Answer

যে যৌবনকে আমরা সমাজে স্থান দেইনি, তা এখন নানা বিকৃতরূপে নানা ব্যক্তির দেহ অবলম্বন করে রয়েছে।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সমালোচক প্রমথ চৌধুরী বিরচিত ‘যৌবনে দাও রাজটিকা’ প্রবন্ধ থেকে
প্রসঙ্গ : যৌবনকে সমাজজীবনে স্বীকৃতি না দেবার ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করতে গিয়ে প্রবন্ধকার আলোচ্য মন্তব্য করেছেন।
বিশ্লেষণ : আমাদের দেশে যৌবনকে একটা মস্ত ফাঁড়া বলে মনে করে তাকে পাশ কাটিয়ে চলার চেষ্টা করা হয়। তার কপালে রাজটিকা পরানোর পরিবর্তে তার পৃষ্ঠে রাজদণ্ড প্রয়োগ করতে তত্ত্বজ্ঞানীরা বেশি উৎসাহী। দুর্বিনীত ও অশোভন আখ্যা দিয়ে তাকে এঁরা শাসনের যাঁতাকলে বেঁধে রাখতে আগ্রহী। কিন্তু যৌবন হলো জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। যে জীবনে যৌবন নেই, তার কোন শক্তি ও সৌন্দর্য নেই। সুতরাং জীবনের দৃপ্ত সত্যেরই আর এক নাম যৌবন। অথচ এ সত্যটিকেই আমরা মূর্খের মতো অস্বীকার করতে চাই। কিন্তু যা সত্য ও ধ্রুব তাকে অস্বীকার করলেই তার অস্তিত্ব লোপ পায় না। অনেকেই এ পৃথিবীকে মায়া এবং আত্মাকে ছায়া বলে উড়িয়ে দিতে চান। কিন্তু তাদের কথা অনুযায়ী পৃথিবী অস্পৃশ্য এবং আত্মা অদৃশ্য হয়ে যায় না। কারণ যা বাস্তব তাকে চোখ রাঙিয়ে বা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয় সম্ভব নয়। বরং কিছু সত্যের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে তা উল্টোভাবে আমাদেরই ঘাড়ে চেপে বসে। এটা বৈজ্ঞানিক সত্য যে, যা জোর করে বা অনাবশ্যকভাবে গোপন করা হয়, তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয়ে উঠে ভয়ঙ্কর। সামাজিকভাবে যৌবনকে অস্বীকার করার ফলও আমাদের দেশে হয়ে উঠেছে ক্ষতিকারক। সহজভাবে বিকশিত হতে না পেরে আমাদের সমাজে যৌবন অবরুদ্ধ আক্রোশে গুমরে মরছে। আপন অস্তিত্বের তাগিদে সে সন্ধান করছে বিকল্প পথের। সমাজে আসন না পেয়ে যৌবন আজ বিভিন্নভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির দেহকে আশ্রয় করে বিকৃতরূপ ধারণ করছে, যা সমাজের জন্য খুবই ক্ষতিকর ও অকল্যাণকর।
মন্তব্য : সত্যকে অগ্রাহ্য করলে তার ফল হয় বিপজ্জনক। যৌবণকে অস্বীকার করার উপায় নেই।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!