছিল সাধারণভাবে বাংলার মুসলিম সমাজের অবস্থা তখন এর সবচেয়ে পশ্চাৎপদ অংশ মুসলিম নারীসমাজের উন্নতির কথা চিন্তা করাও দুষ্কর। আধুনিক শিক্ষার সবকটি দরজা সে যুগে মুসলমান মেয়েদের সামনে ছিল রুদ্ধ। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভ এবং পরবর্তী সময়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর আমাদের দেশের যেসব ক্ষেত্রে উন্নতি সাধিত হয়েছে তার মধ্যে শিক্ষাও অন্তর্ভুক্ত। সামগ্রিকভাবে শিক্ষার কথা বলা হলেও আমাদের দেশের স্ত্রীশিক্ষার ক্ষেত্রেও যে কিছুটা অগ্রগতি সাধিত হয়েছে একথা অস্বীকার করা যায় না। বর্তমানে জাতীয় জীবনের প্রতিটি স্তরে প্রতিনিধিত্ব করার মত মেয়েদের মধ্য থেকে বেশ কয়েকজনকে পাওয়া যায়। সাধারণ শিক্ষা,চিকিৎসা, আইন, কারিগরি শিক্ষা এবং সে সাথে সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রেও মুসলিম নারীরা ধীর পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছেন। উচ্চ শিক্ষার কোন ক্ষেত্রেই আমাদের দেশের মুসলিম নারীরা আজ আর পিছিয়ে নেই। আমাদের দেশের মেয়েদের মধ্যে এখন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যকলাপ পরিচালনার জন্য কত রকমের সংগঠনই না গড়ে উঠেছে। মেয়েরা সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রেও আরও দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছেন। নিজের প্রচেষ্টায় বেশ কয়েকটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রচার করতেও তাঁদের দেখা গেছে। মেয়েদের মধ্যে রয়েছে অনেক কবি, সাহিত্যিক, গবেষক ও সাহিত্য সমালোচক। তাদের প্রচেষ্টায় উচ্চ শিক্ষার অনেক প্রতিষ্ঠানও আমাদের দেশে চালু রয়েছে। শিক্ষা ও বাণিজ্যের সকল ম শাখাতেও মেয়েদের অগ্রগতি লক্ষণীয়। পর্দা প্রথার নামে অমানবিক অবরোধ প্রথা সমাজে আর চালু নেই। মেয়েদের স্বাচ্ছন্দ্যে অগ্রগতি তথা নারী জাগরণ হঠাৎ করে আসে নি। মুসলিম নারীসমাজের মধ্যে জাগরণের বাণী যিনি সর্বপ্রথম প্রচার করতে শুরু করেন তিনি হলেন সে প্রাতঃসম্পর্কীয় যুগবদ্ধ মহিলা বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, বেগম রোকেয়ার আবির্ভাবের প্রাক্কালে যুগ ও পরিবেশের সার্বিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। বিশেষ করে বাংলার মুসলিম সমাজের অবস্থা ছিল শোচনীয়, শিক্ষাদীক্ষা, অর্থনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় কোন ক্ষেত্রেই উন্নত অবস্থা ছিল না। সমাজে নারীদের ক্ষেত্রটি ছিল আরও শোচনীয়। বেগম রোকেয়ার আবির্ভাবের পর বাংলার নারীসমাজের কিছুটা হলেও অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়। তৎকালীন যুগ, পরিবেশ, সমাজের রক্তচক্ষু সবকিছুকে উপেক্ষা করে তিনি এগিয়ে গেছেন। সমাজের স্ত্রীশিক্ষা বিরোধী মনোভাবের বিরুদ্ধে তিনি আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। সমাজের নিন্দা, গ্লানি, ভ্রূকুটি ও রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে তিনি অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের দৃঢ় পদক্ষেপে অগ্রসর হয়েছিলেন। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ক্ষেত্রে মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূতী অভিধা তাই সার্থক।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%b6-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%ac%e0%a7%87%e0%a6%97%e0%a6%ae-%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%95%e0%a7%87/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*