নেতৃত্ব বলতে কী ঝুঝ?

অথবা, নেতৃত্ব কাকে বলে?
উত্তর৷ ভূমিকা :
একটি জাতির সুষ্ঠু বিকাশের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন নেতৃত্ব। যোগ্য নেতৃত্ব যেমন একটি জাতিকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দিতে পারে, ঠিক তেমনি যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে একটি জাতি ধ্বংসের অতল গহ্বরে তলিয়ে যেতে পারে । মালয়েশিয়ার দিকে তাকালে দেখা যায় যে, সেখানকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড: মাহাথির মোহাম্মদ তাঁর দীর্ঘ বাইশ বছরের শাসনামলে তিনি বিপর্যস্ত মালয়েশিয়াকে বিশ্বের বুকে একটি ধনী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। একই কথা উল্লেখ করা যায় চীন এর নেতা মাও সেতুং এর ক্ষেত্রেও। তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে দুর্দশাগ্রস্ত চীন আজ পরিণত হয়েছে মহাচীনে। বাংলাদেশ আজ যে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত তার পিছনে রয়েছে এদেশের নেতৃত্বের গুণাবলি। অন্যদিকে আজ খণ্ড-বিখণ্ড পাকিস্তানের এ দুর্গতির পিছনে রয়েছে এর ত্রুটিপূর্ণ নেতৃত্ব। সমাজ জীবনের লক্ষ্য অর্জনের পন্থা ও মাধ্যম হলো নেতৃত্ব। সুতরাং, সমাজ জীবনের সকল ক্ষেত্রে যেমন- সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে নেতৃত্বের রয়েছে মহান ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা।
নেতৃত্ব : সাধারণভাবে বলা যায়, যেসব কাম্য গুণাবলি একজন বা একদল ব্যক্তিকে সমাজের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য উদ্দীপ্ত করতে পারে তাকেই নেতৃত্ব বলে। অর্থাৎ, নেতৃত্ব হলো একটি সামাজিক গুণ ।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নেতৃত্ব সম্পর্কে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। নিম্নে তাঁদের কতিপয় সংজ্ঞা উল্লেখ করা হলো :
সি. আই. বার্নার্ড (C. I. Bernard) বলেছেন, “নেতৃত্ব হলো ব্যক্তিবর্গের এমন গুণাবলি, যার মাধ্যমে তারা সংগঠিত কর্ম উদ্যোগে জনগণের অথবা তাদের কার্যক্রমের দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে।” এলভিন ডব্লিউ. গুল্ডনার (Alvin W. Gouldner) এর মতে, “নেতৃত্ব ব্যক্তি বা দলের সে নৈতিক গুণাবলি, যা অন্যদের অনুপ্রেরণা দিয়ে বিশেষ দিকে ধাবিত করে।” আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী কিম্বল ইয়ং (Kimbal Young) বলেছেন, “নেতৃত্ব হলো ব্যক্তির সে গুণাবলি, যার মাধ্যমে সে অন্যদের কর্মধারাকে প্রভাবিত করে এবং অন্যদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে।” কুন্জ ও ডনেল এর মতে, “সাধারণ উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য জনগণের মধ্যে সহযোগিতা সৃষ্টি করার অনুপ্রেরণা প্রদান করা হচ্ছে নেতৃত্ব।” মার্শাল মন্টগেরামী বলেছেন, “নেতৃত্ব হচ্ছে এক ধরনের যোগ্যতা, যা নারীপুরুষকে কোন একটি সর্বজনীন উদ্দেশ্যে পরিচালিত করতে পারে।” ফিলিপ সেলজনিক বলেছেন, “সামাজিক অবস্থা কিংবা পরিবেশের প্রয়োজন মেটানোর জন্য সম্পাদিত যে কাজ তাই হচ্ছে নেতৃত্ব।”
উপসংহার : উপর্যুক্ত সংজ্ঞাগুলোর আলোকে বলা যায় যে, নেতৃত্ব বলতে আমরা কোন ব্যক্তির সে নৈতিক গুণাবলির সমষ্টিকে বুঝি, যা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য জনগণকে প্রভাবিত করতে পারে এবং নিজের প্রতি তাদেরকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%b8%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%ae-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*