নারী উন্নয়নের এ্যাপ্রোচসমূহ আলোচনা কর।

অথবা, নারী উন্নয়নের পদ্ধতিগুলো বর্ণনা কর।
অথবা, নারী উন্নয়নের পদ্ধতিগুলো লিখ।
অথবা, নারী উন্নয়নের পদ্ধতিগুলো কী কী?
অথবা, নারী উন্নয়নের পদ্ধতিগুলোর বিবরণ দাও।
অথবা, নারী উন্নয়নের পদ্ধতিগুলো উল্লেখ কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নারী উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ বা নীতি বা এ্যাপ্রোচ গ্রহণ করেছে। উন্নয়নে নারী সমাজের ভূমিকার স্বীকৃতি এবং দরিদ্র নারীদের কল্যাণের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
নারী উন্নয়নের এ্যাপ্রোচসমূহ : নিম্নে নারী উন্নয়নের এ্যাপ্রোচসমূহ আলোচনা করা হলো :
১. কল্যাণমূলক পদ্ধতি (Welfare approach) : উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নারী সমাজের উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত এ পদ্ধতি খুবই জনপ্রিয় ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রধান নির্ভরশীল গ্রুপ নারী সমাজকে সাহায্য করার জন্য কল্যাণ পদ্ধতির উদ্ভব ঘটে। একজন উত্তম মাতা হিসেবে নারীকে উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্তকরণই এ পদ্ধতির লক্ষ্য।
২. ন্যায়ভিত্তিক পদ্ধতি (Equity approach) : এ পদ্ধতি উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে স্বীকার করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে WID গ্রুপ এ মর্মে নিশ্চিত হয় যে, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে পুঁজিবাদী অর্থনীতি নারী ও পুরুষের মধ্যে অসমতা বৃদ্ধি করছে। এই পটভূমিতে ন্যায়ভিত্তিক পদ্ধতির উদ্ভব ঘটে। এতে মনে করা হয় যে, নারী প্রজনন ও উৎপাদন উভয় ভূমিকা দ্বারাই অর্থনেতিক পদ্ধতিতে অবদান রাখতে পারে।
৩. দারিদ্র্যবিরোধী পদ্ধতি (Anti-poverty approach) : দারিদ্র্যবিরোধী পদ্ধতি নারীর সুবিধা প্রাপ্তিতে গুরুত্ব দেয়। যেমন- নারীর জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হওয়াটাই দারিদ্র্যবিরোধী পদ্ধতির মূল বিবেচ্য বিষয়। দারিদ্র্যবিরোধী পদ্ধতিতে নারী-পুরুষের অসমতা হ্রাস করার লক্ষ্যে আয় বৈষম্য হ্রাস করার উপর গুরুত্ব দেয়।
৪. দক্ষতা পদ্ধতি (Efficiency approach): ১৯৮০’র দশক থেকে নারী উন্নয়নে দক্ষতা পদ্ধতি একটি উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃত হয়ে আসছে। উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন দক্ষতা আর অর্থনীতিতে নারীদের অবদানের মধ্যদিয়ে উন্নয়ন অধিক দক্ষ ও কার্যকর হয়। এ পদ্ধতিতে মনে করা হয় যে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে নারী-পুরুষের মধ্যে অধিক সমতা বিধান করবে।
৫. ক্ষমতায়ন পদ্ধতি (Empowerment approach) : তৃতীয় বিশ্বের নারীবাদী লেখিকা কর্মীরাই মূলত এ পদ্ধতির উদ্ভাবক। ক্ষমতায়ন পদ্ধতি মনে করে যে, নারী-পুরুষের মধ্যে অসমতা রয়েছে এবং নারী পুরুষের অধঃস্তন। এ অবস্থান জন্য দায়ী প্রধানত পরিবার, ধর্ম, বর্ণ, রক্ত, শ্রেণি ও ঔপনিবেশিক শাসন। বর্তমান অবস্থায় নারীরা আন্তর্জাতিক
অর্থব্যবস্থার দ্বারা নিপীড়িত হয়।
৬. অধিকারভিত্তিক পদ্ধতি (Right-based approach) : রাইট বেজইড এ্যাপ্রোচ দরিদ্র, অবহেলিত ও অধিকারবঞ্চিত মানুষের উন্নয়নের কথা বলে। অধিকারভিত্তিক এ্যাপ্রোচ মানব উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় এমন একটি ধারণা যা সাধারণত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকার মানদণ্ডের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, সময়ের দাবি ও কালের বিবর্তনে ‘উন্নয়নে নারী’ নীতিমালা ভিন্ন ভিন্ন রূপে প্রতিভাত হয়। আর প্রতিটি এ্যাপ্রোচ বা পদ্ধতিই নারী উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%9a%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a5-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%80-%e0%a6%93-%e0%a6%89%e0%a6%a8%e0%a7%8d/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*