শ্রীচৈতন্যদেব কে ছিলেন? বৈষ্ণব দর্শনে চৈতন্যদেবের অবদান আলোচনা কর।
অথবা, শ্রীচৈতন্যদেব কে ছিলেন? বৈষ্ণব দর্শনে চৈতন্যদেবের ভূমিকা আলোচনা কর।
অথবা, শ্রীচৈতন্যদেবের পরিচয় দাও। বৈষ্ণব দর্শনে চৈতন্যদেবের অবদান আলোচনা কর।
অথবা, শ্রীচৈতন্যদেবের পরিচয় দাও। বৈষ্ণব দর্শনে চৈতন্যদেবের কী কী অবদান রয়েছে?
উত্তর।৷ ভূমিকা : মধ্যযুগীয় বাংলার আধ্যাত্মবাদের উষর ভূমিতে বিকশিত একটি ধর্মীয় ও দার্শনিক মতধারা হচ্ছে বৈষ্ণববাদ। যদিও বৈষ্ণববাদের উৎসসমূল নিহিত অতি প্রাচীনকালের ‘ঋগ্বেদ সংহিতায়’ তথাপি বাংলায় এ মতাদর্শ প্রচার, প্রসার ও পূর্ণতা লাভ করে মহানপুরুষ শ্রীচৈতন্যদেবের হাতে।বাংলার বৈষ্ণববাদ বা বৈষ্ণব দর্শন বলতে আমরা মূলত ৈৈতন্যদেব প্রবর্তিত ধর্ম ও দার্শনিক মতকেই বুঝি। তাঁর প্রবর্তিত মতধারা প্রেমধর্ম বা প্রেমদর্শন নামেই সমধিক পরিচত। বলা যায় শ্রীচৈতন্যদেবই বৈষ্ণব দর্শনে নবপ্রাণের সঞ্চার করেন।
শ্রীচৈতন্য দেব : শ্রীচৈতন্যদেবের পিতৃ প্রদত্ত নাম বিশ্বন্তর। ১৪৮৬ সালে (১৪০৭ শতাব্দে)ফাল্গুন মাসে দোল পূর্ণিমার সন্ধ্যায় শুক্রবার বা শনিবার শ্রীচৈতন্যদেব বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া (নবদ্বীপ) জেলার এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জগন্নাথ মিশ্র ও মাতার নাম শচীদেব। জগন্নাথ মিশ্রের পিতা উপেন্দ্র মিশ্রের পৈতৃক নিবাস ছিল সিলেটের ঢাকা দক্ষিণ গ্রামে। বিদ্যার্জনের জন্য জগন্নাথ মিশ্র সিলেট থেকে নবদ্বীপে আসেন। বিদ্যার্জন শেষে শচীদেবীকে বিবাহ করে এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তাঁদের প্রথম সন্তান বিশ্বরূপ। বিশ্বরূপের জন্মের পর বেশ কয়েকটি সন্তানের মৃত্যুর পর তাঁদের সংসারে জন্ম হয় সর্বকনিষ্ঠ সন্তান বিশ্বস্তরের।বিশ্বন্তরের বাল্যনাম ছিল নিমাই।যৌবনে নাম হয় গৌরাঙ্গ বা গোরা এবং সন্ন্যাস গ্রহণের পর নাম হয় শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য বা সংক্ষেপে শ্রীচৈতন্য। ভক্তরা তাঁকে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু বলে ডাকতেন।জ্যেষ্ঠপুত্র বিশ্বরূপ টোলের পড়া শেষ করে সন্ন্যাসী হয়ে গৃহ ত্যাগ করায় চৈতন্যের পিতামাতা তাকে বিদ্যাশিক্ষা দিতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু বিদ্যাশিক্ষার প্রতি চৈতন্যের প্রবল আগ্রহের কারণে পিতামাতা শেষ পর্যন্ত তাঁকে টোলে পড়তে পাঠাতে বাধ্য হন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মধ্যে তিনি গঙ্গাদাস পণ্ডিতের টোলে ব্যাকরণ, কাব্য, দর্শন ও অলংকারশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি প্রথমে লক্ষ্মীদেবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, কিন্তু সর্পদংশনে লক্ষ্মীদেবীর মৃত্যু হলে পরে তিনি মায়ের অনুরোধে সনাতন রাজ পণ্ডিতের মেয়ে বিষ্ণু প্রিয়ার সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তেইশ বছর বয়সে চৈতন্য পিতৃপিণ্ড দানের জন্য গয়ায় গমন করেন এবং সেখানে প্রসিদ্ধ বৈষ্ণবভক্ত ঈশ্বরপুরীর নিকট দশাক্ষর গোপাল মন্ত্রে দীক্ষিত হন। দীক্ষা গ্রহণের পর চৈতন্যের মনে প্রবল ভক্তিভাবের উন্মেষ ঘটে। তিনি সংসার ধর্মত্যাগ করে।