শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর অবস্থান বর্ণনা কর।

অথবা, শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর অবস্থান আলোচনা কর।
অথবা, বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর অবস্থানের বিবরণ দাও।
অথবা, বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর অবস্থান সম্পর্কে যা জান লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : মা
ও সেতুং বলেছেন, “No true revolution is possible without women’s liberation.” আর প্রকৃত মুক্তিই সম্ভব নারী শিক্ষার মাধ্যমে। পাওলো ফ্রেইর এর মতে “শিক্ষা হচ্ছে সে সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকলাপ যার মাধ্যমে লোকে নিষ্ক্রিয়তার পরিবর্তে অংশগ্রহণ এবং প্রতিবিধানের নতুন নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও অভ্যাস গড়ে তুলতে শিখে।” যে কোনো সম্প্রদায়ের পরিবারের প্রধান শিক্ষিকা জননী বা নারী। কেননা, সন্তান ধারণ করা থেকে শুরু করে যতদিন পর্যন্ত না শিশুরা হাঁটতে ও কথা বলতে শেখে মায়ের আশ্রয়েই তারা বেড়ে উঠে। আর বাংলাদেশের মোট
জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি নারীকে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক কারণে পুরুষদের উপর নির্ভর করতে হয়। এ নির্ভরশীলতাই তাদের পরাধীন করে তুলে। তাদেরকে এ পরাধীনতা থেকে মুক্ত করতে পারে একমাত্র শিক্ষা। দেশের সুষম আর্থসামাজিক বিকাশ ও উন্নয়নের জন্য পুরুষের পাশাপাশি মহিলাদেরও সমহারে অংশগ্রহণ একান্ত আবশ্যক। এ অংশগ্রহণ তখনই সম্ভব যখন তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হয়। আর এ সচেতনতা সৃষ্টির জন্যই প্রয়োজন শিক্ষার। তাই পরিবার, দেশ ও জাতির উন্নয়নে নারী শিক্ষার ভূমিকা অপরিহার্য।
নারীর শিক্ষাগত অবস্থান : বিশ্ববিখ্যাত বীর নেপোলিয়ন বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছিলেন, “Give me a good mother, I will give you a good nation.” আসলে এখানে good mother বলতে বুঝানো হয়েছে শিক্ষিত আত্মসচেতন মহিলাদেরকে। প্রকৃতপক্ষে এদেশের শতকরা ৭০% লোক অশিক্ষিত, যার মধ্যে নারী অশিক্ষিতের সংখ্যা শতকরা ৮৫%। এ বিপুল পরিমাণ অশিক্ষিত নারীকে নিয়ে আমাদের অগ্রযাত্রা। বিশ্বব্যাপী যেখানে মহিলাদের ওয়ারিশ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর অবস্থান আলোচনা করতে গেলে পুরুষ-নারী, গ্রাম-শহর, শিক্ষার বিভিন্ন শিক্ষিত করে তোলার অভিযান শুরু হয়েছে, সেখানে আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের দারিদ্র্যপীড়িত দেশগুলোর মহিলারা বন। স্তর নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা করতে হবে।
সাক্ষরতার ভিত্তিতে শিক্ষার বর্তমান পর্যালোচনা (গ্রাম ও শহর) : গ্রামীণ এলাকায় নারী-পুরুষের মধ্যে শিক্ষাহারের ব্যবধান অত্যন্ত প্রকট। যেমন— ১৯৯১ সালে পুরুষ শিক্ষার হার ছিল ৩১% এবং নারী শিক্ষার হার ছিল ১৬.৭%। নারী শিক্ষার প্রবৃদ্ধির হার যেটুকু বেড়েছে তা হচ্ছে নারী দশকের (১৯৭৬-৮৫) প্রভাব। বাংলাদেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার হচ্ছে ৬৫%। গত এক দশকে নারী সাক্ষরতার হার যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু পুরুষের তুলনায় কম। আর নারী- পুরুষের সাক্ষরতা হারের তারতম্য গ্রাম থেকে শহরে বেশি। ফলে দেখা যায়, উন্নয়নের একটা বিরাট উপাদান শিক্ষা থেকে নারী তুলনামূলকভাবে অধিকতর বঞ্চিত । নারী সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি করতে অবকাঠামোগত সংস্কার, আর্থিক সুবিধাদি ও সামাজিক সচেতনতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে অধিক বিনিয়োগ ও উদ্যোগ প্রয়োজন।
