শাসন বিভাগে নারীর অবস্থান আলোচনা কর।

অথবা, শাসন বিভাগে নারীর অংশগ্রহণ মূল্যায়ন কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইন, শাসন ও বিচার বিভাগে নারীর অংশগ্রহণের ইতিহাস অনেক পুরোনো। পুরুষের পাশাপাশি নারীরা দীর্ঘ সময় ধরে এসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানে পুরুষের চেয়ে নারীর প্রতিনিধিত্ব অনেক কম। এর কারণ হচ্ছে আমাদের পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারীদের বাইরের কাজের অনুপযুক্ত মনে করা হয় এবং গৃহের কাজের উপযুক্ত মনে করা হয়। এ ধরনের পিতৃতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে নারীরা বাইরের কাজে তেমন অংশগ্রহণ করতে পারে না তাই এসব প্রতিষ্ঠানে নারীর অংশগ্রহণ কম। কিন্তু দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য এবং জেন্ডার সংবেদনশীল সমাজ গঠনের জন্য আইন, বিচার এবং শাসন বিভাগে নারীর সমঅংশীদারিত্ব প্রয়োজন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে চাহিদা অনুযায়ী শাসন বিভাগে নারীর অবস্থানের প্রকৃতি সন্নিবেশিত হলো :
শাসন বিভাগে নারী : শাসন বিভাগ সাধারণত নীতি নির্ধারণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট। আর এক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং প্রশাসনিক নেতৃত্বের প্রয়োজন হয়। রাজনৈতিক নেতৃত্বে মন্ত্রী এবং প্রশাসনিক পর্যায়ে আমলাগণ দায়িত্ব পালন করে থাকেন। অথচ নীতি নির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণের সুযোগ কম। ১৯৭২- ২০০১ সাল পর্যন্ত মন্ত্রিসভায় নারীর অংশগ্রহণের হার কিরূপ ছিল তা লক্ষ্য করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। বাংলাদেশে নারী মন্ত্রীর সংখ্যা স্বল্প এবং তাদেরকে মেয়েলি বিষয় বলে চিহ্নিত এমন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী হিসেবে। অর্থাৎ নারীগণ নরম বা কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। যেমন—মহিলা ও শিশু বিষয় মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রভৃতির দায়িত্বে থাকেন নারীরা। তবে মাঝেমধ্যে কৃষি, খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়েও নারীদের মন্ত্রিত্ব লক্ষ্য
করা গেছে। কিন্তু পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, তথ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতো শক্তিশালী মন্ত্রণালয়েও নারীকে বর্তমান দেখা যায়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, শাসন বিভাগে নারীর অবস্থান এখনো তেমন ইতিবাচক নয়। শাসন বিভাগে নারীর সমঅংশীদারিত্ব ব্যতীত নারী উন্নয়ন সম্ভব নয় এবং একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নও সম্ভব নয়। কারণ দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা যদি সবকিছু থেকে পিছিয়ে থাকে তাহলে সমাজেরও উন্নয়ন হবে না। তাই সবাইকে বুঝতে হবে নারী উন্নয়ন মানে সমাজেরও উন্নয়ন। একথা উপলব্ধি করে রাষ্ট্রের শাসন বিভাগে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে তাহলে নারীদেরও যেমন উন্নয়ন হবে তেমনি সমগ্র সমাজের ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%b8%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%ae-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*