নিজে শ্রীকৃষ্ণের নাম সংকীর্তন করতে থাকেন এবং অপরকেও করাতে শুরু করেন। এ সময় চৈতন্যদেবের নাম সংকীর্তন আচারে অদ্বৈত আচার্য, নিত্যানন্দ, হরিদাস, শ্রীবাস পণ্ডিত, মুকুন্দ দত্ত প্রমুখ বৈষ্ণবভক্ত যোগ দিলে বৈষ্ণবদের প্রভাব বৃদ্ধি পায়। চব্বিশ বছর বয়সে মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের একরাতে সন্ন্যাস গ্রহণের অভিপ্রায়ে তিনি গৃহ ত্যাগ করে কাটোয়ায় গমন করেন এবং সেখানে কেশব ভারতী নামক একজন প্রসিদ্ধ আচার্যের কাছে সন্ন্যাসব্রতে দীক্ষা গ্রহণ করে। অতঃপর তিনি ভারতে বিভিন্ন অঞ্চল যথা পুরী, দাক্ষিণাত্য, বৃন্দাবন প্রভৃতি জায়গায় ঘুরে বেড়ান। বৃন্দাবনে তিনি রূপ, সনাতন রঘুনাথ ভট্ট, শ্রীজীব ও গোপাল ভট্টকে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত করান। তাঁরাই বৈষ্ণবধর্মে চড়গোস্বামী; নামে পরিচিত। ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পরিভ্রমণ ও ধর্মপ্রচারের পর জীবনের শেষ আঠারো বছর চৈতন্য পুরীতে অবস্থান করেন এবং জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত কৃষ্ণধ্যানে বিভোর অবস্থায় দিন যাপন করে। এ মহান মনীষী ১৫৩৩ সালের ২৯ জুন পুরীতে মৃত্যুবরণ করেন।
বৈষ্ণব দর্শনে শ্রীচেতন্যদেবের অবদান : বাংলায় বৈষ্ণবধর্ম ও দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীচৈতন্যদেব। মধ্যযুগের বাংলায় বিকশিত বৈষ্ণব দর্শন বলতে আমরা শ্রীচৈতন্য প্রবর্তিত বৈষ্ণব দর্শনকেই বুঝি। তাঁর প্রবর্তিত বৈষ্ণব দর্শন গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শন নামেই সমধিক পরিচিত। অনেক পণ্ডিতের মতে, শ্রীচৈতন্যের পূর্বেও বাংলায় বৈষ্ণববাদ প্রচলিত ছিল। পঞ্চম শতকে গুপ্ত রাজাদের আমল হতে একপ্রকার বিষ্ণু বা কৃষ্ণতত্ত্ব অস্পষ্ট ও অনির্দিষ্টভাবে প্রচলিত ছিল। এসময় বাংলায় প্রচলিত বৈষ্ণববাদ অবতারবাদের একটি সুশৃঙ্খল রূপ প্রদান করে। কেননা চৈতন্যপূর্ব বাংলাদেশে প্রচলিত আদি বৈষ্ণববাদ যুক্ত হয়েছিল অবতারবাদের প্রবক্তা নবম শতকের মহান দার্শনিক শহচরাচার্যের ভাবশিষ্য দ্বাদশ শতকের শ্রীধর স্বামীর সাথে।তবে একথা সত্য শ্রীচৈতন্যই ছিলেন বাংলায় বৈষ্ণব দর্শনের সার্থক প্রবক্তা। তাঁর অবদানেই বৈষ্ণব দর্শন নব প্রাণ লাভ করে এবং বিকাশের সর্বোচ্চ চূড়ায় উত্তীর্ণ হয়। নিম্নে বৈষ্ণব দর্শনে শ্রীচৈতন্যদেবের অবদান সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
