Answer

ইদিকে ঘুরাফিরা কি জন্য? সেলাম মিয়া হতিছে। লাঠির এক ঘায়ে শিরটি ছেঁচ্যা দিমু নে।”— ব্যাখ্যা কর।

উৎস : আলোচ্য অংশটুকু মার্কসবাদী সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ‘প্রাগৈতিহাসিক’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন
করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : উক্তিটি ভিক্ষুক বসিরের। বসির ভিখুর আলাপ জমানো সেলাম-এর প্রত্যুত্তরে আলোচ্য উক্তিটি করেছিল।
বিশ্লেষণ : ভিখু, পাঁচী ও বসির এদের তিনজনের পেশাই ভিক্ষাবৃত্তি। একটি মফস্বল শহরের বাজারে ঢোকার বসে এরা ভিক্ষা করে। ভিথুর ডান হাতটি পঙ্গু। পাঁচীর একটা পায়ে হাঁটুর নিচে থেকে পাতা পর্যন্ত তৈলাক্ত দগদগে ঘা এবং বসিরের পথে বসিরের পঙ্গু হয়ে যাওয়ায় এখন ভিক্ষা করে পেট চালায়। ভিক্ষালব্ধ পয়সায় সে বেশ আরামেই আছে। কিন্তু নারীসঙ্গহীন নিরুৎসব জীবন তার ভালো লাগে না। রাতের বেলায় বিছানায় পড়ে ভিখু ছটফট করে। তার এই অদম্য কাম লালসা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে সে পাঁচীর দিকে হাত বাড়ায়। তখন পাঁচীর বয়স অল্প। শরীরের বাঁধুনিও বেশ মজবুত। ভিখু পাঁচীকে তার সাথে থাকার প্রস্তাব দিলে পাঁচী সে প্রস্তাব
তাচ্ছিল্যভরে প্রত্যাখ্যান করে। সে সাফ জানিয়ে দেয় জায়গা খালি নেই। সে থাকে বসিরের সাথে। পাঁচীর অনাগ্রহ সত্ত্বেও ভিখু হাল ছাড়ে না। সে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে পীড়াপীড়ি করে। বিরক্ত হয়ে পাঁচী বসিরকে দেখিয়ে দিয়ে বলে “পারসতো যা না, উয়ার লগে লাগ না গিয়া। আমার কাছে কি?” অনন্যোপায় ভিখু একদিন ভাবগতিক বুঝার জন্য বসিরের সাথে আলাপ জমাতে এগিয়ে যায়। সে বসিরকে ‘সেলাম মিয়া’ বলে সম্বোধন করলে প্রত্যুত্তরে ক্ষুব্ধ বসির আলোচ্য উক্তিটি করে। ধূর্ত বসির ভিখুর উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত ছিল। সুতরাং শুরুতেই কোন রকম প্রশ্রয় না দিয়ে সে ভিখুকে এদিকে ঘোরাঘুরি করতে বারণ করে দেয়। বসির ভিখুর মাথা ফাটিয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়।
মন্তব্য : বসির ভিখুর চেয়ে কম সেয়ানা নয়। ভিখুর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আঁচ করতে পেরে সে শুরুতেই তাকে জীবন নাশের হুমকি দিয়েছে।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!