আমার হাতের ‘ধূমকেতু’ এবার ভগবানের হাতের অগ্নিমশাল হয়ে অন্যায় অত্যাচারকে দগ্ধ করবে।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : আলোচ্য অংশটুকু ‘ধূমকেতু’র রূপকার প্রাবন্ধিক কাজী নজরুল ইসলামের ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’ প্রবন্ধ থেকে উৎকলিত হয়েছে।
প্রসঙ্গ : ‘ধূমকেতু’ পত্রিকাকে অগ্নিমশালের সাথে তুলনা করে তার মাধ্যমে সমস্ত অন্যায় অত্যাচারের বিনাশ হবে বলে কবি দৃঢ়ভাবে আশা করেছেন।
বিশ্লেষণ : ‘ধূমকেতু’ আকস্মিকভাবে আবির্ভূত হয়ে সারা আকাশকে জানিয়ে দেয় তার অবস্থান এবং প্রভাবের কথা। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম নিজ সম্পাদনায় অর্ধসাপ্তাহিক ‘ধূমকেতু’ প্রকাশ করে পরাধীনতার বিরুদ্ধে মিথ্যার বিরুদ্ধে অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করে তুলেছিলেন। জনতার কাতারে ধূমকেতুর অবস্থান এবং ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করে রাজশক্তি ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে কবিকে কারারুদ্ধ করেছিল। কবি দমে যান নি ভয়ও পাননি। কেননা, তিনি স্রষ্টার হাতের বীণা, স্রষ্টার নির্দেশেই তিনি বেজে উঠেন। ধূমকেতুর মতই ‘ধূমকেতু’ পত্রিকাটি তাঁর লেখনীর মাধ্যমে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের মত নিনাদ তুলেছিল। সে নিনাদে জেগে উঠেছে সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদ বিক্ষোভে রাজশক্তির মসনদ কাঁপিয়ে তুলেছে। বিদ্রোহের অগ্নিমশাল জ্বালিয়ে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে গেছে রাজশক্তির মিথ্যা ও অন্যায় ক্ষমতার আস্ফালনকে অগ্নিদগ্ধ করতে। জনতার অগ্নিরোষে তছনছ হয়ে যাবে রাজার মসনদ, ছারখার হয়ে যাবে রাজশক্তির বিলাসী স্বার্থ। কেননা, ভগবানের কাছ থেকে শক্তি পেয়েছে নিপীড়িত মানুষ, শক্তি পেয়েছে প্রতিবাদী পত্রিকা ‘ধূমকেতু’। কাজেই নির্ভীক চিত্তে নিরুদ্ধ গতিতে এগিয়ে যেতে কবির কোন দ্বিধা নেই। কবি জানেন ‘ধূমকেতুর’ সাথে সাথে জনতারও জয় অত্যাসন্ন।
মন্তব্য : ‘ধূমকেতুর’ মাধ্যমে দেশ ও জাতির আরব্ধ কর্মকে এগিয়ে নিতে তাঁর অব্যাহত প্রচেষ্টা সার্থক হবে বলে কবি আশাবাদী। কেননা, ভগবান প্রদত্ত শক্তি তাঁর সাথে আছে।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*