দুই বোনের খাইবার জন্য কলার পাতা চিরিতে চিরিতে পুঁটি অন্যমনস্কভাবে হঠাৎ বলিয়া উঠিল— দিদি বড় ভালোবাসত.……..…..।”— বুঝিয়ে দাও।

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু ত্রিশোত্তর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম রূপকার বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ‘পুঁইমাচা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : পরবর্তী পৌষ পার্বণে পিঠে খেতে বসে সহায়হরির দ্বিতীয়া কন্যা পুঁটি এই মর্মন্তুদ হৃদয়বিদারক উক্তিটি করেছে।
বিশ্লেষণ : সহায়হরি একজন দরিদ্র ব্রাহ্মণ। আর্থিক অনটনের কারণে তিনি তাঁর জ্যেষ্ঠা কন্যা ক্ষেন্তির বিয়ে দিতে পারছিলেন না। অবশেষে একান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও চল্লিশোর্ধ এক পাত্রের সাথে তিনি কন্যার বিয়ে দিলেন। বছর যেতে না যেতেই ক্ষেন্তি বসন্ত রোগে ভুগে বিনা চিকিৎসায় মারা গেল। সহায়হরির স্ত্রী অন্নপূর্ণা প্রত্যেক পৌষ পার্বণের দিন মেয়েদের জন্য পিঠে তৈরি করতেন। ক্ষেন্তি পিঠে খুব পছন্দ করত। সে একবারে আঠারো উনিশ খানা পিঠে খেয়ে ফেলত। এবার আবার পৌষ পার্বণ এসেছে। রাতের বেলা অন্নপূর্ণা পিঠে তৈরি করতে বসেছেন। তাঁর তিন মেয়ে তাঁকে ঘিরে পিঠে খাওয়ার জন্য বসে আছে। নেই কেবল ক্ষেন্তি। সে আর কোনদিন আসবে না। ক্ষেন্তি চিরদিনের জন্য এই পৃথিবী থেকে চলে গেছে। পিঠে তৈরি শেষ হলে পুঁটি খাওয়ার জন্য কলাঁর পাতা চিরতে চিরতে দিদির কথা স্মরণ করল। তার দিদি পিঠে খেতে ভালোবাসত। আজ পিঠে তৈরি হয়েছে, অথচ দিদি নেই। প্রতি বছর হয়তো পিঠে তৈরি হবে। কিন্তু পিঠে ভক্ত ভোজনপটু ক্ষেন্তি আর কোনদিন লুব্ধ দৃষ্টিতে পিঠে খাওয়ার জন্য তাদের পাশে এসে বসবে না। আজকের পিঠে খাওয়ার আয়োজনে বসে মনের অজান্তেই পুঁটি দিদির কথা স্মরণ করেছে।
মন্তব্য : ক্ষেন্তি পিঠে খেতে ভালোবাসত। কিন্তু সে আজ আর বেঁচে নেই। সে কোনদিন আর পিঠে খাওয়ার সময় এসে হাত পাতবে না।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%aa%e0%a7%81%e0%a6%81%e0%a6%87%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%9a%e0%a6%be-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ad%e0%a7%82%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%ad%e0%a7%82%e0%a6%b7/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*