গণমাধ্যম কি? গণমাধ্যম কত প্রকার ও কী কী?

অথবা, গণমাধ্যম কাকে বলে? গণমাধ্যমের শ্রেণিবিভাগ দেখাও। আ
অথবা, গণমাধ্যম বলতে কী বুঝ? গণমাধ্যমের প্রকারভেদ লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা :
গণমাধ্যম বিশ্ব ইতিহাসে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। গণমাধ্যমের শক্তি অসীম। এককথায় বলা যায়, Media moulds the mind of mankind, shapes their destiny either to even to destroy them. আর শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয় পরিবর্তনে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব। গণমাধ্যমের সঠিক ব্যবহারে যেমন চিত্তের বিনোদন, জ্ঞানের উৎকর্ষ সাধন, পারস্পরিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা সহনশীলতা, মানবিক বোধের উন্নতি ঘটে তেমনি এর অসতর্ক প্রয়োগে বা অপপ্রয়োগে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে গণমাধ্যম এমনই এক শক্তিশালী ও প্রভাবশালী সংগঠন বা মাধ্যম, যার সুষ্ঠু ও পরিচ্ছন্ন ব্যবহারে বিরাজ করে সমাজে অবিচ্ছিন্ন শান্তি, একাত্মতা ও সমতা, তেমনি সমাজে আনতে পারে অভূতপূর্ব উন্নয়ন। তাই গণমাধ্যম নারী উন্নয়নেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
গণমাধ্যম : সাধারণ অর্থে গণমাধ্যম বলতে জনগণের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমসমূহকে বুঝায়। অর্থাৎ যে উপায়ে জনগণের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয় তাই গণমাধ্যম।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গণমাধ্যম সম্পর্কে বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তাঁদের কয়েকটি সংজ্ঞা উল্লেখ করা হলো :
আধুনিক গণমাধ্যম সম্পর্কে B. Bhushan তাঁর ‘A Dictionary of Sociology’ গ্রন্থে বলেন, “গণমাধ্যম প্রত্যয়টি বলতে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত যে কোন উপায় বা উপাদানকে বুঝায়, যার মাধ্যমে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছে । যেমন— বইপুস্তক, সাময়িকী, বেতার, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ইত্যাদি।”
R. P. Molo এর মতে, “যে প্রক্রিয়ার দ্বারা কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সরকার জনসাধারণের সাথে মাধ্যম রক্ষা করে তাকে গণমাধ্যম বলে।”
D. S. Mehta এর মতে, “একই সময়ে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর নিকট সংবাদ, ধ্যানধারণা, বিনোদন প্রভৃতি পরিবেশন করাকে গণমাধ্যম বলে।”
Aggee, Adult and Emery বলেন, “বৃহৎ আকারের ও নানাধরনের শ্রোতামণ্ডলীর নিকট কোন বিষয়ে তথ্য, সংবাদ, ধারণা ও মনোভাব কতিপয় নির্দিষ্ট মাধ্যমের সাহায্যে প্রেরণ করার প্রক্রিয়াই হল গণমাধ্যম।”
Mc. Farland এর মতে, “গণমাধ্যম হচ্ছে জনগণের মধ্যে কোন কিছুর অর্থ সম্পর্কে অনুভূতি সঞ্চার করা এবং ভাব বা ধারণার প্রেরণ প্রক্রিয়া। সুতরাং বলা যায় যে, প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রেরক বা গণমাধ্যকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোন তথ্য, আবেদন, সংবাদ একই সময়ে বহুসংখ্যক জনগোষ্ঠীর নিকট পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে উপস্থাপন করে তাকে গণমাধ্যম বলে ।
গণমাধ্যমের প্রকারভেদ : গণমাধ্যম হচ্ছে জনগণের সাথে সম্পৃক্ত সমাজ ঘনিষ্ঠ একটি বিষয়। গণমাধ্যম বলতে আমরা যোগাযোগ মাধ্যম বা প্রচার মাধ্যমকেই বুঝি। অর্থাৎ যে মাধ্যমগুলোর ব্যবহার করে বা সাহায্য নিয়ে
ব্যক্তিতে, সমাজে, রাষ্ট্রে ইতিবাচক বা নেতিবাচকে পরিবর্তন আসে তাই গণমাধ্যম। তাই গণমাধ্যমকে আমরা দু’শ্রেণীতে ভাগ করতে পারি :
ক. ইলেকট্রনিক মিডিয়া : রেডিও, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, ফ্যাক্স, ইন্টারনেট, ই-মেইল প্রভৃতি।
খ. প্রিন্টিং মিডিয়া : সংবাদপত্র, সাময়িকী, বই পুস্তক প্রভৃতি। এছাড়া ঐতিহ্যবাহী গণমাধ্যম হল যাত্রা, গম্ভীরা, লড়াই ইত্যাদি। এছাড়া লিফলেট, বুকলেট, পোস্টার, বিলবোর্ড, ম্যাগাজিন সবই গণমাধ্যমের অন্তর্ভুক্ত।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রেরক বা গণমাধ্যমকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো তথ্য, আবেদন, সংবাদ একই সময়ে বহুসংখ্যক জনগোষ্ঠীর নিকট পৌছানোর উদ্দেশ্যে উপস্থাপন করে তাকে গণমাধ্যম বলে।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*