যে হাওয়া নদীর বুক বেয়ে ভেসে আসে সে হাওয়া কি কখনও অত গরম হতে পারে?”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বিরচিত ‘নয়নচারা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : শহরের আবহাওয়ায় অতিষ্ঠ আমু গ্রামের হাওয়ার কথা মনে করে উল্লিখিত উক্তিটি করেছে।
বিশ্লেষণ : দুর্ভিক্ষপীড়িত একদল মানুষ পেটের তাগিদে বাঁচার আশায় গ্রাম ছেড়ে শহরে এসে আস্তানা গেড়েছে। বিধাতার অবাঞ্ছিত এ সন্তানেরা খোলা আকাশের নিচে রাস্তার ফুটপাতে আশ্রয় নিয়েছে। এরা আগে কখনও শহরে আসে নি। তাই শহর সম্পর্কে এদের কোন ধারণা ছিল না। এসব হতভাগ্য মানুষদের একজন আমু। সারাদিন পেটের ধান্ধায় শহরের অলিতে-গলিতে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে আমু রাতের বেলা খোলা আকাশের নিচে ফুটপাতে শুয়ে গ্রামের কথা ভাবে। ঘনায়মান কালোরাতে জনশূন্য প্রশস্ত রাস্তাটাকে তার ময়ূরাক্ষী নদী বলে কল্পনা করতে ভালো লাগে। তবে ঘুমের স্রোত সরে গেলে কল্পনার জাল ছিন্ন হয়ে যায়। তখন আমু আর ময়ূরাক্ষী নদীকে খুঁজে পায় না। মনের চরে তখন প্রশস্ত ফুটপাত জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে। শহরের আবহাওয়া শুষ্ক, আর্দ্রতাহীন। ভ্যাপসা গরমে দম বন্ধ হয়ে আসে আমুর। অথচ গ্রামের হাওয়া শীতল, প্রাণজুড়ানো। ঐ হাওয়া ময়ূরাক্ষী নদীর বুক বেয়ে ভেসে এসে তাদের গায়ে পরশ বুলিয়ে দিত। গ্রামের হাওয়া কখনও শহরের হাওয়ার মতো গরম হতে পারে না।
মন্তব্য : ময়ূরাক্ষী নদী তীরের মানুষ আমুর কাছে গ্রামের হাওয়া সুশীতল প্রাণজুড়ানো। শহরের হাওয়ায় রয়েছে ভ্যাপসা গরম। এ হাওয়ায় শ্বাস নিতে আমুদের কষ্ট হয়।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!