বিবাহের সংজ্ঞা দাও । বিবাহের বিভিন্ন ধরনগুলো আলোচনা কর ।

অথবা, বিবাহ বলতে কী বুঝায়? বিবাহের প্রকারভেদ আলোচনা কর।
অথবা, বিবাহ কী? আদিম সমাজে বিবাহের ধরন আলোচনা কর।
অথবা, বিবাহ কাকে বলে? বিবাহের শ্রেণিবিন্যাস কর।
উত্তরঃ ভূমিকা :
মানুষ সামাজিক জীব। মানবসমাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ‘বিবাহ’ ব্যবস্থা। একমাত্র মানবসমাজেই এ ব্যবস্থা প্রচলিত। সমাজবিজ্ঞানে বিবাহকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রতিষ্ঠান বলে মনে করা হয়। বিবাহ হলো পরিবার গঠনের একমাত্র উপায় এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক অনুষ্ঠান। যখন স্ত্রী-পুরুষের একত্রে বসবাস
করাকে সামাজিক স্বীকৃতি দেয়া হয়, তখনই তাকে বিবাহ বলে।
বিবাহ : বিবাহ বলতে একটা চুক্তির সম্পর্ককে বুঝায়। এটি সমাজের কোনো মানবশিশুকে সমাজ স্বীকৃত বা সামাজিক পিতা ও মাতা দান করে, যা একটা পরিবারের তথা একটা সমাজের নিকট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিবাহ পরিবার গঠনের পূর্বশর্ত। বিবাহ একটি সামাজিক চুক্তিপত্র, যা একজন পুরুষ ও একজন মহিলার মধ্যকার যৌন ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের নিশ্চয়তা দান করে। নৃতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহ হলো পুরুষ ও মহিলার মধ্যে এক ধরনের চুক্তির সম্পর্ক যা ধর্ম, সমাজ ও সংস্কৃতি অনুমোদিত।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : এডওয়ার্ড ওয়েস্টারমার্ক (Edward Westermarck) তাঁর ‘History of Human Marriage‘ গ্রন্থে বলেছেন, “বিবাহ নারী ও পুরুষের মোটামুটি স্থায়ী এমন একটি সম্পর্ক, যা কেবল সন্তান জন্মদান পর্যন্ত স্থায়ী হয় না, বরং এরপরও কিছুদিন স্থায়ী হয় পালোচনা কর । এল. এইচ. মর্গান (L. H. Morgan) এর মতে, “বিবাহ হচ্ছে আইনসঙ্গত গণিকাবৃত্তি।” বিশিষ্ট নৃবিজ্ঞানী ম্যালিনস্কি (Malinowski) এর মতে, “Marriage is a contract for the production and maintenance of children.” সমাজবিজ্ঞানী ই. আর. গ্রোভ (E. R. Grove) এর মতে, “বিবাহ একটি জনসমর্থিত ও আইনসম্মত বন্ধুত্ব ছাড়া আর কিছুই নয়।’ উপর্যুক্ত সংজ্ঞার আলোকে বলা যায় যে, বিবাহ মূলত বয়ঃপ্রাপ্ত পুরুষ ও মহিলার মধ্যে এমন এক ধরনের চুক্তির সম্পর্ক, যার মাধ্যমে তারা যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার এবং একই পরিবারে বসবাস করার সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্ম ও রাজনৈতিক সমর্থন লাভ করে।