বালিকা প্রাথমিক শিক্ষা : বাংলাদেশের শিশুদের আনুষ্ঠানিক হাতেখড়ি হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কিন্তু এ শিক্ষাব্যবস্থা অনুন্নত, বিশেষ করে পল্লি এলাকায়। গ্রামীণ পরিবারগুলোর ৭০% ভূমিহীন। চরম দরিদ্র ও অভাবের দরুন গ্রামীণ দুই পরিবারের প্রাথমিক বিদ্যালয় বয়সী সন্তানদের ৬৫% স্কুলে যায়। আর ছাত্রীর সংখ্যা এ হারের চেয়ে অনেক কম। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৯৯৫ সালে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষার্থী ছিল প্রায় ১ কোটি ৬৮ লাখ। এর মাঝে বালক ৯২ লাখ এবং বালিকা ৭৭ লাখ। প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেছে ১৯৯৫ সালে ৬০.৪%। বাংলাদেশে ১৯৯৫ সালে শিক্ষকের সংখ্যা ছিল প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজারের মত এবং স্কুলের সংখ্যা প্রায় ৭৯ হাজার। দেখা যাচ্ছে, ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা অনুপাতে স্কুলের সংখ্যা অনেক কম। বাংলাদেশে ৬-১০ বছরের জনসংখ্যা শতকরা ৪০ জন। কাজেই এটা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা মোটেই সন্তোষজনক নয়। আর নারী শিক্ষার অবস্থা আরও শোচনীয়।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মেয়েদের অবস্থান : যেহেতু বাংলাদেশ গ্রামপ্রধান দেশ, সেহেতু জনসংখ্যার ৯০% গ্রামে বাস ক করে। মাধ্যমিক স্কুলের মোট ছাত্রছাত্রীর এক-পঞ্চমাংশ শহরের স্কুলে পড়ে। তবে মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও তা মোট সংখ্যার ৪০% কম। মাধ্যমিক পর্যায়ে এসে ছাত্রীদের ঝরে পড়ার হার বেড়ে যায়। এর কারণ অনেকটাই অর্থনৈতিক এবং সামাজিক। আশার কথা, সম্প্রতি মাধ্যমিক পর্যায়ে নারী অংশগ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সরকার উপবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। এভাবে নারী শিক্ষা খাতে যদি সরকার বিভিন্নভাবে উৎসাহ যোগায় তবে বাংলাদেশের নারীসমাজ অচিরেই একটি শক্তিশালী জনশক্তিতে পরিণত হবে।
উচ্চ শিক্ষায় নারীর অবস্থান : বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষার হার অতি নগণ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর সংখ্যা মাত্র ৩%, উচ্চ শিক্ষায় ছাত্রীর সংখ্যা ছাত্রের অনুপাতে আনুমানিক ৮%। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ১৯৯৪ এর পরিসংখ্যানে মেয়েদের ভর্তির শতকরা হার ২৫ ভাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শতকরা ২৫ জন ছাত্রী এবং শতকরা ১৪ জন শিক্ষিকা। উপরিউক্ত আলোচনার শেষে আমরা দেখতে পাই, ধীরে ধীরে মেয়েদের শিক্ষার হার কমে যাচ্ছে উচ্চস্তরে এসে। এখানে আর একটা কথা বলা দরকার, তা হলো মেয়েদের শিক্ষার মানও কিন্তু কমে আসছে। কারণ মেয়েরা পর্যায়ক্রমে বিজ্ঞানভিত্তিক পাঠ্যক্রম বাদ দিয়ে সহজাত শিক্ষা যেমন- গার্হস্থ্য অর্থনীতি ইত্যাদি পড়ে থাকে। তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এসেও দেখা যায় মেয়েরা Social science বেশি পড়ছে Pure science এর তুলনায়। আবার বলা যায়, এ বেছে বিশ্ববিদ্যালয় level পর্যন্ত যেসব মেয়েরা পৌঁছেছে তাদের খুব কম সংখ্যকই চাকরি বা কাজকে পেশা হিসেবে
নেবে। এজন্য নারী শিক্ষার মানও অবনত।
