আমাদের যাঁরা নেতৃস্থানীয় তাঁরাও খুব কমই আধুনিক জীবনের দিকে ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু বস্তুনিষ্ঠ প্রাবন্ধিক কাজী আবদুল ওদুদ বিরচিত ‘বাংলার জাগরণ’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত হয়েছে।
প্রসঙ্গ : সংস্কার আন্দোলনে নেতৃস্থানীয়রাও যে আধুনিক ধ্যানধারণা মেনে নিতে ব্যর্থ হয়েছে; সে প্রসঙ্গে লেখক আলোচ্য মন্তব্য করেছেন।
বিশ্লেষণ : রাজা রামমোহন রায় বাংলার জাগরণের পথিকৃৎ। পাশ্চাত্য জ্ঞানবিজ্ঞান এবং আধুনিক ধ্যানধারণায় তিনি বিশ্বাসী ছিলেন। রামমোহনের পরে যাঁরা বাংলার জাগরণের নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁরা ক্রমেই আধুনিক জীবনধারা থেকে পিছিয়ে পড়েছেন। এমন কি কেউ কেউ আধুনিক জীবনব্যবস্থাকে সন্দেহের চোখে দেখেছেন। রামমোহনের পরে ব্রাহ্ম সমাজের নেতৃত্বে আসেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও অক্ষয়কুমার দত্ত। অক্ষয়কুমার দত্ত ছিলেন জ্ঞানপিপাসু। তিনি জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চার উপর যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করেছিলেন । ব্রাহ্মধর্মের ভিত্তিভূমি হিসেবে “আত্মপ্রত্যয় সিদ্ধ জ্ঞানোজ্জ্বলিত বিশুদ্ধ হৃদয়” উপনিষদের এ বাণীটি বেছে নেওয়ার জন্য তিনি মানুষকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু দেবেন্দ্রনাথ ঈশ্বরভক্ত পুরুষ ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মধর্মের মূলবাণী আত্মপ্রত্যয়সিদ্ধ বিশুদ্ধ হৃদয় নিজের জীবনের ভিতরে এ কথা অনুভব করলেও কর্মক্ষেত্রে তাঁর চিরজাগ্রত নেতা অক্ষয়কুমারের ভিতর দিয়ে উৎসারিত এ আধুনিক মনোভাবকে তিনি তেমন শ্রদ্ধার চক্ষে দেখতে পারেননি। মধ্যযুগীয় এক ধরনের মানসিকতা তিনি পোষণ করতেন। অন্যান্য নেতৃস্থানীয়রাও এ মধ্যযুগীয় মানসিকতা থেকে মুক্ত হতে পারেননি। আর এজন্য চেষ্টা সত্ত্বেও আধুনিক অগ্রসর জাতিদের সাথে সমান তালে পা ফেলে চলবার সামর্থ্য আমাদের হয়নি, হচ্ছে না।
মন্তব্য : নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের আদর্শ সাধারণ মানুষ সহজেই গ্রহণ করে। আমাদের নেতৃস্থানীয়রা আধুনিক মনোভাব থেকে দূরে থাকার কারণে জাতি উন্নত জীবনধারণে ব্যর্থ হয়েছে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a6%b0%e0%a6%a3-%e0%a6%aa%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%80-%e0%a6%86/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*