বাংলাদেশে পলি উন্নয়নের সমস্যাবলি সমাধান করার উপায়সমূহ উল্লেখ কর।

অথবা, পল্লি উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতাগুলো নিরসনের উপায় আলোচনা কর।
অথবা, পল্লি উন্নয়নের সমস্যাবলি সমাধানের উপায় সম্পর্কে লিখ।
অথবা, গ্রামীণ উন্নয়নের সমস্যাবলি সমাধানের উপায় উল্লেখ কর।
অথবা, গ্রামীণ উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা নিরসনের উপায় উল্লেখ কর।
অথবা, পল্লি উন্নয়নের অসুবিধা দূরীকরণের উপায় লিখ।
অথবা, পল্লি উন্নয়নের বাধা কীভাবে দূর করা যায়?
উত্তর৷ ভূমিকা : বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের বহুল আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রত্যয় হলো পল্লিউন্নয়ন।একটি দেশের পল্লির জনসাধারণের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের জন্য পল্লি উন্নয়নের সমস্যাসমূহ সমাধান করে পল্লির জনগণের আর্থসামাজিক শিক্ষা, সংস্কৃতি তথা জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য পল্লি উন্নয়নের সমস্যা সমাধানের উপায়সমূহের ভূমিকা অপরিহার্য।
বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নের সমস্যা সমাধানের উপায়সমূহ : বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এসব সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের উপর বাংলাদেশের পল্লিউন্নয়ন নির্ভরশীল। এজন্য বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নের সমস্যাবলি সমাধান এবং পল্লিউন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য নিয়ে সমস্যা সমাধানের উপায়সমূহ উল্লেখ করা হলো :
১. শিক্ষার প্রসার : পল্লিউন্নয়ন কর্মসূচি সফল করতে হলে গ্রামীণ জনসাধারণকে শিক্ষিত করে তুলতে হবে।আমাদের দেশের অধিকাংশ লোক অশিক্ষিত ও নিরক্ষর। শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে গ্রামীণ জনসাধারণ তেমন কোনো আগ্রহ প্রকাশ করতে পারছে না। এ অবস্থার উন্নতি করতে হলে গ্রামীণ জনসাধারণের মাঝে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে।
২. পর্যাপ্ত মূলধন সরবরাহ : পল্লি উন্নয়নের অন্যতম প্রধান সমস্যা মূলধনের অভাব। এ মূলধনের অভাব দূর করতে হলে পর্যাপ্ত কৃষিঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের দেশের অধিকাংশ কৃষক দরিদ্র। তারা গ্রাম মহাজনের নিকট থেকে চড়াসুদে ঋণ গ্রহণ করতে বাধ্য হয়।
৩. ভূমিসংস্কার : গ্রামঞ্চলের অধিকাংশ লোক দরিদ্র ও ভূমিহীন। এজন্য অধিকাংশ জমি মুষ্টিমেয় লোকের হাতে কেন্দ্রীভূত থাকে। এই দরিদ্র ভূমিহীন কৃষকদের অবস্থার উন্নতি করতে হলে ভূমিসংস্কারের মাধ্যমে ভূমিব্যবস্থার পরিবর্তন আনয়ন করতে হবে।
৪. সৎ ও দক্ষ নেতৃত্ব সৃষ্টি : পল্লিউন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য গ্রামাঞ্চলে সৎ ও দক্ষ নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে হবে। এজন্য গ্রামের শিক্ষিত ও বিত্তশালী লোকদের পল্লিউন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
৫. গ্রামভিত্তিক পরিকল্পনা প্রণয়ন : পল্লিউন্নয়ন কর্মসূচি সফল করে তুলতে হলে গ্রাম পর্যায়ে যথেষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। প্রতিটি গ্রামের জন্য প্রয়োজন সম্পদের উপর ভিত্তি করে স্থানীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। তাই স্থানীয় জনসাধারণের সক্রিয় সহযোগিতা ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে এ সকল পল্লিউন্নয়ন পরিকল্পনার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন সহজ হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পল্লিউন্নয়ন পরিকল্পনা সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য দেশের জনগণকে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করতে হবে। দেশের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত ও সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে পল্লিউন্নয়ন পরিকল্পানার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন সম্ভব।