যৌন হয়রানি কী? যৌন হয়রানি সম্পর্কে আলোচনা কর।
অথবা, যৌন হয়রানি বলতে কী বুঝায়? যৌন হয়রানির বিস্তারিত ব্যাখ্যা দাও।
অথবা,যৌন হয়রানি কাকে বলে? যৌন হয়রানি সম্পর্কে যা জান লিখ।
অথবা, যৌন হয়রানির সংজ্ঞা দাও। যৌন হয়রানি সম্পর্কে বিস্তারিত লিখ ।
অথবা, যৌন হযরানি কী? যৌন হয়রানি সম্পর্কে বর্ণনা দাও।
অথবা, যৌন হয়রানি কাকে বলে? যৌন হয়রানি সম্পর্কে বিবরণ দাও।
উত্তর৷ ভূমিকা : নারী নির্যাতনের আলোচনায় যৌন হয়রানি হল একটি বিশেষ দিক। কেননা, আধুনিক কালে নারীরা অধিক সংখ্যায় কর্ম গ্রহণ করায় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসায় যৌন হয়রানি কর্মস্থল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাম্প্রতিককালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গায় যৌন হয়রানি বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ছাত্রছাত্রীরা যৌন হয়রানি বিরোধী আন্দোলন করতে বাধ্য হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমস্যা সুরাহার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এ বিষয়টি এখনও সমাধান হয়নি। এরকম হাজার ঘটনা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘটছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যৌন হয়রানির বিষয়টি বেড়ে চলছে মাত্রাতিরিক্ত। ফলে নারীদের চলাচলে সর্বদা আতঙ্ক ভীতি কাজ করে। এ অবস্থা হতে আমাদের মুক্তি পেতে হবে, তা না হলে সভ্যতার বিকাশ ঘটবে না।
যৌন হয়রানি : যৌন হয়রানির সুস্পষ্ট ও সহজবোধ্য কোন সংজ্ঞা দেয়া কঠিন। যৌন হয়রানির স্বাভাবিক ধারণা হল নারীদের তার কর্মস্থলে, পথে, যানবাহনে বিভিন্ন স্পটে কথা, ইঙ্গিত ও ফন্দির মাধ্যমে শারীরিকভাবে সমাজবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়াকে বুঝায়। তবে যৌন হয়রানির ধারণা এত ব্যাপক যে, সংজ্ঞার মাধ্যমে সবকিছু ধরে রাখা সম্ভব নয়।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বা গবেষক যৌন নির্যাতন সম্পর্কে বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তাঁদের কয়েকটি সংজ্ঞা উল্লেখ করা হল :
গবেষক Safrau এর মতে, “Sex that is sided, unwelcome or comes with strings attached.” যৌন এমন এক আচরণ যা একতরফা অনভিপ্রেত কিংবা শর্তযুক্ত। গবেষক Farley এর সংজ্ঞায় বলেছেন, “Unsolicited, non-reciprocal male behaviour that asserts a women’s sex role over her functioning axe a worker.” অর্থাৎ, অযাচিত, অপরপক্ষের সাড়াবিহীন পুরুষ আচরণ, যা কর্মজীবী নারীর কর্মকাণ্ডের উপর নারীর যৌন ভূমিকাকে প্রাধান্য দেয়। ভাল মার্কিন আইনসভা কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ House of Representatives প্রদত্ত সংজ্ঞানুসারে, “De-liberate or repeated unsolicited verbal comments, gestures or physical contract of a sexual nature which are unwelcome.” অর্থাৎ, স্বেচ্ছাকৃত কিংবা বারংবার অযাচিত মৌখিক মন্তব্য, অঙ্গভঙ্গি বা যৌন ধরনের দৈহিক সংস্পর্শ যা অনভিপ্রেত। উপরিউক্ত সংজ্ঞাগুলোর আলোকে