অথবা, “ভোগের ন্যায় ত্যাগও যৌবনের ধর্ম।”- ব্যাখ্যা কর।
উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু সুসাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী বিরচিত ‘যৌবনে দাও রাজটিকা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে প্রাবন্ধিক ভোগবাদীদের যৌবন-নিন্দার কারণ প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেছেন।
বিশ্লেষণ : যাঁরা স্ত্রী জাতিকে কেবল ভোগের সামগ্রী মনে করেন তাঁরাই যে স্ত্রী-নিন্দার ওস্তাদ, এর প্রমাণ জীবন ও সাহিত্যে নিত্য পাওয়া যায়। চরম ভোগবিলাসে পরম চরিতার্থতা লাভ করতে না পেরে এঁরা শেষ বয়সে স্ত্রী জাতির উপর গায়ের ঝাল ঝাড়েন। যাঁরা স্ত্রী জাতিকে মাল্যচন্দন হিসেবে ব্যবহার করেন তাঁরা স্ত্রীলোক বৃদ্ধ হয়ে গেলে মাল্যচন্দনের মতোই ধুলায় নিক্ষেপ করেন এবং তাকে পদদলিত করতেও সংকুচিত হন না। প্রথম বয়সে মধুর রস অতিমাত্রায় চর্চা করলে শেষ বয়সে জীবন তেতো হয়ে উঠে। এ শ্রেণির লোকের হাতে শৃঙ্গার শতকের পরেই বৈরাগ্য শতকের গান রচিত হয়। একই কারণে যাঁরা যৌবনকে কেবল ভোগের উপকরণ মনে করেন তাঁদের মুখে যৌবন নিন্দা লেগেই থাকে। যাঁরা যৌবন জোয়ারে গা ভাসিয়ে দেন তারা ভাটার সময় পাকে পড়ে গত জোয়ারের প্রতি কটুকাটব্য প্রয়োগ করেন। যৌবনের উপর তাদের রাগের কারণ এই যে তা সহজে ফুরিয়ে যায়। সুতরাং এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, যৌবনকে যাঁরা ভোগ লালসার ক্ষেত্র বলে মনে করেন তাঁরাই যৌবনের নিন্দায় পঞ্চমুখ।
মন্তব্য : সংস্কৃত কবিরা যৌবনকে ভোগের সামগ্রী হিসেবে দেখেছেন বলেই সংস্কৃত কাব্যে যৌবনের গুণকীর্তন করা হয়নি।
যাঁরা যৌবনকে কেবলমাত্র ভোগের উপকরণ মনে করেন, তাদের মুখে যৌবন নিন্দা লেগে থাকবারই কথা।”- ব্যাখ্যা কর।
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079
Leave a Reply