“হে পাখি। হে সুরাপাত্র আজো আমি চিনি নি তোমাকে।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : আলোচ্য অংশটুকু ইসলামের পুনর্জাগরণের কবি ফররুখ আহমদ বিরচিত ‘ডাহুক’ কবিতা থেকে নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে কবির জীবনের অপূর্ণতার দিকটি ডাহুক পাখির অনুষঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্লেষণ : রাত্রির গভীরতা ভেদ করে ডাহুক যে সুর-অফুরান সুরা ছড়িয়ে যায়; তা কবিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ডাহুক কবির অতি পরিচিত একটি পাখি। অথচ আজ নিশীথ রাতে ডাহুকের শোণিত ফেনিল ডাক কবির অচেনা মনে হয়। কবির কাছে আজ ডাহুকের ডাক মনে হয় পরমাত্মার আহ্বান। কোন এক সাধক হৃদয়ের গভীর থেকে উত্থিত হয়ে তা পথভ্রষ্ট মানুষকে মুক্তির ডাক দিয়ে যাচ্ছে। কবি কল্পনায় ডাহুক এসেছে পবিত্র আত্মার স্বরূপে। মানুষ তার জড়সত্তা অর্থাৎ দেহকে জানলেও দেহের অভ্যন্তরে যে অজড়সত্তা অর্থাৎ আত্মা আছে তার সম্পর্কে সে কিছুই জানে না। মানুষ নিজেকে জড়সত্তার দাস বানিয়ে কদর্য জীবন যাপন করে। ডাহুক এসব কিছুর ঊর্ধ্বে। কোন পঙ্কিলতা তাকে স্পর্শ করে না। ডাহুকের আত্মনির্মাণ ও আত্মনিবেদনের বৈশিষ্ট্য কবি চেতনায় দারুণভাবে নাড়া দিয়েছে। কবির অন্তর্লোকে যে ঋষিসত্তা বিদ্যমান তা জৈবিকতার বন্ধন ছিন্ন করে পরমাত্মার সন্ধানে ব্যাকুল। কবি সমস্ত জাগতিক বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে আত্মিক মুক্তির জন্য পরমস্রষ্টাকে সর্বান্তঃকরণে ডাকতে চান। কিন্তু কবি নিজের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পান না। কবির নিজেকে বড় অচেনা মনে হয়। ডাহুকের মতো কবির চিরচেনা দৈহিক সত্তা আজ কবির অচেনা।
মন্তব্য: কবি আজ চরম সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। কবি নিজের জড়সত্তায় নিজেকে চিনলেও পরমসত্তার রূপ কবির অজানা।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!