সেই রাত্রি হইতে ভিখুর আদিম, অসভ্য জীবনের দ্বিতীয় পর্যায় আরম্ভ হইল।”- উক্তিটি দ্বারা গল্পকার কী বুঝিয়েছেন?

অথবা, ভিখুর ভিক্ষাবৃত্তিজীবনের বর্ণনা দাও।
অথবা, ভিখু কেন ডাকাতি পেশা ছেড়ে ভিক্ষাবৃত্তিকে বেছে নেয়?
অথবা, ‘পৃথিবীর আদিমতম পেশা ভিক্ষাবৃত্তি’— এ পেশা ভিখুর জীবনে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তার পরিচয় দাও।
উত্তর :
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘প্রাগৈতিহাসিক’ গল্পে ভিখু প্রথমজীবনের ডাকাতি পেশা ছেড়ে, দ্বিতীয় পর্যায়ে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে পৃথিবীর আদিমতম পেশা ভিক্ষাবৃত্তিকে গ্রহণ করতে বাধ্য হয় এবং সে-সম্পর্কে গল্পকার বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন। বনের পশু যে অবস্থায় বাঁচে না, তা থেকে কষ্টকর পরিস্থিতিতেও ভিখু বেঁচে ওঠে। ভিখু পেহ্লাদের বাড়িতে এসে তার স্ত্রীর প্রতি জৈবিক তাড়নার বশবর্তী হলে পেহ্লাদ তাকে প্রহার করে বাড়ি থেকে বিতাড়ন করে। ভিখু রাতের অন্ধকারে পেহ্লাদের বাড়িতে আগুন দিয়ে চিতলপুরের নদী থেকে একটা জেলেডিঙি চুরি করে ভোর ভোর অতিকষ্টে মহকুমা শহরে পৌঁছে যায়। শহরে পৌঁছে ভিখু ক্ষুধায় চোখে-মুখে অন্ধকার দেখে। তার সঙ্গে একটি পয়সাও ছিল না যে, সে মুড়ি কিনে খাবে। বাজারের রাস্তায় সে একটি ভদ্রলোককে দেখে দুটো পয়সার জন্য হাত বাড়ায়। ভিখুর মাথায় জটবাঁধা চুল, কোমরে জড়ানো মাটির মতো ময়লা নেকড়া দেখে ভদ্রলোকটির দয়াই হয়, তাই সেই লোকটি ভিখুকে একটি পয়সা দান করেন। আর এখান থেকেই শুরু হয় ভিখুর ভিক্ষাবৃত্তিজীবন।গত সুতরাং বলা যায়, ভিখু দুর্ধর্ষ ডাকাত হলেও এখন তার ডান হাত অকেজো হয়ে যাওয়ার ফলে ডাকাতি করা সম্ভব নয়। তাই পেটের ক্ষুধা নিবৃত্ত করার জন্য তাকে বেছে নিতে হয় ভিন্ন পথ। এরপর তার জীবনে আদিম প্রবৃত্তির দ্বিতীয় পর্যায় ভিক্ষাবৃত্তি আরম্ভ হয়।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!