নারী শিক্ষার অনগ্রসরতার কারণ : সংবিধানের ২৮ (২) নং ধারা অনুযায়ী জনজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমানাধিকার নিশ্চিতকরণের অধিকার দেয়। নারীর সমঅধিকারের এ দৃষ্টিতেই নাগরিক হিসেবে নারীর নাগরিক ও মানবাধিকারের প্রাপ্তি দাবি করে। ন্যূনতম চাহিদার প্রেক্ষিতেও নারী সমতার দাবিদার। তাই শিক্ষার মৌলিক প্রশ্নে মানবাধিকার প্রয়োজন। নিম্নে নারী শিক্ষার অনগ্রসরতার কারণগুলো আলোচনা করা হলো :
১. সামাজিক কারণ : আমাদের সমাজব্যবস্থা পুরুষতান্ত্রিক। এ সমাজে মেয়েদের স্কুলে পাঠানোর ব্যাপারে তেমন কোনো চাপ নেই । জনমনে ব্যাপক বিশ্বাস যে, সুমাতা ও সুগৃহিণী হওয়ার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন নেই। আর স্কুলে যে শিক্ষা দেয়া হয় তা গৃহকর্মের মাধ্যমে অর্জিত ব্যবহারিক জ্ঞানের স্থান নিতে পারে না। কাজেই তারা যদি যায় তাহলে এটা কেবল সময়ের অপব্যয় মাত্র।
২. ধর্মীয় অপব্যাখ্যা : এ মনোভাবের সাথে যুক্ত হয়েছে ধর্মীয় মনোভাব, যা মেয়েদের স্কুল ত্যাগের একটি কারণ। কন্যাশিশু কৈশোরে পা দিতেই তাকে পর্দার অন্তরালে আড়াল করা হয়, স্কুলে যেতে দেয়া হয় না। বাইরের সমাজে তাকে মিশতে দেয়া হয় না। সেখানে নারী শিক্ষার বিকাশ ঘটবে কিভাবে?
৩. অর্থনৈতিক কারণ : অর্থনৈতিক কারণ নারী শিক্ষার একটা বড় অন্তরায়। কেননা, যেখানে অর্থ নেই সেখানে আবার মেয়েদের পড়াশুনার জন্য ব্যয় একটা বাড়তি খরচ বলে অনেকেই মনে করেন। এক হিসেবে দেখা যায় যে, গ্রামে নারীদের জন্য মাসিক ব্যয় মাত্র ২৭% এবং পুরুষদের জন্য ৭৩%। তাহলে দেখা যাচ্ছে, মহিলাদের জন্য শিক্ষাখরচ।পুরুষের অর্ধেকেরও কম।
৪. বাল্যবিবাহ : আমাদের দেশের আবহাওয়ার দরুন অতি অল্প বয়সেই মেয়েরা যৌবনপ্রাপ্ত হয়। সেহেতু মেয়েদের ছোটবেলা থেকেই শেখানো হয় যে সংসারই তার আসল কর্মক্ষেত্র। আর এজন্যই অল্প বয়সেই তাদের বিবাহ দেয়া হয়। তাই বাল্যবিবাহ নারী শিক্ষার পশ্চাৎপদতার একটি বিরাট কারণ।
৫. স্কুলের সংখ্যা : সহশিক্ষাব্যবস্থা আজকের এ যুগেও আমাদের সমাজ কমই মেনে নেয়। আর আমাদের দেশে মেয়েদের জন্য খুব বেশি সংখ্যক পৃথক স্কুল নেই যেখানে তাদের মা বাবারা তাদেরকে পাঠাতে রাজী হবেন।
৬. যোগাযোগ ব্যবস্থার অনুন্নতি : স্কুল কলেজের দূরত্ব মেয়েদের জন্য যতটা বেশি তাৎপর্যপূর্ণ সে তুলনায় এটা ছেলেদের জন্য কোনো সমস্যাই নয়। বিদ্যমান সামাজিক পরিবেশে মেয়েরা পায়ে হেঁটে দূরের স্কুল কলেজে পড়তে যাওয়ার অনুমতি পায় না।
৭. শিক্ষিকার অভাব : শিক্ষাক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিমাণে শিক্ষিকা রয়েছে। শিক্ষিকার বর্তমান সংখ্যা মাত্র ৩% এবং তাদের অধিকাংশই শহরের বিদ্যালয়গুলোতে। কিন্তু শিক্ষিকার প্রয়োজন গ্রামাঞ্চলে বেশি।কারণ সেখানে সনাতন প্রথার প্রাধান্য বেশি। আর তা থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য গ্রামে শিক্ষিকা প্রয়োজন।
৮. রাজনৈতিক কারণ : রাজনৈতিক সংকট দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিরাট বাধার সৃষ্টি করে, যা নারী শিক্ষাকে ব্যাহত করে। হরতাল, অবরোধ প্রভৃতি কারণে শিক্ষার ধারা ব্যাহত হয়। ফলে শিক্ষা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়। তাছাড়া বাবা-মারা অসুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশে ছেলেমেয়েদেরকে শিক্ষাকেন্দ্রে পাঠাতে চায় না।
সমাধান : সমস্যার অস্তিত্বকে মেনে নেয়া সমস্যা সমাধানের পূর্বশর্ত। বাংলাদেশের নারী শিক্ষার সমস্যার সমাধান তেমন কোনো দুরূহ ব্যাপার নয়। একক প্রচেষ্টায় কোনো সমস্যার সমাধান যেমন সম্ভব নয়, তেমনি সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব। অবশ্য সেজন্য আমাদেরকে অপেক্ষাও করতে হবে। এবার কি কি উপায়ে সমস্যাগুলোর সমাধান সম্ভব সেদিকে দৃষ্টি দেয়া যাক।