বলা যায় যে, যৌন হয়রানি যৌন ধরনের দৈহিক বা মৌখিক আচরণ, যা নারীর সেক্সকে তার পেশাগত বৃত্তিমূলক বা অন্যান্য মর্যাদা বা অবস্থানের উপর প্রাধান্য দেয়। যৌন হয়রানি নারীর জন্য সম্পূর্ণ অবাঞ্ছিত। প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে যৌন হয়রানি নারীর চাকরি, কর্মসম্পাদনের সামর্থ্য বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের হুমকি। আবার যৌন হয়রানি কর্মস্থল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে সংঘটিত হয়ে থাকে।
যৌন হয়রানির ধরন : বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অধিবাসী বিভিন্ন সংস্কৃতির সাথে জড়িত। ফলে বিভিন্ন দেশে সংস্কৃতির ভিন্নতা বিরাজ করায় যৌন হয়রানির ধরনও ভিন্ন রকম হয়। এ প্রসঙ্গে Mackinnon দু’প্রকার যৌন হয়রানির কথা বলেছেন । যথা :
ক. প্রকাশ্য বিনিময় প্রস্তাব জড়িত ও
খ. কাজের নিরবচ্ছিন্ন শর্ত।
নিম্নে এগুলোর আলোচনা করা হলো :
ক. প্রকাশ্য বিনিময় প্রস্তাব জড়িত : নারীকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যৌন হয়রানিতে ইতিবাচক সাড়া দিয়ে যৌন প্রস্তাব মেনে নিতে হয়। নতুবা সে চাকরি হারাবে কিংবা শিক্ষার আশানুরূপ ফল হতে বঞ্চিত হয়। এক্ষেত্রে সাধারণত হয়রানিকারী একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি হয়ে থাকে। তিনি হয় চাকরি দাতা, চাকরিতে উপরওয়ালা কিংবা শিক্ষক। কারণ
পদের জোরে তারা শাস্তি দিতে কিংবা পুরস্কৃত করার ক্ষমতা রাখে। এ ধরনের হয়রানিতে কয়েকটি স্তর লক্ষ্য করা যায়। যথা : যৌন প্রস্তাব, সাড়া ও পরিণতি। তবে এর বিকল্প এমন হতে পারে,
১. প্রভাবশালী বা শিক্ষক প্রস্তাব দিলে এবং নারী প্রত্যাখ্যান করলে পরিণতিতে নারী শাস্তি পায়। তবে এতে নারী চাকরি হারাতে পারে আবার পরীক্ষায় খারাপ রেজাল্টও করতে পারে।
২. শিক্ষক প্রস্তাব দিলে এবং নারী মেনে নিলে প্রতিশ্রুত সুবিধা পেতে পারে। প্রভাবশালী বা শিক্ষক প্রস্তাব দিলে এবং নারী মেনে নিলে প্রতিশ্রুত সুবিধা পেতে সহজ হয়।
৪. প্রভাবশালী বা শিক্ষক প্রস্তাব দিলে এবং নারী প্রত্যাখ্যান করলে তার করার কিছু থাকে না। এ প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারী অবমাননা ও অমর্যাদার শিকার।
খ. কাজের নিরবিচ্ছন্ন শর্ত : যৌন হয়রানিতে কাজের শর্ত তেমন ক্ষতিকর নয়। কারণ এ ধরনের হয়রানির সাথে প্রত্যক্ষ কোন চাহিদা থাকে না। হয়রানকারী তার শিকারের কাছ থেকে কোন সাড়া প্রত্যাশা করে না। উদ্দেশ্য নারীকে উত্ত্যক্ত করে নানা রকমের মজা, আনন্দ লাভ করা। যদিও এ ধরনের হয়রানির ক্ষেত্রে নারীর কিছু করার থাকে না। কিন্তু
তার কাজের পরিবেশ মারাত্মক অস্বস্তিকর হয়ে পড়ে। ফলে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। তবে সম্প্রতি আমাদের সমাজে আলতোভাবে গায়ে হাত দেয়া ও টিটকারী মারা বেড়ে গেছে। তাছাড়া পরিবহণে ঠেসে দাঁড়ানো, চিমটি কাটা, পথিমধ্যে মন্তব্য ছুঁড়ে দেয়া ইত্যাদি আচরণের মধ্যে হয়রানি সীমাবদ্ধ থাকে। এখানে বেশিকিছু প্রত্যাশা করা হয় না বলে এসব ব্যাপারে অভিযোগ উত্থাপন করা হয় না।
