আধুনিক যুগকে রেনেসাঁ বলা হয় কেন?
অথবা, আধুনিক যুগকে রেনেসী বলার কারণ কী?
অথবা, “আধুনিক যুগ হলো রেনেসাঁকোর যুগ” উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
অথবা, “আধুনিক যুগকে রেনেসাঁর যুগ বলা হয় কেন?
অথবা, “আধুনিক যুগকে রেনেসাঁর যুগ বলার পিছনে কী কী কারণ রয়েছে।
উত্তর।। ভূমিকা : চৌদ্দ শতকের শেষভাগ থেকে শুরু করে খোলো শতক পর্যন্ত আনবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেএে ইউরোপে যে বিস্ময়কর পরিবর্তন সাধিত হয় তাই রেনেসা বা নবজাগরণ নামে পরিচিত। মানবসভ্যতাকে মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে নিয়ে আসার পিছনে রেনেসা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে।
রেনেসাঁ : রেনেসা কথাটির অর্থ হলো পুনর্জন্ম, সাধারণত রেনেসাঁ বলতে গ্রিক ও রোমান সাহিত্য, দর্শন, শিল্পকলা প্রভৃতি সম্পর্কে জানবার এক অদম্য উৎসাহ বুঝায়। প্রাচীন সবকিছু জেনে তা যুক্তিতর্কের দ্বারা বুঝে তা তো ভালো তা গ্রহণ করার আগ্রহ রেনেসাঁর একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। রেনেসাকে বলা হয় জগৎ ও জীবনের শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার।
আধুনিক যুগছে রেনেসাঁ বলার কারণ : শুধু সাহিত্য ও দর্শনেই নয়, জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় তাদের এ জ্ঞাসু দৃষ্টি প্রসারিত হ । অর্থনীতি, ভাস্কর্য, শিল্পকলা প্রভৃতি বিষয় এক সৃজনশীল নতুন চেতনা ও সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। এভাবেই পশ্চিম ইউরোপের মানুষের মধ্যে তার লুকায়িত শক্তি ও সম্ভাবনা সম্পর্কে এক ব্যাপক ও মুগভীর চেতনা জেগে উঠল এবং এ শক্তি ও সম্ভাবনার বাস্তব ও ফলপ্রসূ রূপ দেওয়ার জন্য সে তখন তৎপর হয়ে উঠল। এজন্য আলোচ্য যুগটিকে রেনেসাঁ নবজাগরণ বা জ্ঞানের পুনরুজ্জীবন বলে অভিহিত করা হয়। প্রাচীন গ্রিকদের দর্শন পঠন পাঠনের প্রতি এক ব্যাপক ও সুগভীর আগ্রহ বেনেলা দর্শনের প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য। সময়ে মধ্যযুগীয় গোটা স্কলাস্টিক পদ্ধতিকে বাকচাতুর্য ও অহেতুক দ্বান্দ্বিক বিশ্লেষণ বলে প্রত্যাখ্যান করা হয় এবং হলে এক নতুন লঞ্জিক প্রবর্তনের চেষ্টা করা হয়। অবশ্য রেনেসাঁর তে তেমন কোন মৌলিক চিন্তার উদ্ভব ঘটতে দেখা যায় না। এ সময়ের চিন্তা ছিল অপরিপক্ক ও অনেকাংশে প্রাচীন ঘেঁষা। তবে আস্তে আস্তে স্কলাস্টিক পদ্ধতি পরিহার করা হয় এবং প্রাচীন পদ্ধতির ব্যাপক অনুকরণ হ্রাস পায়। মানুষের চিন্তা ক্রমশ অধিকতর স্বাধীন ও মৌলিক হতে শুরু করে। আর এভাবে আধুনিক দর্শনে উপনীত হয়। তাই আধুনিক যুগকে রেনেসাঁর যুগ বলে অভিহিত করা হয়।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, প্রথমে রেনেসাঁর সুত্রপাত ঘটে ইতালির বিভিন্ন নগরে। এসব নগরের শাসকগণ রেনেসাঁর প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠেন এবং এর পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করেন। তবে অতি অল্প সময়ের মধ্যে রেনেসাঁর বাণী ইতালির সীমানা ছাড়িয়ে অন্যান্য দেশেও প্রসারিত হয়।