সে পিপাসা এমন প্রবল যে এত দিনেও বাংলাদেশে সে রকম লোক অতি অল্পই জন্মগ্রহণ করেছেন।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : বক্ষ্যমাণ অংশটুকু যুক্তিনিষ্ঠ প্রাবন্ধিক কাজী আবদুল ওদুদ বিরচিত ‘বাংলার জাগরণ’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত হয়েছে।
প্রসঙ্গ : অক্ষয়কুমার দত্তের জ্ঞানের প্রতি গভীর অনুরাগের বর্ণনা দিতে গিয়ে আলোচ্য উক্তিটির অবতারণা করা হয়েছে।
বিশ্লেষণ : অক্ষয়কুমার দত্ত জ্ঞানপিপাসু এক কর্মবীরের নাম। তাঁর জ্ঞান পিপাসা এমন প্রবল যে এত দিনেও বাংলাদেশে সে রকম লোক অতি অল্পই জন্মগ্রহণ করেছেন। জ্ঞানানুশীলন অক্ষয়কুমারের কাছে এত বড় জিনিস ছিল যে এ ভিন্ন অন্য রকমের প্রার্থনার প্রয়োজনীয়তা তিনি অনুভব করতেন না। তিনি রামমোহনের প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্মধর্মের একজন একনিষ্ঠ ভক্ত এবং প্রচারক ছিলেন। রামমোহনকে নিয়ে বাংলায় যত তর্ক-বিতর্ক হয়েছে তার মধ্যে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অক্ষয়কুমার দত্তের বাদানুবাদই সুবিখ্যাত। দেবেন্দ্রনাথ অধ্যাত্মবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু অক্ষয়কুমার দত্ত জ্ঞান ও কর্মের উপর অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। রামমোহনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি মত প্রকাশ করেছেন রাজার বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল দেশে জ্ঞানবিজ্ঞানের প্রচার। তাঁর এ মত ব্রাহ্মসমাজের একাংশের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিল। ব্রাহ্মধর্মের ভিত্তিভূমি নির্ণয়ে তিনি “আত্মপ্রত্যয় সিদ্ধ জ্ঞানোজ্জ্বলিত বিশুদ্ধ হৃদয়” উপনিষদের এ বাণীটি বেছে নিয়েছেন। আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানের প্রতি গভীর অনুরাগ তাঁকে মধ্যযুগীয় মানসিকতা থেকে অনেক দূরে রেখেছিল। অক্ষয়কুমারের জ্ঞানবাদের উপর ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হলে দেশের পক্ষে আরো কল্যাণকর হতো।
মন্তব্য : জ্ঞানবীর অক্ষয়কুমার দত্ত জগতের সব সমস্যার সমাধানের জন্য জ্ঞার্নাজন এবং কর্মের উপর জোর দিয়েছেন। তাঁর মতো জ্ঞানাপিপাসু লোক যুগে যুগে অল্পই জন্মগ্রহণ করে।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!