এভাবে মানুষের চিত্তকে যে নতুন করে এক গরীয়ান আসন দেওয়া হলো, তার অর্থ কত, ইঙ্গিত কী বিপুল, দুর্ভাগ্যক্রমে বাংলার জাতীয় জীবনের সামনে থেকে আজ সেসব চিন্তা দূরে স্থিত।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : বক্ষ্যমাণ অংশটুকু ‘বুদ্ধি মুক্তি আন্দোলনের পথিকৃৎ কাজী আবদুল ওদুদের ‘বাংলার জাগরণ’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে সংগৃহীত হয়েছে।
প্রসঙ্গ : দেশের চিত্ত বিকাশের ক্ষেত্রে ব্রাহ্মধর্মে জ্ঞানের প্রতি যে গুরুত্বারোপ করা হয়েছিল জাতি তার সঠিক মূল্য অনুধাবনে ব্যর্থ হওয়ায় লেখক এ মন্তব্য করেছেন।
বিশ্লেষণ : রামমোহন রায় সনাতন হিন্দু ধর্মের পৌত্তলিকতা ও অবতারবাদের স্কুলে, ব্রাহ্মধর্মের উদারনৈতিক যে মতবাদ স্থাপন করেছিলেন তা জাতির জাতীয় জাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রামমোহনের পর ব্রাহ্মধর্মের নেতৃত্বে আসেন মহর্ষিদেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অক্ষয় কুমার দত্ত। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ঈশ্বরপ্রেমিক পুরুষ ছিলেন। সংসার নিষ্ঠা জ্ঞানানুশীলন সৌন্দর্য স্পৃহা সমস্তের ভিতরে ঈশ্বরপ্রেমই ছিল তাঁর অন্তরের অন্তরতম বস্তু। অক্ষয়কুমার ছিলেন জ্ঞান পিপাসু। সে পিপাসা এমন প্রবল যে এত দিনেও বাংলাদেশে সে রকম লোক অতি অল্পই জন্মগ্রহণ করেছে। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অক্ষয়কুমার দত্ত মিলে ব্রাহ্মধর্মের যে ভিত্তিভূমি স্থাপন করেছিলেন তা জাতির সামনে জ্ঞানের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে। “আত্ম প্রত্যয় সিদ্ধ জ্ঞানোচ্ছ্বলিত বিশুদ্ধ হৃদয়” উপনিষদের এ বাণীটি ব্রাহ্মধর্মের ভিত্তিভূমিরূপে তাঁরা স্থাপন করেন। একটি কথার মধ্য দিয়ে তাঁরা জাতিকে সে নতুন জীবনের সন্ধান দিয়েছিলেন তার ইঙ্গিত ছিল বিপুল এক চিন্তাচেতনার। কিন্তু জাতি দুর্ভাগ্যক্রমে তাঁদের চিন্তা-চেতনা থেকে দূরে সরে গেছে। তা না হলে সমাজের উন্নয়ন আরো ত্বরান্বিত হতো।
মন্তব্য: বাস্তবিকই দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অক্ষয় কুমার দত্ত জাতির সামনে যে আদর্শ রেখে গিয়েছিলেন জাতি তা অনুসরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!