সাহিত্য পর্যালোচনার প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো বিশ্লেষণ কর।

অথবা, সাহিত্য পর্যালোচনার প্রাসঙ্গিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
সামাজিক গবেষণা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণা উভয়ের জন্য সাহিত্য পর্যালোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । সাহিত্য পর্যালোচনার মাধ্যমে গবেষণাকে পরিমার্জিত ও তথ্যবহুল করা হয়। মূলত বিভিন্ন তথ্যাবলি বিশেষ করে পাঠযোগ্য বই, জার্নাল প্রভৃতি তথ্যসংগ্রহ করে গবেষণার বিষয়কে আরও ফলপ্রসূ করা হয় ।

সাহিত্য পর্যালোচনার প্রাসঙ্গিক বিষয়াবলি;

গবেষণার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে সমস্যার আলোকে এর অনুকল্প (llypothesis) নির্ধারণ করা। আর সাহিত্য সমালোচনা এর জন্য সহায়ক করে থাকে। সাহিত্য সমালোচনার মাধ্যমে গবেষণার বিষয় সংক্রান্ত ধারণাটি আরও পরিষ্কার হয়, যার উপর ভিত্তি করে অনুকল্প সমাজ করা সহজ হয় ।
২. গবেষণার কোনো বিষয়কে পুনরুল্লেখ না করা : গবেষণার বিষয়ের যদি পুনরুল্লেখ করা হয় তবে গবেষণার মান কমে যায় । কারণ গবেষণা হতে হবে অসম্পূর্ণ, নতুন ও সৃষ্টিশীল । এর মধ্যে কোনো Interpretation থাকবে না । গবেষণার বিষয়বস্তু হতে হবে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র এবং সমাজ উপযোগী। আর এ ব্যাপারে সাহিত্য সমালোচনা ধারণা দিয়ে থাকে ।
৩. তাত্ত্বিক বিশ্লেষণধর্মী কাঠামো নির্ধারণ করা : গবেষণার তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ একান্ত অপরিহার্য । প্রত্যেক গবেষণায় তত্ত্বগত বিশ্লেষণ অত্যন্ত জরুরি, যার উপর গবেষণার যোগ্যতা নির্ভর করে। আর এ তত্ত্বগত বিশ্লেষণে ও যৌক্তিক কার্যে সহায়তা করে থাকে সাহিত্য সমালোচনা। এখানে সাহিত্য সমালোচনা গবেষণাধর্মী বিষয়কে সারগর্ভপূর্ণ এবং যৌক্তিক করে তুলতে সহায়তা করে থাকে ।
৪. গবেষণার বিষয় নির্ধারণ করা : সামাজিক অনেক সমস্যাবলি থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও যুগোপযোগী বিষয়বস্তু নির্ধারণ করার উপর গবেষণার সফলতা নির্ভর করে। আর তাই বিষয় নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আর সাহিত্য সমলোচনা এ বিষয়বস্তু নির্ধারণ করতে সহায়তা করে থাকে। কারণ সাহিত্য অধ্যয়ন নিতান্ত উচ্চ গবেষণাধর্মী কাজ যা মাধ্যমে বিষয় নির্ধারণ করা সহজ হয়।
৫. গবেষণার তথ্যগত পর্যাপ্ততা ও সীমাবদ্ধতা নির্ধারণ করা : একটি গবেষণা কাজে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে । এ সীমাবদ্ধতাগুলো কাটিয়ে উঠে গবেষণাকে সফল করাই গবেষকের কাজ। আর এ কাজ করা নিতান্ত কঠিন কাজ । তাই এখানে গবেষককে প্রচুর স্টাডি করা প্রয়োজন, যার মাধ্যমে এ সীমাবদ্ধতা দুর করা সহজ হয় । সাহিত্য সমালোচনা এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ অধ্যয়নের মাধ্যমে গবেষক অনেক তত্ত্বগত ও তথ্যগত বিষয়াদি জানতে সক্ষম হয় ।
৬. গবেষণার উদ্দেশ্য নির্ধারণ : গবেষণার উদ্দেশ্য নির্ধারণের উপর এর সফলতা নির্ভর করে । কোনো উদ্দেশ্যে করা হবে, কেন করা হবে ইত্যাদি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হয় ও সে অনুযায়ী তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। আর উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয় সাহিত্য সমালোচনার মাধ্যমে যেটা অনেক তাত্ত্বিক বিষয়াদি জানার মাধ্যমে করা সম্ভব ।
৭. গবেষণার কৌশল নির্ধারণ : কোন পন্থায় গবেষণা কাজ সফল করা যাবে এটার জন্য কৌশল অবলম্বন করা প্রয়োজন । কারণ কৌশল ব্যতীত তথ্যসংগ্রহ করা এবং তথ্য প্রক্রিয়াগতকরণ অসম্ভব। আর এ কৌশল অবলম্বনের জন্য সাহিত্যn সমালোচনা কাজ করে থাকে । এটা নির্ধারণ করে দেয় কোন গবেষণার জন্য কোন কৌশল অবলম্বন করা সুবিধাজনক হবে।
৮. কার্যোপযোগী সঠিক নকশায়ন : গবেষণার জন্য অপরিহার্য হলো এর একটা নকশা প্রস্তুত করা। কারণ নকশা হলো গবেষণার পূর্ব প্রস্তুতি । তাই নকশায়ন ব্যতীত গবেষণাকে সফল করা সম্ভব নয়। আর এ নকশা প্রস্তুতকরণে সাহিত্য সমালোচনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । এটা নকশা প্রস্তুতকরণে সঠিক ধারণা দিয়ে থাকে।
৯. গবেষণা নকশায় মানোন্নয়ন : শুধুমাত্র নকশা প্রস্তুতকরণের সহায়তা করে না বরং এর মানোন্নয়নে সহায়তা করে থাকে । নকশাকে কিভাবে গবেষণা উপযোগী করা যায় সে ব্যাপারে সহায়তা করে থাকে ।
১০. সঠিক প্রতিবেদন লেখন : গবেষণার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বশেষ কাজ হচ্ছে এর একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করা, যা থেকে পাঠক সহজেই ধারণা পেতে পারে। প্রতিবেদনের ধরনের উপর গবেষকের সফলতা ও দক্ষতা নির্ভর করে। আর সাহিত্য সমালোচনায় বিষয়টি গবেষকের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সৃষ্টিতে সহায়তা করে থাকে, যার আলোকে উত্তম প্রতিবেদন প্রণয়ন করতে সক্ষম হয় ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সাহিত্য পর্যালোচনা গবেষণার জন্য একটি অপরিহার্য বিষয়। এটি মূলত গবেষকের গবেষণা কাজের সুষ্ঠুতা ও যথার্থতা নিরূপণে সহায়তা করে থাকে । এটি গবেষণার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!