মুজিবনগর সরকার সম্পর্কে লিখ।

অথবা, ১৯৭১ সালের অস্থায়ী সরকার সম্পর্কে লিখ।
অথবা, মুজিবনগর সরকার সম্পর্কে বা জান সংক্ষেপে তুলে ধর।
অথবা, মুজিবনগর সরকার ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা সম্পর্ক সম্পর্কে আলোচনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথে একটি সাংবিধানিক অস্থায়ী সরকার গঠনের প্রস্তাব উঠে। এই অস্থায়ী সরকার মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত হয়। এই সরকারের গঠনের পরে, বাংলাদেশ স্বাধীনতার দিকে একটি নতুন চেতনা জাগিয়েছিল, এবং এটি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শগুলির সাথে মিল খেতে সহায়তা করেছিল। মুজিবনগর সরকার দ্বারা গঠিত প্রথম সরকারটি একটি ঐতিহাসিক অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রস্তাবনা প্রকাশ করে। এটি স্বাধীনতার গণতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি নতুন দেশের উদ্ভাবনে মূলত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিলে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের দ্বারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার একটি সাংবিধানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। এ ঘোষণাপত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীসমূহের সর্বাধিনায়ক করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য একটি অস্থায়ী সরকার গঠনের কথা বলা হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলামকে এ সরকারের উপ-রাষ্ট্রপতি করা হয়। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তাঁর উপর রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব ন্যস্ত হয়।

১৭ এপ্রিলে, বর্তমান মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথ তলায়, আওয়ামী লীগের নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিবৃন্দ, দেশি, বিদেশি বহুসংখ্যক সাংবাদিক, বিপুলসংখ্যক স্থানীয় জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধার উপস্থিতিতে ঐ অস্থায়ী সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বাঙালির জাতীয় ইতিহাসে এ ছিল একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল থেকে মেহেরপুরের তলার নতুন নামকরণ করা হয় ‘মুজিবনগর’. মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এ স্থান ছিল বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের রাজধানী। আর এ অস্থায়ী সরকারের অধীনেই পরিচালিত হয় ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনেও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ছিল একটি অনিবার্য, অপরিহার্য উপাদান। তাই ঐ সময় পশ্চিম পাকিস্তানে বন্দী থাকা সত্ত্বেও তাঁর নামেই মুক্তিযোদ্ধারা রণাঙ্গনে শপথ নিতেন। বঙ্গবন্ধুর নামেই মুক্তিযুদ্ধ চলে। অনুপস্থিতি সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকেই প্রধান করে অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়েছিল।


মুজিবনগর সরকার ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা : ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল: মুজিবনগর সরকার গঠন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ

১০ এপ্রিলের ঘোষণা:

  • ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার একটি ঐতিহাসিক সাংবিধানিক ঘোষণাপত্র প্রদান করেন।
  • এই ঘোষণাপত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য একটি অস্থায়ী সরকার গঠনের কথা বলা হয়।
  • সৈয়দ নজরুল ইসলামকে এই সরকারের উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয় এবং বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়।

১৭ এপ্রিল: মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ:

  • ১৭ এপ্রিল, বর্তমান মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলায় (বর্তমানে মুজিবনগর) একটি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত প্রতিনিধি, দেশি-বিদেশী সাংবাদিক, বিপুল সংখ্যক স্থানীয় জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতিতে অস্থায়ী সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
  • বাঙালির জাতীয় ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল।

মুজিবনগর: মুক্তিযুদ্ধের রাজধানী:

  • ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল থেকে মেহেরপুরের তলার নতুন নামকরণ করা হয় “মুজিবনগর”।
  • মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এই স্থানটি বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের রাজধানী হিসেবে কাজ করে।
  • এই অস্থায়ী সরকারের অধীনেই ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব:

  • মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা ছিল অনিবার্য ও অপরিহার্য।
  • পশ্চিম পাকিস্তানে বন্দী থাকা সত্ত্বেও, মুক্তিযোদ্ধারা তাঁর নামেই রণাঙ্গনে শপথ গ্রহণ করতেন এবং মুক্তিযুদ্ধ তাঁর নামেই পরিচালিত হয়েছিল।
  • অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও, বঙ্গবন্ধুকেই অস্থায়ী সরকারের প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছিল, যা তাঁর প্রতি জনগণের অগাধ বিশ্বাস ও সমর্থনের প্রমাণ।


উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয় বাংলাদেশকে ক্রান্তিকালীন অভিভাবকত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়ার বিধানকল্পে। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে ১১ সেক্টরে ভাগ করা হয়। মুজিবনগর সরকারের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ১৭ এপ্রিল, ১৯৭১ সালে।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*