যৌন হয়রানির কুফল : যৌন হয়রানির কুফল সমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলে। আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাধার সৃষ্টি করে। যৌন হয়রানির কুফল নিম্নে আলোচনা করা হল :
১. কর্মস্থলে অনুপস্থিত : নারীর যৌন হয়রানি কর্মস্থলে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে কোন স্থানে মেয়েদের জন্য কুফল বয়ে আনে। কর্মস্থলে যৌন হয়রানির শিকার চাকরিজীবী মহিলা দোটানায় ভোগেন। অভিযোগ করলে চাকরি হারানোর ভয় থাকে অন্যদিকে, ক্ষোভ চেপে রাখতে গেলে মানসিক অশান্তির সৃষ্টি হয়। ফলে দেখা যায় যে, মহিলা কর্মজীবীদের মধ্যে
চাকরি বদলের প্রবণতা পুরুষের চেয়ে বেশি। তাদের চাকরির স্থলে অনুপস্থিত থাকার ঘটনাও তুলনামূলকভাবে অধিক। এর জন্য নারী কর্মীকে দোষ দেয়া যায় না। কারণ এজন্য নারীকেই বেশি মাসুল দিতে হয়।
২. শিক্ষাক্ষেত্রে : ছাত্রীদের জন্য যৌন হয়রানি শিক্ষাজীবনে গুরুতর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। শিক্ষকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী পরীক্ষায় আশানুরূপ ও উপযুক্ত ফলাফল লাভ হতে বঞ্চিত হয়। যে ছাত্রী মেধাসম্পন্ন ও শিক্ষায় মনোযোগী তার জন্য শিক্ষকের সহায়তা ও অনুপ্রেরণা আবশ্যক। চরিত্রহীন শিক্ষক শিক্ষাবিস্তারের।মানগত দিকে অন্যতম অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় এবং এসব শিক্ষক নম্বরের ক্ষেত্রে ভালো ছাত্রীদের দুর্বল ছাত্রের নিচের গ্রেডে ফেলে দেন। ফলে ছাত্রীটি শিক্ষার প্রতি অনুরাগ হারিয়ে ফেলে।
৩. পারিবারিক সংহতির প্রতি হুমকি : নারী নির্যাতনের একটি রূপ হল যৌন হয়রানি। স্বামী কর্তৃক স্ত্রী নির্যাতন ও মানসিক নিপীড়নের ফলে পারিবারিক অশান্তি দেখা যায় সত্য, কিন্তু স্বামীর নির্যাতন যৌন হয়রানির অন্তর্ভুক্ত নয়। অপরদিকে পুরুষ কর্তৃক যখন নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়, তখন পারিবারিক কলহ ও সংহতির সংকট বিরাজ করে।
৪. আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি : যৌন হয়রানির প্রকৃত ঘটনা সমাজে প্রকাশিত হলে সমাজ কর্তৃক মানসিক শাস্তি পায় নারীই বেশি। এ সামাজিক ধিক্কারকে অনেকনারী সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আত্মহত্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যৌন হয়রানির শিকার। আমাদের সমাজে অহরহ চোখের অন্তরালে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে, যার ফলে নারীর আত্মহত্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৫. নারীর নিরাপত্তাহীনতা : নারী বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তারা একটি পুরুষের মত অবাধে চলাফেরা করতে পারছে না। যৌন হয়রানি রাস্তাঘাটে, স্কুল-কলেজ, বিনোদনশালায়, হাসপাতালে প্রভৃতি স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে তারা কোন স্থানেই নিরাপত্তা বোধ করছে না। নারীরা যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, তাহলে তাদের দ্বারা সুস্থ বুদ্ধির আশা করা যায় না। তাই সামাজিক নিরাপত্তা নারীকে দিয়ে যৌন হয়রানির হাত হতে রেহাই দিতে হবে।
