এ পরনির্ভরতা নিশ্চয়ই আমাদের শ্লাঘার বিষয় ছিল না।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সভ্যতার সংকট’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : ইংরেজদের মহত্ত্বের প্রতি ভারতীয়দের নির্ভরতাকে প্রশংসার বিষয় নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে লেখক মন্তব্যটি করেছেন।
বিশ্লেষণ : কলকাতার জোড়াসাঁকোর যে বাড়িটিতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেছিলেন সে ঠাকুরবাড়ির মানুষগুলো ছিলেন পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত। সে প্রভাবে প্রভাবান্বিত রবীন্দ্রনাথ অল্প বয়সে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য বিলেতে গিয়েছিলেন। সেখানে অবস্থানকালে তিনি পাশ্চাত্য শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং দর্শনের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। বিখ্যাত পার্লামেন্টারিয়ান জন ব্রাইটের বক্তৃতা শোনার সৌভাগ্য হয়েছিল লেখকের। তাঁর মুখ থেকে তিনি পার্লামেন্ট ও পার্লামেন্টের বাইরে বিভিন্ন সভা-সমিতিতে যে বক্তব্য শুনেছিলেন তাতে ছিল চিরন্তন ইংরেজের শাশ্বত বাণী। জন ব্রাইটের সে বক্তব্যে হৃদয়ের যে ব্যাপ্তি ছিল তা সকল জাতিগত ও কালগত সংকীর্ণতাকে অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ এ মনীষীর বক্তৃতা শুনে মুগ্ধ ও বিস্মিত হয়েছিলেন। এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল সেদিনের যুব রবীন্দ্রমানসে। মৃত্যুর কাছাকাছি দাঁড়িয়েও তিনি তা মনে রেখেছিলেন। সে দুর্মোচনীয় প্রভাব সমস্যাসঙ্কুল দিনসমূহে লেখকের পূর্বস্মৃতিকে রক্ষা করেছে। বিজাতীয় সংস্কৃতির প্রতি এই যে নির্ভরশীলতা এটা ভারতীয়দের জন্য প্রশংসার বিষয় ছিল না বলে লেখক মনে করেন। এর মধ্যে প্রশংসার বিষয় যেটুকু ছিল তা হলো, ভারতের আবহমানকালের অনভিজ্ঞতার মধ্যেও মনুষ্যত্বের যে রূপটি সেদিন ফুটে উঠেছিল তাকে স্বীকৃতি দিতে ভারতীয়রা কুণ্ঠিত হয়নি।
মন্তব্য : পরনির্ভরতা কোন গৌরবের বিষয় নয়। তাই ইংরেজ সভ্যতার উপর যে নির্ভরশীলতা ছিল তাও সমর্থনযোগ্য নয়।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%b8%e0%a6%ad%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%95%e0%a6%9f-%e0%a6%aa%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a7%80%e0%a6%a8%e0%a7%8d/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*