ঠ্যারাইন বোবা ক্যান গো? আরে কথা ক’ হাড় হাবাইতা মাইয়া। তোরে দিমু নাকি সাবাড় কইরা- অ্যা।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : আলোচ্য অংশটুকু বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ‘প্রাগৈতিহাসিক’ গল্পের অন্তর্গত।
প্রসঙ্গ : উক্তিটি ডাকাত সর্দার ভিখুর। ভিখু বসিরকে খুন করার পর হতভম্ব পাঁচীকে ধমক দিয়ে আলোচ্য কথাগুলো বলেছিল।
বিশ্লেষণ : ডাকাতি করতে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ভিখু তার পেশা পরিবর্তন করে। বেঁচে থাকার তাগিদে সে ভিক্ষার মাধ্যমে জীবিকানির্বাহ শুরু করে। কিন্তু নারীদেহলোভী ভিখুর নারীসঙ্গহীন জীবন অসহ্য মনে হয়। তার নজর পড়ে অল্প বয়সী ভিখারিণী পাঁচীর উপর। পাঁচী তাকে পাত্তা দেয় না। কারণ সে থাকে বসির নামের আর এক মুসলমান ভিক্ষুকের সাথে। পাঁচী এবং বসিরের সাথে আলাপ করে ভিখু বুঝতে পারে বসির জীবিত থাকতে সে পাঁচীর দখল পাবে না। এ ছাড়া বসির একদিন তাকে জীবন নাশের হুমকি দেয়। এ হুমকি পাওয়ার পর ভিখু চরমভাবে সিদ্ধান্ত নেয়। বসিরকে খুন করার জন্য সে পরিকল্পনা গ্রহণ করে। বসির যে ঘরে পাঁচীকে নিয়ে থাকে একদিন ভিখু সন্তর্পণে সে ঘরটা ভালো করে দেখে আসে। নদীর পাড় থেকে কুড়িয়ে পাওয়া একটা লোহার শিকের মাথা পাথরে ঘষে ঘষে চোখা করে একটি মারণাস্ত্র বানায়। তারপর একদিন অন্ধকার রাতে সঞ্চিত টাকাপয়সা সাথে নিয়ে বসিরের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সন্তর্পণে ঘরের ঝাঁপ খুলে ভিখু ভিতরে প্রবেশ করে। অত্যন্ত সতর্কতার সাথে এক হাত দিয়েই সে লোহার শিকটা বসিরের মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। এক আঘাতেই বসির মারা যায়। পাঁচী জেগে উঠে এ হত্যাকাণ্ড দেখে একেবারে চুপ মেরে থাকে। উল্লাসে ফেটে পড়ে ভিখু। নিজের কৃতিত্বে সে গর্ব প্রকাশ করে। পাঁচীকে চুপ করে থাকতে দেখে ক্রুদ্ধ ভিখু বিরক্তি প্রকাশ করে- পাঁচীর উদ্দেশ্যে আলোচ্য উক্তিটি করে। পাঁচীকে ঠ্যারাইন (ঠাকরুণ) সম্বোধন করে তার বোবা হয়ে থাকার কারণ জানতে চেয়ে তাকেও খুন করে ফেলার হুমকি দেয় ভিখু ।
মন্তব্য : উক্তিটির মধ্য দিয়ে পাঁচীর প্রতি ভিখুর সীমাহীন ক্রোধের প্রকাশ ঘটেছে। ভিখু পাঁচীকে খুন করে ফেলার হুমকি দিতে বাধ্য হয়েছে।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!