“সত্য মূল্য না দিয়ে সাহিত্যের খ্যাতি করা চুরি, ভালো নয়, ভালো নয় নকল সে শৌখিন মজদুরি।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : আলোচ্য অংশটুকু কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ঐকতান’ শীর্ষক কবিতা থেকে নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গ : কবি এখানে শিল্পগুণ সমৃদ্ধ সাহিত্য রচনার পরিবর্তে সাধারণ জীবনঘনিষ্ঠ সাহিত্য রচনায় প্রয়াসী হয়েছেন।
বিশ্লেষণ : সাহিত্য মানবজীবনের দর্পণ। এছাড়া সাহিত্য উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্মও বটে। কৃষক ও অন্যান্য শ্রমজীবী মানুষের সাথে যোগ দিয়ে যে কবি জীবনগাথা রচনা করবেন তাঁর বাণী শোনার জন্য কান পেতে আছেন রবীন্দ্রনাথ। সাহিত্যের আনন্দ আসরে কবি যা দিতে পারেননি, তার জন্য আক্ষেপ করেছেন। নবীন কবিদের আহ্বান করেছেন, দারিদ্র্যক্লিষ্ট মানুষের সত্য কথা লিখার জন্য । মনভোলানোর জন্য কবিতা লিখলে হবে না, কবিতা হতে হবে জীবনসর্বস্ব। সমাজবাস্তবতার সত্য কথা সাহিত্যে লিখতে হবে। সত্যকে মূল্য দিতে হবে। সাহিত্যের খ্যাতি চুরি করা ভালো নয়। এটা অন্যায় ও গর্হিত কাজ। শৌখিন মজদুরি ভালো নয়। তাই নবীন কবিদের সাধারণ মানুষের দুঃখকষ্টকে সাহিত্যে স্থান দিতে হবে। এদেশের মানুষ প্রাণহীন। প্রাণহীন এ জাতিকে আনন্দদানের জন্য কবিতা গান রচনা করতে বলেছেন কবি। অবস্থার চাপে সে মরুভূমি সদা নিরানন্দ। তাকে রসে পরিপূর্ণ করে দেবার জন্য কবিগুরু মানুষের অনাগত দিনের নবীন কবিকে সাহিত্যে সাদর আহ্বান জানিয়েছেন।
মন্তব্য : কবি জীবননির্ভর সাহিত্য রচনার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ সত্যমূল্য দিয়েই কাব্য রচনা করতে হবে। তা না হলে সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থতাই পর্যবসিত হবে।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!