Answer

সভ্যতার সংকট’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিকের ইংরেজদের প্রতি মোহভঙ্গের কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) রচিত · সভ্যতার সংকট’ প্রবন্ধটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ। প্রাবন্ধিক তাঁর আশিতম জন্মবার্ষিকীতে পাঠ করার উদ্দেশ্যে এ প্রবন্ধটি রচনা করেন। এ ব্যতিক্রমধর্মী রচনাটিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্ম সমালোচনামূলক সৃষ্টি হিসেবে বিবেচনা করা যায়। পারিবারিক পরিমণ্ডল, পাশ্চাত্য সাহিত্যের প্রতি অনুরক্ততা ইংরেজ সভ্যতার মানব মৈত্রীর অপূর্ব পরিচয় লেখকের মধ্যে ইংরেজ সভ্যতার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরি করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে যখন তাদের আগ্রাসী রূপটি লেখকের সম্মুখে উন্মোচিত হয়, তখন লেখকের হৃদয় হয় ক্ষত-বিক্ষত। নিচে লেখকের ইংরেজদের প্রতি মোহভঙ্গের কারণ ব্যাখ্যা করা হলো : প্রথম ও মধ্য জীবনে ইংরেজ সভ্যতার সংস্পর্শ থেকে রবীন্দ্রনাথের মধ্যে ইংরেজপ্রীতির যে আবহ ছিল, শেষ জীবনে তাতে প্রবল ভাটার টান পড়েছিল। নিভৃতে সাহিত্যের রসসম্ভোগের উপকরণের বেষ্টনী থেকে লেখককে বেরিয়ে আসতে হয়েছিল। সেদিন ভারতবর্ষের জনসাধারণের যে নিদারুণ দারিদ্র্য লেখকের সম্মুখে উদ্ঘাটিত হয়েছিল, তা হৃদয়বিদারক। এসব দেখে লেখক সভ্য ইংরেজ জাতির আসল রূপ উপলব্ধি করতে সক্ষম হন। তিনি দেখলেন ভারতে ঔপনিবেশিক শাসন চালিয়ে ইংরেজরা যারপরনাই সম্পদশালী হয়েছে। এদেশ ইংরেজকে দীর্ঘকাল ধরে ঐশ্বর্য জুগিয়েছে। কিন্তু পরিণামে পেয়েছে শাসন-শোষণের নিষ্ঠুর অভিঘাত। যখন সভ্য জগতের মহিমাধ্যানে লেখক একান্ত মনে নিবিষ্ট ছিলেন, তখন সভ্য নামধারী মানব আদর্শের নিষ্ঠুর রূপ কল্পনা করেননি। অবশেষে দেখা গেল, “একদিন এ শাসন বিচারের ভিতর দিয়ে বহু কোটি জনসাধারণের প্রতি ইংরেজদের অপরিসীম অবজ্ঞাপূর্ণ ঔদাসীন্য।”

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!