১.দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন : প্রথমেই নারী শিক্ষা সম্পর্কে সনাতন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন। প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বলা হয়েছে নারীর উচ্চশিক্ষা কতকগুলো সামাজিক উপযোগ সৃষ্টি করে। যেমন-
ক.সন্তানের শিক্ষাগত ও সামাজিক প্রস্তুতির মান।
খ.ছেলেমেয়েদের অপেক্ষাকৃত বেশি বয়সে বিয়ে দেয়ার উপলব্ধি।
গ. মহিলা সমাজের মর্যাদা উন্নয়ন।
ঘ.ঘরের বাইরে উৎপাদনমুখী কর্মে অংশগ্রহণে নারীর যোগ্যতা।
২. সামাজিক নিরাপত্তা : সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের জন্য অধ্যয়নরত ছাত্রীরা যেন স্কুল ত্যাগ না করে সেজন্য সামাজিক নিরাপত্তাসহ অর্থনৈতিক সম্পদের সুষম বণ্টন প্রয়োজন।
৩. সামাজিক ও রাজনৈতিক তৎপরতা : নারী শিক্ষা সমস্যার জন্য সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মতৎপরতার একান্ত প্রয়োজন। এ দু’য়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে উন্নয়নের লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
৪. শিক্ষিকার সংখ্যা বৃদ্ধি : শিক্ষার নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তর পর্যন্ত শিক্ষিকার শতকরা হার বাড়াতে হবে। তাহলে অধিক সংখ্যক বাবা-মারা তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুল কলেজে পাঠাতে রাজী হবেন।
৫. সরকারি তৎপরতা : বর্তমান সরকার এ লক্ষ্যে বিবিধ বৃত্তি, উপবৃত্তি, বেতন মওকুফ, বই, খাতা, পেন্সিল প্রদান, খাদ্যের বিনিময়ে শিক্ষা প্রভৃতি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তাছাড়া ব্র্যাক এবং অন্যান্য NGO গুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, যা আমাদের নারী শিক্ষার হার বাড়াতে সাহায্য করছে।
৬. মহিলা সংগঠনগুলোর ভূমিকা : এ জটিল সমস্যা সমাধানে দেশের মহিলা সংগঠনগুলোর ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এগুলো শহরকেন্দ্রিক। সম্প্রতি এর বিভিন্ন শাখা গ্রামাঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে সংস্থার শাখা খোলার প্রস্তাবাধীন আছে।
৭. শিক্ষার মানসিকতা তৈরি : সর্বোপরি নারী শিক্ষার বিকাশের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ যেটা তা হলো নারী শিক্ষার গুরুত্ব তাদেরকে উপলব্ধি করতে হবে। সমগ্র নারীসমাজে শিক্ষার মানসিকতা প্রবেশ করাতে হবে। তবেই নারী শিক্ষার উন্নয়ন সম্ভব।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা সারা বিশ্বের বাস্তবতার আলোকে বলতে পারি যে, কোনো দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে নারী-পুরুষ উভয়কেই শিক্ষিত করে তুলতে হবে। অন্যথায় উন্নয়ন সম্ভব নয়। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ভাষায়, “নারী ও নর উভয়ে একই বস্তুর অঙ্গবিশেষ। যেমন— একজনের দু’টি হাত কিংবা কোনো শকটের দু’টি চক্র। সুতরাং
উভয়ে সমতুল্য । অথবা উভয়ে মিলে একই বস্তু হয়। তাই একটিকে ছাড়িয়ে অপরটি সম্পূর্ণ উন্নতি লাভ করতে পারবে না। এক চক্ষুবিশিষ্ট ব্যক্তিকে লোকে কানা বলে।” সর্বোপরি সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ হিসেবে মহিলাদের আত্মিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যে তাদের উন্নয়ন আবশ্যক। আর তা কেবলমাত্র উপযুক্ত নারী শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমেই সম্ভব।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%b0-%e0%a6%85/
পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*