ইসলামে স্ত্রী হিসেবে নারীর মর্যাদা কেমন?
অথবা, ইসলামে স্ত্রীর মর্যাদা সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, ইসলামে স্ত্রী হিসেবে নারীর মর্যাদার বর্ণনা দাও।
অথবা, ইসলাম অনুসারে স্ত্রীর মর্যাদা সম্পর্কে লিখ।
অথবা, ইসলামে স্ত্রী মর্যাদা সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?
উত্তর ভূমিকা : পৃথিবীতে ইসলামের পূর্বে যত সভ্যতা বিকাশ লাভ করেছে সব সভ্যতাই নারীকে ছোট করে দেখেছে। একমাত্র ইসলামই এ অবস্থা থেকে বের হয়ে নারীদেরকে সম্মানের পাত্র হিসেবে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে মর্যাদা নিয়েছে। ইসলাম ধর্মে নারীকে মাতা, স্ত্রী, কন্যা হিসেবে বিশেষ অধিকার ও সম্মান দিয়েছে। নিম্নে ইসলামে স্ত্রী
হিসেবে নারীর মর্যাদা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
স্ত্রী হিসেবে নারীর মর্যাদা : বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রী উভয়েই একে অপরের অতি আপনজন এবং ঘনিষ্ঠতম বন্ধু হয়ে যায়। একটি অপরিচিত মহিলা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর পিতা-মাতা, ভাই-বোন ও অন্য আপনজনদের পরিত্যাগ করে স্বামীর নিকট আপনজন হিসেবে আসে। সে কারণে স্বামী অত্যন্ত স্নেহ মমতা ও ভালোবাসা দিয়ে তাকে বশ করবে। তার সাথে সর্বদা সুন্দর ব্যবহার করবে। কখনো তার সাথে দুর্ব্যবহার করবে না এবং তাকে ঘৃণা ও অপছন্দ করবে না। স্বামী-স্ত্রীর খাওয়া পড়ার দায়িত্বভার গ্রহণ করবে। স্ত্রী অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে এবং তাকে উত্তম পোশাক পরিধান করাবে। এ মর্মে আল্লাহপাক ঘোষণা করেন, “আর তোমরা তাদের সাথে সুন্দর ব্যবহার কর। যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর তবে এমন হতে পারে যে আল্লাহ যাতে প্রভূত কল্যাণ রেখেছেন, তোমরা তাকেই অপছন্দ করছ (সূরা নিসা-১৯ আয়াত)। পবিত্র কুরআনে নারী ও পুরুষকে পরস্পরের বন্ধু ও সহযোগী, এমনকি স্বামী স্ত্রীকে পরস্পরের ভূষণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, “তারা (স্ত্রীরা) তোমাদের (পুরুষের) ভূষণ এবং তোমরাও তাদের ভূষণ” (সূরা বাকারা-১৮৭ আয়াত)। পবিত্র কুরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে “মুমিন পুরুষ ও নারী পরস্পরের বন্ধু বা সহযোগী।” স্ত্রীর অধিকার সম্পর্কে রাসূল (স) বলেছেন, “স্ত্রীদের কাছে যারা উত্তম, তারাই তোমাদের মধ্যে উত্তম।” তিনি আরো বলেন, “স্ত্রীদের উপর তোমাদের যেরূপ অধিকার রয়েছে, তোমাদের উপরও তাদের অনুরূপ অধিকার রয়েছে।” এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ নিশ্চয় সুবিচার ও সদাচরণ করার জন্য তোমাদের প্রতি আদেশ করেছেন।”
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনায় স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, ইসলাম স্ত্রী হিসেবে একজন নারীকে যে মর্যাদা দিয়েছে তা অতুলনীয়। তাই ইসলামের বিধান যদি যথার্থভাবে পালন করা হয় তাহলে সমাজে নারী-পুরুষ বৈষম্য থাকবে না।