গল্পকার মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে তোমার মতামত দাও।

উত্তর : ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ১৯ মে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বিহারের সাঁওতাল পরগণার দুমকা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হরিহর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতার নাম নীরদাসুন্দরী দেবী। তাঁদের আদি নিবাস ছিল ঢাকা জেলার বিক্রমপুরে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষাজীবন কেটেছে কলকাতা, টাঙ্গাইল, মেদিনীপুর প্রভৃতি স্থানে। ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক ও ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বিভাগে আই. এস. সি পাস করার পর কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে গণিতে অনার্স নিয়ে বি.এস.সি শ্রেণিতে পড়তে শুরু করেছিলেন। এখানে অধ্যয়নকালে বন্ধুবান্ধবদের সাথে বাজি ধরে তিনি ‘অতসীমামী’ নামে একটি গল্প লেখেন যা সাহিত্য পত্রিকা ‘বিচিত্রা’য় ছাপা হয়। এ একটি মাত্র গল্পই তাঁকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রতিশ্রুতিবান লেখকের মর্যাদা দান করে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় পড়াশুনা অসমাপ্ত রেখেই সাহিত্যকর্মকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি তিনি কম্যুনিস্ট রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। ত্রিশোত্তর বাংলা কথাসাহিত্যে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি অবিস্মরণীয় নাম। ছোটগল্পের ক্ষেত্রে তিনি অনেক বেশি উজ্জ্বল। তাঁর গল্পে মানুষের আত্মিক অন্ধকার ও জটিলতা অত্যন্ত ব্যঞ্জনাধর্মী ও বলিষ্ঠ বক্তব্যে উদ্ঘাটিত হয়েছে। মানুষের আদিম কামনার রূপ ও অস্তিত্বের সংকট কতখানি জটিল ও ভয়াবহ হতে পারে তা ‘প্রাগৈতিহাসিক’ গল্পে প্রকাশ পেয়েছে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘জননী’, ‘দিবারাত্রির কাব্য’, ‘পদ্মানদীর মাঝি’, ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’, ‘শহরতলী’, ‘চতুষ্কোণ’, ‘সোনার চেয়ে দামী’ প্রভৃতি উপন্যাস এবং ‘প্রাগৈতিহাসিক’, ‘অতসী মামী’ ও অন্যান্য গল্প, ‘সরীসৃপ’, ‘সমুদ্রের স্বাদ’, বৌ’, ‘ভেজাল’, ‘ছোট বকুলপুরের যাত্রী’ প্রভৃতি গল্পগ্রন্থ রচনা করে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর তিনি সন্ন্যাস রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*