বিকেন্দ্রীকরণের অসুবিধাসমূহ লিখ।

অথবা, বিকেন্দ্রীকরণের কুফল লিখ।
অথবা, বিকেন্দ্রীকরণের নেতিবাচক দিক উল্লেখ কর।
অথবা, বিকেন্দ্রীকরণের অসুবিধা সম্পর্কে বর্ণনা দাও।
অথবা, বিকেন্দ্রীকরণের অসুবিধাসমূহ উল্লেখ কর।
অথবা, বিকেন্দ্রীকরণের কুফল উল্লেখ কর।
উত্তর।। ভূমিকা :
বিকেন্দ্রীকরণ বলতে বুঝায় আইন, বিচার বিভাগীয় এবং প্রশাসনিক কর্তৃত্ব সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নিম্ন পর্যায়ে স্থানাস্তার। কেন্দ্র হতে প্রয়োগ করা সম্ভব এমন কর্তৃত্ব ব্যতীত আর সকল কর্তৃত্বের সর্বনিম্ন স্তরে ভার অর্পণের নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিকেন্দ্রীকরণ বলা হয়।
বিকেন্দ্রীকরণের অসুবিধা/কুফলসমূহ : বিকেন্দ্রীকৃত সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়সাধন করাই বিকেন্দ্রীকরণের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। সমন্বয়সাধনের কাজ এককেন্দ্রিক সংস্থায় অতি সহজেই করা যায়। কারণ এ সংস্থা যেহেতু একটি ক্ষুদ্র এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকে কাজেই এতে ঘর ঘন যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব। তাছাড়া কর্মচারীদের মধ্যেও যোগাযোগ রক্ষিত হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে, বিকেন্দ্রিক সংস্থায় কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক প্রশাসনের মধ্যে সহজে যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব নয়। বিশেষত আঞ্চলিক দপ্তরসমূহ যখন কেন্দ্রীয় দপ্তর হতে অনেক দূরে অবস্থান করে তখন।সমস্যা আরো প্রকট হয়ে দেখা দেয়। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের কুফল বা অসুবিধাসমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
১. নীতিনির্ধারণ ও রক্ষায় বাধার সৃষ্টি করে : প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ সামগ্রিকভাবে জাতীয় নীতি নির্ধারণ ও রক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। সুষ্ঠু প্রশাসন ব্যবস্থার জন্য যে সমরূপতা এবং ঐক্য প্রয়োজন বিকেন্দ্রীকরণ তা বিনষ্ট করে দেয়। বিশেষ করে যেখানে সরকারের নীতি দেশকে সামগ্রিকভাবে প্রভাবিত করে সেখানে বিকেন্দ্রীকরণের নীতি জটিল প্রতিবন্ধকতা গড়ে তোলে।
২. দৃষ্টিভঙ্গি সংকীর্ণ হয় : বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থায় কর্মচারীদের দৃষ্টিভঙ্গি সংকীর্ণ হয়। কর্মচারীগণ কেবল স্থানীয় এলাকাসমূহে নিজেদের দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখে। এর ফলে প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার নীতিসমূহ সংকীর্ণ রূপ পরিগ্রহ করবে এবং সামগ্রিক জাতীয় কল্যাণ বাধাপ্রাপ্ত হবে।
৩. ব্যয়ভার বৃদ্ধি : বিকেন্দ্রীকরণ নীতি প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করা প্রশাসনের ব্যয়ভার বহুলাংশে বাড়িয়ে তুলবে। সঠিক ও যথাযথ বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য আঞ্চলিক ক্ষেত্রে দপ্তরসমূহ এবং কর্মচারীদের পরিচালনার জন্য বহু অর্থব্যয় করতে হয়। তাতে জাতীয় অর্থের উপর চাপ বৃদ্ধি পায়।
৪. সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভিন্নতা : প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব বিভিন্ন বিভাগের উপর অর্পিত থাকে বিধায় নিয়মকানুন, রীতিনীতি, সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে নানা রকম বিভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। তদুপরি সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যস্থার অনুপস্থিতিতে প্রশাসনিক সমন্বয়ের ক্ষেত্রে বিলম্ব হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৫. কর্মচারীর অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দেয় : আঞ্চলিক ক্ষেত্রে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থায় নিয়োজিত কর্মচারীগণ অনেকটা অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দান করে। এসব নিম্নতম কর্মচারীগণ অনেক সময় বিচক্ষণতার সাথে কর্ম সম্পাদন করতে সক্ষম হয় না। এছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার ও নিম্নতম কর্মচারীদের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে দেখা যায়।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা বা আর্থিক সংস্থান না থাকলে তা সঠিক উদ্দেশ্য লাভ করতে পারে না। এক্ষেত্রে নীতি নির্ধারকদের বিবিধ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা আবশ্যক।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%b7%e0%a6%b7%e0%a7%8d%e0%a6%a0-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*