Answer

নতুর রাস্তা সৃষ্টির ফলে মাউলতলা গ্রামে কী কী পরিবর্তন লক্ষ করা যায়?

উৎস : উদ্ধৃত অংশটুকু আবুল কালাম শামসুদ্দীনের ‘পথ জানা নাই’ গল্প থেকে গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের নেতিবাচক দিকটি প্রকাশ প্রসঙ্গে এ কথাগুলো বলা হয়েছে।
বিশ্লেষণ : দক্ষিণ বাংলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম মাউলতলা দীর্ঘদিন পর্যন্ত ছিল বাইরের পৃথিবীর সাথে সম্পর্কশূন্য। ফলে এর জীবনধারা ছিল অনেকটাই মধ্যযুগীয়।. আধুনিকতা ও উন্নয়নের ছোঁয়া বর্জিত বলে এখানকার জীবনে স্থবিরতা ও দারিদ্র্য জেঁকে বসেছিল। এই দারিদ্র্য স্থবিরতা থেকে মুক্ত হয়ে জীবনকে নাগরিক সভ্যতা, সংস্কৃতি ও উন্নয়নের সাথে যুক্ত করার জন্য জোনাবালির নেতৃত্বে নির্মিত হয় নতুন রাস্তা। এই রাস্তাকে গ্রামবাসীরা তাদের নতুন জীবনের তোরণদ্বার বলেও চিহ্নিত করতে থাকে। এ পথ ধরে গ্রামের মানুষেরা শহর ঘুরে আসে। কিছু মানুষ গ্রামের শাকসব্জি শহরে নিয়ে বিক্রি করে রুজি রোজগারের নতুন পথ খুঁজে পায়। ফলে কারো কারো ঘরে পুরনো খড়ের চালের বদলে নতুন টিনের চাল ঝকমক করে উঠে। তবে এই নতুন পথ শুধু সমৃদ্ধির সুবাতাসই গ্রামে বহন করে আনে না, তার পাশাপাশি নিয়ে আসে নাগরিক জীবনের নানান ব্যাধি ও জটিলতাকেও। যে জীবন ছিল নিতান্তই সাদামাটা ও সরল, তাতে এসে লাগে নাগরিক কুটবুদ্ধির ছোঁয়া। ফলে জীবন হয়ে উঠতে থাকে জটিল ও আত্মকেন্দ্রিক। শহরের পথ ধরে মানুষ যাতায়াত করতে শিখল কোর্ট-কাছারিতে। ফলে যে ছোটখাটো সমস্যাগুলো আগে গ্রামেই মেটানো যেত তা এখন হয়ে পড়ল আদালতের আশ্রয়প্রার্থী। এতে বৃদ্ধি পেতে থাকল উত্তেজনা, ব্যয় হতে লাগল অকাতর অর্থ, কমে আসতে থাকল মানুষের পারস্পরিক আন্তরিকতা ও শ্রদ্ধাবোধ। তাই যে সড়ক ধরে তারা শহরে যাতায়াত করতে লাগল, সেই সড়কের বাঁকে বাঁকে সৃষ্টি হতে থাকল নানান অলিগলি। সেই গলির অন্ধকার ছায়া ফেলল এখানকার মানুষের মনে। ফলে ক্রমে ক্রমে নির্বাসিত হতে থাকল আদিম সারল্য আর প্রীতির বন্ধন।
মন্তব্য : প্রতিটি পরিবর্তনের ইতিবাচক দিকের সাথেই থাকে তার নেতিবাচক দিক।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!