১. প্রেমভক্তিবাদ প্রতিষ্ঠা : বৈষ্ণব ধর্ম ও দর্শনে শ্রীচৈতন্যদেবের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য অবদান হচ্ছে তিনি এই মতাদর্শকে প্রেমভক্তিবাদের সর্বাত্মক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করেন। চৈতন্য প্রবর্তিত বৈষ্ণববাদের মূল কথাই হলো প্রেম ঈশ্বর প্রেম। শ্রীকৃষ্ণ একমাত্র ঈশ্বর ও আরাধ্য, কিন্তু তিনি প্রেমময়, জ্ঞান বা কর্মে নয় তাকে লাভ করতে হলে তিনি যে ঈশ্বর সে কথা ভুলে তাকে ভালোবাসতে হবে। তাইতো চৈতন্য প্রবর্তিত বৈষ্ণব মতে, জ্ঞানে নয়, কর্মে নয়, প্রেমভক্তির মাধ্যমেই কেবল সসীম মানুষের পক্ষে পরম ঐশী প্রেম অর্জন ও উপলব্ধি করা সম্ভব।অবশ্য চৈতন্যপূর্ব যুগেও রাধাকৃষ্ণ প্রেমলীলাকে কেন্দ্র করে ভগবভক্তি ও ঈশ্বর প্রেম এদেশে প্রচলিত ছিল। এর প্রমাণ হচ্ছে জয়দেবের গীতগোবিন্দ ও চণ্ডিদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন। কিন্তু প্রেমের মহান আদর্শ চৈতন্যের পূর্বে সাত্ত্বিকভাবশূন্য হয়ে পড়েছিল। চৈতন্য মহাপ্রভু এতে প্রাণের সঞ্চার করলেন। ফলে চৈতন্য পরবর্তীকালে প্রেম ধর্ম ও প্রেমাত্মক দর্শনকে কেন্দ্র করে যে তত্ত্ব সাহিত্য রচিত হলো তা বাঙালির চিন্তাভাবনা তথা সমগ্র উপমহাদেশীয় জীবনে বয়ে আনল এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন।
২. অচিন্ত্যভেদাভেদ তত্ত্ব : শ্রীচৈতন্য গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম ও দর্শনের প্রবর্তক। শ্রীচৈতন্যের প্রবর্তিত দার্শনিক সিদ্ধান্তের নাম অচিন্ত্যভেদাভেদবাদ। জীবাত্মা ও জগৎ পরস্পর স্বতন্ত্র। কিন্তু ঈশ্বরের সঙ্গে সম্বন্ধ সাপেক্ষে ঈশ্বর নির্ভর। তিনি মাধবের ভেদ সম্পর্কিত মতবাদ সমর্থন করেন। ঈশ্বর তাঁর অচিন্ত্য শক্তি দ্বারা জীব ও জগৎকে ধারণ করেন। প্রলয়ে জীব ও জগৎ ঈশ্বরের অচিন্ত শক্তিতে লয় হয় এটাই হলো চৈতন্যের অচিন্ত্যভেদাভেদবাদ। শ্রীচৈতন্যের মতে “পরমতত্ত্বই হরি বা কৃষ্ণ । তিনি হলেন ভগবান অর্থাৎ তিনি ঐশ্বর্যবান। “ভগবানের ছয়টি ঐশ্বর্য রয়েছে। যথা : পূর্ণ সৌন্দর্য, পূর্ণ ঐশ্বর্য পূর্ণবীর্য, পূর্ণ যশ, পূর্ণ জ্ঞান এবং পূর্ণ ঐশ্বর্যের তিনি অচিন্ত্য ঐক্য। চৈতন্যের মতানুসারে ঈশ্বর তার ঐশ্বর্য ও বীর্য গুণ দুটি দ্বারা জগৎ সৃষ্টি করেন এবং তিনি জগদাত্মারূপে এতে অন্তসুতে থাকেন এভাবে একাংশে তিনি জীব ও জগৎ ধারণ করেন। জগৎ ও জীব ঈশ্বরের বিভূতি। তাই জীব প্রেম, অহিংসা এবং বিশ্বপ্রেম ঈশ্বর প্রেমের সমতুল্য। শ্রীচৈতন্য প্রবর্তিত এই অচিন্ত্যভেদাভেদ তত্ত্ব বৈষ্ণব দর্শনে এক নতুন মাত্রার সংযোজন।
৩. মায়াবাদ খণ্ডন : শ্রীচৈতন্য তাঁর গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শনে শংকরাচার্যের মায়াবাদের খণ্ডন করেন অত্যন্ত সার্থকতার পাথে। ব্ৰহ্ম সত্য কিন্তু জগৎ মিথ্যা নয়’ গৌড়ীয় বৈষ্ণববাদের এই মূল বক্তব্য দ্বারা শ্রীচৈতন্য বেদান্ত ভাষ্য, যা অদ্বৈতবাদ তথ্য মায়াবাদ নামে বিখ্যাত তাকে খণ্ডন করেন। তিনি মনে করতেন শংকর ব্রহ্মসূত্রের যথার্থ ব্যাখ্যা করেননি। ব্রহ্ম নির্বাশেষ নয়। জগৎ এবং জীবন সত্য। শংকর ব্রহ্মসূত্রের মুখ্য অর্থ ত্যাগ করে গৌণ অর্থ বা লক্ষণার্থের উপর জোর নিয়েছেন। এভাবে শ্রীচৈতন্য মায়াবাদের খণ্ডন করে জগৎ ও জীবকে সত্য এবং ঈশ্বরকে গুণসম্পন্ন পরমতত্ত্ব হিসেবে
তষ্ঠা করে বৈষ্ণববাদের ভিত্তিকে সুদৃঢ় করেন।
