Answer

মুখ যদি মনের দর্পণস্বরূপ হয় তবে ক্ষেন্তির মুখ দেখিয়া সন্দেহের কোন কারণ থাকিতে পারিত না যে, সে অত্যন্ত মানসিক তৃপ্তি অনুভব করিতেছে।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু ত্রিশোত্তর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘পুঁইমাচা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : দরিদ্র ব্রাহ্মণ সহায়হরি চাটুয্যের বড় মেয়ে ক্ষেন্তির ভোজনপটুতা প্রসঙ্গে গল্পকার আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন।
বিশ্লেষণ : সহায়হরি চাটুয্যে একজন দরিদ্র ব্রাহ্মণ। তাঁর বড় মেয়ে ক্ষেন্তি খেতে খুব ভালোবাসে। সহায়হরির স্ত্রী অন্নপূর্ণা পৌষ সংক্রান্তির দিন মেয়েদের নিয়ে ময়দা ও নারকেল কোরার সাহায্যে পিঠা বানাচ্ছিলেন। তিনি প্রথমে বড় মেয়ে ক্ষেন্তিকে তার অপরিচ্ছন্নতার কারণে পিঠা তৈরির কাজে সহযোগিতা করা থেকে বিরত রেখেছিলেন। অনেক অনুরোধের পর ক্ষেন্তি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে নারকেল কোরার অনুমতি পেল। অন্নপূর্ণা ময়দার গোলা খোলায় চাপাতে গেলে ছোট মেয়ে লক্ষ্মী তার ডান হাতটা বাড়িয়ে দিল। ন্নপূর্ণা একটুখানি গোলা তার হাতে দিলে পুঁটিও হাত বাড়াল। অন্নপূর্ণা তাকেও নিরাশ করলেন না। ক্ষেন্তি তখন নারকেল কুরছিল এবং লুব্ধ দৃষ্টিতে ছোট বোনদের খাওয়া দেখছিল। অন্নপূর্ণা তা লক্ষ্য করে ক্ষেন্তির জন্যও একটু তুলে রাখলেন। নারকেল কোরা শেষ হলে ক্ষেন্তি তা থেকে একটু খাওয়ার বায়না ধরলে অন্নপূর্ণা অনুমতি দিলেন। ক্ষেন্তি অনুমতি পেয়েই নারকেলের মালায় এক থাবা নারকেল তুলে নিয়ে একটু দূরে গিয়ে পরমতৃপ্তি সহকারে খেতে লাগল। ভোজনপটু এই মেয়েটির খাওয়া দেখে যে কেউ বুঝতে পারত যে সে অত্যন্ত মানসিক তৃপ্তি অনুভব করছে। মুখ যদি মনের দর্পণস্বরূপ হয় তাহলে ক্ষেন্তির মুখ দেখে সন্দেহের কোন কারণ থাকতে পারত না যে সেই মুহূর্তে সে খুবই খুশি। কারণ মানুষের মুখ দেখেই তার মনের ভাব বুঝা যায়। তাই মুখকে বলা হয় মনের দর্পণ। এই দর্পণে মনের ছবি ফুটে উঠে।
মন্তব্য : মুখ মানুষের মনের আয়না। মুখের অভিব্যক্তিতে মনের ছায়া ধরা পড়ে। মুখ মলিন থাকলে মনে সুখ থাকে না। আর মুখ হাস্যোজ্জ্বল থাকলে মনে আনন্দ বিরাজ করে।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!