এমনি তাহারা পরিচয়হীন যে এতকাল পরস্পরের নাম জিজ্ঞাসা পর্যন্ত তাহারা করে নাই।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু ত্রিশোত্তর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ‘প্রাগৈতিহাসিক’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে ভিখু ও পাঁচীর পারস্পরিক পরিচয়হীনতা সম্পর্কে গল্পকার এ তাৎপর্যপূর্ণ উক্তি করেছেন।
বিশ্লেষণ : ভিক্ষাবৃত্তি পেশা গ্রহণ করার পর ভিখুর কামতৃষ্ণা জাগ্রত হলো। নারীসঙ্গহীন জীবন তার কোনদিনই ভালো লাগেনি, এখনো লাগছিল না। অগত্যা ভিখুর নজর পড়ে এক ভিখারিণীর উপর। বাজারে ঢোকার মুখেই ঐ ভিখারিণী ভিক্ষা করতে বসে। বয়স তার বেশি নয়, দেহের বাঁধুনিও বেশ আছে। তার একটা পায়ে হাঁটুর নিচ থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত থকথকে তৈলাক্ত ঘা। এ ঘায়ের জোরেই সে সকলের চেয়ে বেশি রোজগার করে। ভিখু ভিখারিণীর সাথে খাতির জমাতে যায়। পায়ের ঘাটা সারিয়ে ফেলার পরামর্শ দেয়। ভিখারিণী রাজি হয় না। ভিখু তাকে রাখার ওয়াদা করে। ভিখারিণী সাবধান হয়। অগত্যা ভিখু ঘা সমেত ভিখারিণীকে তার সাথে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। ভিখারিণী বসিরকে দেখিয়ে দেয়। বসির তার প্রণয়ী। ভিখু বসিরকে ছেড়ে দিতে বলে । ভিখারিণী রাজি হয় না। ভিখু হাল ছাড়ে না। সুযোগ পেলেই তার সাথে খাতির জমাতে যায়। তাকে একা পেয়ে একদিন ভাব জমাবার জন্য তার নাম জিজ্ঞাসা করে। আশ্চর্য মানুষ তারা। এমনি তারা পরিচয়হীন যে এতকাল পরস্পরের নাম জানারও প্রয়োজন বোধ করেনি।
মন্তব্য : প্রাগৈতিহাসিক স্তরের মানুষের কাছে নাম পরিচয় গুরুত্বহীন। দেহের ক্ষুধাটাই তাদের প্রধান।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a7%88%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a6%95-%e0%a6%97%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%aa-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%bf/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*