আছে ৬. পতিতাবৃত্তিতে যোগদান : যেসব নারী যৌন হয়রানির শিকার হয় তারা সামাজিকভাবে নিগৃহিত, নিপীড়িত ও ঘৃণিত হয়ে থাকে। ফলে আত্মসম্মান, প্রভাবশালীদের অবিচার এবং লোকলজ্জার ভয়ে রাতের অন্ধকারে জন্মভূমি ছেড়ে শহরে বা বিদেশে পাড়ি জমায়। অনেকে দালাল ও নারী পাচারকারীর হাতে পড়ে বিদেশে পাচার হয়ে যায়। তাই হাজার হাজার নারী পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত হতে বাধ্য হয়।
৭. বিবাহবিচ্ছেদের হার বৃদ্ধি : নারী নির্যাতনের একটি বিশেষ রূপ হচ্ছে যৌন হয়রানি। যৌন হয়রানির প্রভাবে একদিকে যেমন অবিবাহিত মেয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি বিবাহবিচ্ছেদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যৌন হয়রানির শিকার মেয়েকে অবিবাহিত ছেলেরা বা পুরুষেরা বিবাহ করতে চান না, কারণ উক্ত মেয়েকে চরিত্রহীন, নষ্ট বলে সমাজ দোষারোপ করে থাকে। ফলে যৌন হয়রানির কবলে পড়া মেয়ের বিবাহ দেয়া কষ্টকর।
মূল্যায়ন : পিতৃতান্ত্রিক সমাজ নারীকে স্ত্রী, মা ও যৌন ক্রীড়নক হিসেবে দেখতে শেখায়। পুরুষ নারীর সমাজ বিনির্মিত সেক্স ভূমিকা কর্মস্থল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টেনে নিয়ে যায়। নারীর সাথে গৃহে যেমন কর্মস্থল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও তেমন আচরণ করতে প্রবৃত্ত হয়। পুরুষের মধ্যে মনোভাব কাজ করে যে, নারী গৃহে যে ভূমিকা পালন করে কর্মস্থলে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুরূপ ভূমিকা পালন করবে। তথাকথিত রিসিপসনিস্ট পদে মহিলা নিয়োগের পিছনে নারীর সেক্স ভূমিকা ঘটিত মনোভাব কাজ করে। অপরপক্ষে, পুরুষের মনে সমাজ ধারণা দিয়েছে যে, নারীর সঠিক স্থান গৃহ, কর্মস্থলে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার প্রবেশ জেন্ডার কর্ম বিভাজনে নির্দিষ্ট পুরুষের হস্তক্ষেপ।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, নারীর ক্ষমতায়ন ও অধস্তন অবস্থার বিলুপ্তি ব্যতিরেকে যৌন হয়রানি নির্মূল করার অন্য পন্থা নেই। যৌন হয়রানির মূলে রয়েছে জেন্ডার বৈষম্য ও অসমতার কাঠামো। কাঠামো অবিকৃত রেখে কতিপয় আইনগত বিধি বা শাস্তির ব্যবস্থা করে এবং সমাজের শুভবুদ্ধির প্রতি আহ্বান জানিয়ে নারী নির্যাতন তথা যৌন হয়রানি দূর করা সম্ভব নয়। তবে এ কথা বলা হয় যে, শিক্ষাজীবনের কৃতিত্ব কর্মজীবনের পথে, শিক্ষা জীবনে ভালো করতে না পারার জন্য মেধাবী ছাত্রী কর্মজীবনে পিছিয়ে পড়ে। তারা যোগ্যতা ও মেধা অনুপাতে চাকরি পায় না। ফলে সে বিভ্রান্তি, অনিশ্চয়তা, আস্থাহীনতা ও সন্দেহ প্রবণতায় ভোগে। জীবনে সে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারে না। আসলে নারী ও পুরুষ উভয়ের স্বীকৃতি থাকলে সেটা যৌন হয়রানির ভিতর পড়ে না, তবে যে কোন একজনের সম্মতি থাকলে অন্যজনকে সম্মতি করাতে ব্যর্থ হলে হয়রানির মাধ্যমে তা হাসিলের চেষ্টা করা হয়ে থাকে। এ কার্য হাসিল হলে সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।