পলি উন্নয়নের গুরুত্ব লিখ।

অথবা, পল্লি উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর।
অথবা, পল্লি উন্নয়নের গুরুত্ব উল্লেখ কর।
অথবা, গ্রামীণ উন্নয়নের গুরুত্ব লিখ।
অথবা, পল্লি উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা লিখ।
অথবা, গ্রামীণ উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
কৃষিপ্রধান দেশে পল্লি উন্নয়নে যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। কেননা পল্লি সমাজের প্রধান অর্থনৈতিক যোগান আসে কৃষি উৎপাদন থেকে। তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো সাধারণত কৃষির উপর নির্ভরশীল। এসব দেশে পল্লি উন্নয়নের গুরত্ব অত্যধিক।
পল্লি উন্নয়নের গুরত্ব : পল্লিউন্নয়ন একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ার অন্যতম অংশ। সাধারণভাবে বলা যায়,গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে যে বিভিন্ন কর্মসূচি ও কৌশল অবলম্বন করা হয় তাই পল্লিউন্নয়ন । পল্লি উন্নয়নে সরকারি বেসরকারি সংস্থা জনসাধারণ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য। নিম্নে পল্লি উন্নয়নের গুরুত্ব উল্লেখ করা হলো :
১. পল্লি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার : দেশের গ্রামঞ্চলে প্রচুর অব্যবহৃত সম্পদ রয়েছে। সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে এসকল সম্পদ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে অব্যবহৃত অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। পল্লিউন্নয়ন পরিকল্পনার মাধ্যমে এ সকল সম্পদের পূর্ণ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব।
২. পল্লির জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন : দেশের অধিকাংশ লোক গ্রামে বাস করে। কিন্তু গ্রামের জন সাধারণের জীবনমাত্রার মান খুবই নিম্ন। এখানকার অধিকাংশ লোকই দারিদ্র্যসীমার নিম্নে জীবনযাপন করে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত । পল্লির জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে হলে পল্লিউন্নয়ন একান্ত অপরিহার্য।
৩. গ্রামীণ জনশক্তির সদ্ব্যবহার : দরিদ্র দেশের পল্লি অঞ্চলে ব্যাপক প্রচ্ছন্ন বেকারত্ব বিদ্যমান। দেশের অধিকাংশ লোক গ্রামে বাস করে। অথবা গ্রামাঞ্চলে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক ছদ্ম বেকারত্ব বিরাজমান। পল্লি উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামঞ্চলে উদ্বৃত্ত জনশক্তির সদ্ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪. গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণ : গ্রাম ও শহরের মধ্যে ব্যাপক অর্থনেতিক বৈষম্য বিদ্যমান। দেশের অধিকাংশ লোক গ্রামে বাস করা সত্ত্বেও গ্রামঞ্চলের অধিবাসীরা ন্যূনতম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। শহরে বসবাসকারী মুষ্টিমেয় লোকেরাই অধিকাংশ সুযোগ সুবিধা ভোগ করে। ফলে গ্রাম ও শহরের জনগণের মধ্যে সুসম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে পল্লিউন্নয়ন একান্ত অপরিহার্য।
৫. অধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি : দেশের বিরাজমান বেকার সমস্যার প্রেক্ষিতে পল্লি উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলে কর্মসংস্থানের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করে বেকার সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।
৬. গ্রামীণ নেতৃত্বের বিকাশ : গ্রামভিত্তিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হলে গ্রামাঞ্চলে উন্নয়নের উপযোগী প্রাতিষ্ঠানিক বুনিয়াদি গড়ে তুলতে হবে এবং স্থানীয় নেতৃত্বের বিকাশ ঘটাতে হবে। একমাত্র পল্লিউন্নয়ন পরিকল্পনার মাধ্যমে সার্বিক গ্রামীণ নেতৃত্ব সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন সম্ভব।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে পল্লি উন্নয়নের গুরুত্ব অপরিসীম। বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান এবং দেশের সুসম উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে পল্লিউন্নয়ন একান্ত অপরিহার্য।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!