৪. মানবতাবাদ : শ্রীচৈতন্যদেব বৈষ্ণব দর্শনকে মানবতাবাদের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করেন। মধ্যযুগের বাংলায় একপর্যায়ে যখন নিম্নবর্ণের হিন্দুরা বর্ণভেদের যাঁতাকলে পিষ্ঠ হয়ে মরার উপক্রম হয়েছিল ঠিক সে সময়ে একজন যোগ্য কান্ডারি হিসেবে হাল ধরেন শ্রীচৈতন্যদেব। তিনি এমন দর্শন জনগণের নিকট প্রচার করতে থাকেন যেখানে মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ স্বীকার করা হয় না, তিনি মনে করতেন সকল জীবই পরমস্রষ্টা ভগবানের সৃষ্টি। তাই তাঁর সৃষ্ট জীবকে অবহেলা বা অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। এ যুক্তিতে তিনি সিদ্ধান্তে আসেন যে, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ সমান এবং সবাইকে একই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। তাছাড়া এও বিশ্বাস করতেন যে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সব মানুষ সব জীবে বর্তমান। তাই মানুষের সেবা করা মানে ভগবানেরই সেবা করা। মানবতার এই যে অমরবাণী তিনি প্রচার করলেন তা বৈষ্ণব দর্শনকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেল।
৫. উদারতাবাদ : শ্রীচৈতন্য বৈষ্ণব দর্শনে উদার দৃষ্টিভঙ্গির সংযোজন করেন। তাঁর চিন্তাচেতনায় সংকীর্ণতার কোন স্থান ছিলনা। তাঁর দর্শনের মূল লক্ষ্য ছিল সকল মানুষের মুক্তি এবং তার জন্য যে পথ মানুষের অবলম্বন করা উচিত সে দিক নির্দেশনা দান করা। চৈতন্য তাঁর মতাদর্শ সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ তখনকার সময়ে বিদ্যমান সকল ধর্মের অনুসারীদের জন্য এ দর্শন পাঠ অনুশীলন ও পর্যালোচনার সুযোগ দেয়া হয়েছিল।তাঁর দর্শনের যুক্তি ও চিন্তাচেতনা এতই অকাট্য ছিল যে, কোনো সংকীর্ণতার মধ্য দিয়ে তা প্রচার করতে হয়নি। বৈষ্ণববাদের এই উদার দৃষ্টিভঙ্গি সবাইকে তখন বিস্মিত করেছিল। কেননা মধ্যযুগের সাধারণ মানুষ ছিল সংকীর্ণ মানসিকতার এবং তাদের সামনে যেসব মতবাদ উপস্থাপন করা হতো তা ছিল তাদের মানসিকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কিন্তু চৈতন্য সেই সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে মানুষকে দিলেন অমৃতের সন্ধান। যার মাধ্যমে মানুষ পেল পরমচেতন সত্তাকে লাভ করার এক সুমসৃণ পথ। আর এই উদারতার কারণেই মধ্যযুগের বাংলায় বৈষ্ণব দর্শনের অগনিত ভক্ত অনুসারীর সমাবেশ ঘটেছিল। এভাবে চৈতন্যদেব উদার দৃষ্টিভঙ্গির সংযোজন ঘটিয়ে বৈষ্ণব ধর্ম ও দর্শনকে বলিষ্ঠ ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করেন।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, শ্রীচৈতন্যদেবের অসামান্য অবদানের কারণেই বৈষ্ণবধর্ম ও দর্শন অসামান্য অবদানের কারণেই বৈষ্ণবধর্ম ও দর্শন বিকাশের চূড়ান্ত পর্যায়ে উত্তীর্ণ হতে পেরেছিল। কেননা তাঁর প্রবর্তিত প্রেমভক্তি আশ্রিত বৈষ্ণব মতাদর্শ বৈষ্ণব ধর্ম ও দর্শনকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল এবং যার সুবাধে তিনিও হয়ে উঠেছিলেন বাঙালির প্রাণের মানুষ।