বিবাহের বিভিন্ন ধরন : মানুষ সমাজে সাংস্কৃতিক জীব। সে হিসেবে সে (মানুষ) যৌন সম্পর্কের স্বীকৃতি, সন্তানের বৈধতা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নিরাপত্তা প্রভৃতি কারণে মানুষ বিয়ে করে থাকে। সমাজ ও অঞ্চলভেদে মানুষের সংস্কৃতির ভিন্নতা দেখা যায়। তাই মনোবিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন যে, বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন ধরনের বিবাহ ব্যবস্থা রয়েছে আর পতি-পত্নীর সংখ্যাও প্রত্যেক সমাজে ভিন্ন। পতি-পত্নীর সংখ্যার উপর ভিত্তি করে বিবাহকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়।
১. একক বিবাহ : একজন পুরুষ একজন মহিলার সাথে বিবাহ হলে তাকে একক বিবাহ বলে। স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জীবদ্দশায় কেউ আর দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারে না। তবে আইনসঙ্গত বা সমাজ সংগতভাবে প্রথম বিবাহ ছিন্ন হলে এসের মধ্যে যে কেউ নিজ ইচ্ছায় পুনর্বিবাহ করতে পারে, একে Monogamy marriage বা একক বিবাহ বলে। বর্তমান বিশ্বের আর্থসামাজিক উন্নয়নে এ ধরনের বিবাহের সংখ্যা বেশি। এটি পশ্চিমা বিশ্বের একটা অন্যতম বৈশিষ্ট্য। একক বিবাহ যদিও বর্তমান বিশ্বের একটি সর্বাধিক প্রচলিত বিবাহ রীতি, তথাপিও Murdoe তাঁর ‘World
Ethnographic Sample’ এ দেখিয়েছেন যে, ৫৬৫টি সমাজের মধ্যে কেবল ১৩৭টি (২৪%) সমাজে এ বিবাহ চর্চা হয়। আধুনিক শিল্পোন্নত সমাজ ছাড়া আরো দু’ধরনের সমাজে এ বিবাহ প্রথা প্রচলিত আছে। যথা : শিকার ও সংগ্রহ সমাজ। বিশেষ যবে সমাজে ভৌগোলিক গতিশীলতা বেশি সে ধরনের সমাজে একক বিবাহ দেখা যায়। যেমন- সামোয়া, ভেন্দা এবং আদামালমান এ বিবাহ প্রথা দেখা যায়। কৃষিজীবী সমাজেও যেমন- যোগী, ইয়োকোয়াদের উদাহরণ উল্লেখযোগ্য। মর্যাদাগত দিক থেকে একক বিবাহ (Monogamy marriage) সমাজব্যবস্থায় স্বামী ও স্ত্রী উভয়ই সমান সুযোগ সুবিধা ভোগ করে। বাংলাদেশে এ বিবাহ প্রথা সবচেয়ে বেশি প্রচলিত হয়ে থাকে।
২. বহুবিবাহ (Polygamy marriage) : একাধিক নারী-পুরুষ যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তাকে বহুবিবাহ বা Polygamy marriage বলে। এ বিবাহ পদ্ধতিতে একজন পুরুষ যেমন একাধিক মহিলাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে পারে, তেমনি একজন মহিলাও একাধিক পুরুষকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। সে ভিত্তিতে বহুবিবাহকে তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়। বহুবিবাহের শ্রেণিগুলো নিম্নে ছকের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলো :
ক. বহুপত্নীক বিবাহ (Polygyny marriage) : একজন পুরুষ যদি একাধিক মহিলাকে বিবাহ করে তবে তাকে Polygyny marriage বা বহুপত্নীক বিবাহ বলে। আধুনিক শিল্পায়িত সমাজে বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বে বিবাহের এ প্রথাটির ব্যাপক প্রচলন না হলেও বিশ্বের বহু সমাজে এটি প্রচলিত আছে। Ford and Beach (1951) এক সমীক্ষায় দেখিয়েছেন
