বিকেন্দ্রীকরণের সুফলসমূহ কী?

অথবা, বিকেন্দ্রীকরণে সুবিধাসমূহ উল্লেখ কর।
অথবা, বিকেন্দ্রীকরণের সুবিধাসমূহ কী কী?
অথবা, বিকেন্দ্রীকরণের সুবিধাগুলো লিখ।
অথবা, বিকেন্দ্রীকরণের সুফলসমূহ উল্লেখ কর।
অথবা, বিকেন্দ্রীকরণের ইতিবাচক দিক উল্লেখ কর।
উত্তর।। ভূমিকা :
বিকেন্দ্রীকরণ বলতে বুঝায় আইন, বিচার বিভাগীয় এবং প্রশাসনিক কর্তৃত্ব সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নিম্ন পর্যায়ে স্থানাস্তার। কেন্দ্র হতে প্রয়োগ করা সম্ভব এমন কর্তৃত্ব ব্যতীত আর সকল কর্তৃত্বের সর্বনিম্ন স্তরে ভার অর্পণের নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিকেন্দ্রীকরণ বলা হয়।
বিকেন্দ্রীকরণের সুবিধাসমূহ: আধুনিক রাষ্ট্রের ক্রিয়াকলাপ বহুমুখী ব্যাপৃত ও বিস্তৃত। এতে কর্ম দায়িত্ব, উন্নয়ন যতটা সম্ভব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রশাসনিক সংগঠন ও ব্যাপক প্রসারতা লাভ করেছে, রাষ্ট্রের সর্বত্র সকল জনগণকে প্রশাসনের সেবা প্রশাসনের সেবা পৌঁছে দিতে হচ্ছে। এ ক্রমবর্ধমান কর্মকাণ্ড অন্তত রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে একটি কেন্দ্রীয় প্রশাসনের দ্বারা সম্পাদন করা মোটেও সম্ভব নয়। এজন্যই বিকেন্দ্রীকরণের সূচনা যার মাধ্যমে সম্ভব হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কী ঘটেছে তা জানা। রাষ্ট্রীয় প্রশাসনযন্ত্রের ন্যায় বৃহত্তর প্রশাসনগুলোর বিকেন্দ্রীকরণের কোনো বিকল্প নেই। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের সুবিধাগৃহ নিম্নরূপ :
১. জনগণের নিয়ন্ত্রণ ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে : প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ প্রশাসন ব্যবস্থায় জনগণের নিয়ন্ত্রণ এবং অংশগ্রহণকে নিশ্চিত করে। বিকেন্দ্রীকৃত প্রশাসনে সাধারণ জনগণ স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নিতে পারে এবং তারাও নিজেদের প্রশাসনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গস্বরূপ ভাবতে পারে। বিকেন্দ্রীকরণ নীতি কার্যকরভাবে গণতান্ত্রিক ভাবধারার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
২. সহযোগিতা স্থাপনের সুযোগ : বিকেন্দ্রীকৃত ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় এবং আঞ্চলিক বা প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে অধিকতর সুষ্ঠু সহযোগিতা স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন পর্যায়ে এ সহযোগিতা ও সমন্বয় কর্তৃত্বের মধ্যে কৃত্রিম প্রতিবন্ধকতা দূর করে সুদক্ষ প্রশাসনযন্ত্র গড়ে তুলতে সহায়ক হয়।
৩. সমন্বয়সাধন করা : সুষ্ঠু সমন্বয়সাধনের জন্য বিকেন্দ্রীকরণের নীতি সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বিকেন্দ্রীকরণের নীতি যদি বিভিন্ন সরকারি বিভাগ এবং কর্মের ক্ষেত্রে গৃহীত হয় তাহলে কোনো নির্দিষ্ট সমস্যাযুক্ত এলাকার যাবতীয় কার্য আঞ্চলিক দপ্তরে সমন্বয় করা যায়।
৪. লালফিতার দৌরাত্ম্য দূরীকরণ : প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ সরকারি সংগঠনের কাজে বিলম্ব এবং লালফিতার দৌরাত্ম্য দূরীভূত করতে সহায়তা করে। কেননা এক্ষেত্রে আঞ্চলিক দত্তরে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হলে কেন্দ্রীয় অফিসে কোনো প্রকার খবরাদি উল্লেখ করার প্রয়োজন হয় না।
৫. স্বাধীনতার প্রসার : প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের স্বাধীনতার প্রসার ঘটে। আঞ্চলিক কর্মকর্তাগণ তখন আর কেন্দ্রীয় দপ্তরের এজেন্ট হিসেবে কাজ করবে না, বরং তারা নিজেদের স্ব-স্ব ক্ষেত্রে ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব খাটিয়ে নতুন উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করবে।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, স্থানীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা বা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে বিকেন্দ্রীকরণের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থা ছাড়া স্থানীয় প্রশাসন কার্যকর ও অর্থবহ করে তোলা সম্ভব নয়।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%b7%e0%a6%b7%e0%a7%8d%e0%a6%a0-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*