যে, “১৮৫টি সমাজে ৮৩.৬% মানুষের মাঝে বহুপত্নীক বিবাহ রীতি প্রচলিত আছে।” আসামের নাগা আদিবাসীদের মধ্যে এ ধরনের বিবাহ দেখা যায়। আমাদের দেশে প্রাচীন হিন্দু ব্যবস্থায় এ রীতি প্রচলিত ছিল। এছাড়াও মুসলমান সমাজে ৪ জন পর্যন্ত স্ত্রী গ্রহণ করা বৈধ । গ্রামীণ কৃষিভিত্তিক সমাজে বহুপত্নীক বিবাহের বহু প্রচলন দেখা যায়। আবার যেসব সমাজে দীর্ঘ প্রসবোত্তর যৌন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেখানে বহুপত্নী বিবাহ দেখা যায়। যেমন- Hausa, Yoruba. এ জাতীয় সমাজে তুলনামূলকভাবে নারীদের সামাজিক মর্যাদা, অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার কম থাকে। কেননা এক্ষেত্রে মহিলারা অবৈতনিক শ্রমিক হিসেবে গণ্য হয়। বহুপত্নীক বিবাহের দুটি ধরন আছে । ধরন দুটি নিম্নরূপ :
i. রক্তসম্পর্কীয় বহুস্ত্রী (Sororal polygyny) : যখন একজন পুরুষের সাথে একাধিক নারীর বিবাহ হয় এবং তারা সম্পর্কে বোন হলে তাকে রক্তসম্পর্কীয় বহুস্ত্রী (Sororal polygyny) বলে । উত্তর আমেরিকার Crow উপজাতিদের মাঝে এ ধরনের বিবাহ রীতি প্রচলিত আছে।
ii. অরক্তসম্পর্কীয় বহুস্ত্রী (Non-sororal polygyny) : যখন একজন পুরুষ একাধিক নারীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং তাদের সম্পর্ক বোনের না হলে তাকে অরক্তসম্পর্কীয় বহুস্ত্রী (Non-sororal polygyny) বলে ।
খ. বহুপতি বিবাহ (Polyandry marriage) : একজন মহিলার সাথে দুই বা ততোধিক পুরুষের বিবাহ হলে তাকে বহুপতি বিবাহ বলে। বর্তমান বিশ্বে এ বিবাহ প্রথা খুব কম প্রচলিত। তবে বেশকিছু আদিম অধিবাসীদের মাঝে এ বিবাহ দেখা যায়। বিশ্বে ০.৫% সমাজে এ বিবাহ প্রথা প্রচলিত আছে। দক্ষিণ ভারতের নীলগিরি পাহাড়ের উপর বসবাসকারী পশুপালক গোষ্ঠী টোডা আদিবাসীরাই এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক। হিমালয় অঞ্চলের খাসা (Khasa)দের মাঝেও এ বিবাহ প্রচলিত। এস্কিমো (Eskimo)দের মাঝে বহুপতি গ্রহণে বাধা নেই। এ বিবাহ প্রথায় নারীদের মর্যাদা ও
সামাজিক অবস্থান অন্যান্য যে কোনো প্রথার চেয়ে তুলনামূলক বেশি। কেননা যাবতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের ভূমিকা অগ্রগণ্য । বাংলাদেশে এ প্রথা নেই। এ বিবাহ প্রথা দু’ভাবে প্রচলিত । যথা :
i. ভ্রাতৃত্বমূলক বহুপতি (Fracternal polyandry) : যখন এক স্ত্রীর স্বামীরা পরস্পর সম্পর্কে ভাই হয়, তখন তাকে Fracternal polyandry বা ভ্রাতৃত্বমূলক বহুপতি বলে । টোডা ও তিব্বতীয়দের মাঝে এরূপ বিবাহ প্রচলিত আছে।
ii. অভ্রাতৃত্বমূলক বহুপতি (Non-fracternal polyandry) : যখন এক স্ত্রীর স্বামীরা পরস্পর সম্পর্কে ভাই নয় তখন তাকে অভ্রাতৃত্বমূলক বহুপতি বলে। দক্ষিণ ভারতের নায়ারদের মাঝে এ বিবাহ প্রথা দেখা যায়।
গ. দলগত বিবাহ (Group marriage) : একাধিক মহিলা একাধিক পুরুষের মাঝে অনুষ্ঠিত বিবাহকে Groupmarriage বা গোষ্ঠী বিবাহ বলে। পৃথিবীতে গোষ্ঠী বিবাহ নেই বললেই চলে । নৃবিজ্ঞানী মর্গান (Morgan) মানবসমাজের বিকাশের বিশেষ একটি পর্যায়ে ‘কনস্যাংগুইন’ ও পুনানোয়াদের মাঝে এ ধরনের দলগত বিবাহের কথা বলেছেন। দলগত বিবাহ বহুপতি বিবাহের সাথে সম্পর্কিত মারকোবীয় দ্বীপের অধিবাসী
এবং অস্ট্রেলিয়ার ডিউরি আদিবাসীদের মধ্যে গোষ্ঠী বিবাহ বা দলগত বিবাহের উদাহরণ দেখা যায় । উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বিভিন্ন সমাজের আর্থসামাজিক অবস্থার কারণে বিয়ের বিভিন্ন ধরন
লক্ষ্য করা যায়। বিয়ের চারটি ধরন যথা : একক বিবাহ, বহুবিবাহ, দলগত বিবাহ এবং বহুপতি বিবাহ সর্বাধিক প্রচলিত। এ চারটি মৌলিক বিবাহের ধরন ছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন সমাজে নানা ধরনের বিবাহ প্রথা প্রচলিত রয়েছে। এদেরকে A typical marriage বা বিরল ধরনের বিবাহ বলে। নিম্নে সেগুলো উপস্থাপন করা হলো :
১. তীক বিবাহ (Symbolic marriage) : বিয়ের মাধ্যমে নারী ও পুরুষের মাঝে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বন্ধনের সৃষ্টি হয় কিন্তু প্রতীক বিবাহের ক্ষেত্রে তা হয় না। রোমান ক্যাথলিক নান (Nun) গণদেবতার স্ত্রী হিসেবে ভালোবাসার প্রতীকরূপে হাতে আংটি ধারণ করেন। তাদেরকে আলাদা দৃষ্টিতে দেখা হয়। ধর্মগুরুর নির্দেশে এরা দেবতাকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করে। আবার Mormon সম্প্রদায়ে দু’ধরনের প্রতীক বিবাহ হয়ে থাকে। যথা : ক. সাময়িক বিবাহ ও খ. চিরকালীন বিবাহ ।
২. যৌন সম্পর্ক বহির্ভূত বিবাহ (Non-sexual marriage) : বিয়ের একটি প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে যৌনতা, যার ফলে সন্তানের উৎপাদন ঘটে। এটি বিয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে Non-sextual marriage. এ ধরনের বিয়েতে যৌন সম্পর্ক ছাড়াই বিয়ের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা হয়ে থাকে। আমেরিকার ‘Mormon Pioneers’ দের মধ্যে বয়স্ক মহিলারা যৌন সম্পর্ক বহির্ভূত বিবাহ করে থাকে।
৩. নির্দিষ্ট সময়ের বিবাহ (Fixed-term marriage) : নির্দিষ্ট সময় বা অস্থায়ী বিবাহের ক্ষেত্রে বিবাহের কার্যাবলি যেমন- আর্থসামাজিক নিরাপত্তা, সন্তানের জন্মদান ইত্যাদি অল্প মাত্রায় সম্পাদিত হয়। এ ধরনের বিয়ের স্থায়িত্ব বিবাহের পূর্বেই ঠিক করা হয় । ইসলাম ধর্মেও মুসা বিবাহ একটি অন্যতম উদাহরণ।
৪. কল্পিত বিয়ে (Fictive marriage) : কোনো স্বার্থ লাভের উদ্দেশ্যে পরিবার গঠন ব্যতিরেকে যে বিয়ে সংঘটিত হয় তাকে Fictive marriage বা কল্পিত বিবাহ বলে। কোনো দেশের নাগরিকত্ব লাভের জন্য এ রকম বিয়ে হয়ে থাকে। USA এর উদাহরণ দেয়া যায়। যে দেশের জীবনযাত্রার মান উন্নত সেজন্য বিদেশি পুরুষ মহিলারা এ Fictive marriage বা কল্পিত বিবাহ করে থাকে। অন্যতম দুটি প্রথা হলো :
i. ভ্রাতৃ বিধবা বিবাহ (Levirate marriage) : সন্তান জন্ম হওয়ার আগে কোনো স্বামী মারা গেলে তার বংশ রক্ষার জন্য মৃত স্বামীর স্ত্রীকে মৃত ব্যক্তির ভাই বিয়ে করে। এক্ষেত্রে তাদের প্রথম সন্তানকে মৃত ব্যক্তির সন্তান কল্পনা করা হয়। যেমন- আফ্রিকার ‘Nuer’ ও ‘Julu’ উপজাতিদের মধ্যে এ প্রথা প্রচলিত।
ii. শ্যালিকা বিবাহ (Sororate marriage) : এটি Levirale এর বিপরীত। এক্ষেত্রে স্ত্রী মারা গেলে বিপত্নীক ব্যক্তি তার প্রথম স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করে এবং তাদের প্রথম সন্তান প্রথমা স্ত্রীর সন্তান হিসেবে কল্পনা করা হয়।
৫. সমলিঙ্গ বিবাহ (Same sex marriage) : সমলিঙ্গ বিবাহ প্রথা দু’প্রকার। যথা :
i. মহিলা মহিলা বিবাহ : এ বিবাহের ক্ষেত্র একজন নারী অন্য একজন নারীকে বিয়ে করে পুরুষের ভূমিকা পালন করে এবং কন্যাপণ হিসেবে Cattle payment করে। Evans pritchuds এর গবেষণায় সুদানের Nuer উপজাতিদের মাঝে এ বিবাহ দেখা যায়।
ii. পুরুষ পুরুষ বিবাহ : এ ধরনের বিয়ে Homophilic পর্যায়ে পাশ্চাত্যের শিল্পোন্নত সমাজে দেখা যায়। সেখানে উভয় Spouse বা দম্পতি সমান ক্ষমতাবান থাকে এবং পুরুষ হিসেবে আচরণ করে। এ ধরনের বিবাহ সুদানের Azandar দের মাঝে দেখা যায়।

৬. ভৌতিক বিবাহ (Ghost marriage) : সুদানের Nuer উপজাতিদের মাঝে বিভিন্ন ধরনের বিয়ের প্রথা প্রচলিত রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম Ghost marriage বা ভৌতিক বিয়ে । মানুষের বৈচিত্র্যময়তার কারণেই পৃথিবীতে এসব বৈচিত্র্যময় বিরল ধরনের বিবাহ দেখা যায়। আর বিবাহের এ বিরল ধরনের জন্যই বিয়ের সর্বজনগ্রাহ্য সংজ্ঞা দেয়া সম্ভবপর নয়। উল্লিখিত বিবাহ প্রথা ছাড়াও আরো বিবাহ প্রথা আছে। এগুলো নিম্নরূপ :
i. অনুলোম বিবাহ (Hypergamy marriage) : যখন উচ্চ বংশের ছেলের সাথে নিম্ন বংশের কন্যার বিয়ে হয় তাকে Hypergamy marriage বলে।
ii. ভাবপ্রবণ বিবাহ (Romantic marriage) : ছেলেমেয়ে যখন নিজ পছন্দমতো বিয়ে করে তাকে Romantic marriage বলে ।
iii.সংযোজিত বিবাহ (Arranged marriage) : বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সকলের উপস্থিতিতে যে বিবাহ সংঘটিত হয় তাকে সংযোজিত বিবাহ বা Arranged marriage বলে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, বিবাহ হচ্ছে মানবসমাজের একটি কার্যপ্রণালি যার মাধ্যমে পরিবার গড়ে উঠে। আদিম সমাজ থেকে বর্তমান সমাজ পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের বিবাহ ব্যবস্থার প্রচলন ছিল। তবে সমাজের ক্রমবিবর্তনের ধারায় আধুনিক এসকল বিবাহ পদ্ধতি সর্বাধিক জনপ্রিয় ও সমাজ স্বীকৃত।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*