Answer

মুক্তিযুদ্ধে নারীর অংশগ্রহণের ধরন কেমন ছিল?

অথবা, মুক্তিযুদ্ধে নারীরা কিভাবে সহযোগিতা করেছিল?
অথবা, মুক্তিযুদ্ধে নারীর অংশগ্রহণের প্রকৃতি উল্লেখ কর।
অথবা, মুক্তিযুযুদ্ধে নারীর অংশগ্রহণের ধরন বর্ণনা কর।
অথবা, মুক্তিযুদ্ধে নারীর অংশগ্রহণের চিত্র বর্ণনা কর।
অথবা, মুক্তিযুদ্ধে নারীর তংশগ্রহনের ক্ষেত্রগুলো বর্ণনা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। স্বাধীনতা অর্জনের পিছনে পুরুষের পাশাপাশি আমাদের নারী সমাজের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বাংলার সর্বস্তরের মানুষের
অংশ গ্রহণের মাধ্যমে। কেবল পুরুষ নয় মহিলারাও ব্যাপকভাবে অংশ নিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। এজন্য তাদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল ।
মুক্তিযুদ্ধে নারীর অংশগ্রহণ : মুক্তিযুদ্ধে নারীর অংশগ্রহণের ধরন কেমন ছিল তা নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. যুদ্ধে পরামর্শ দান : স্বাধীনতা যুদ্ধে নারীরা পুরুষদের পরামর্শদান, উৎসাহ প্রদান করার কাজে নিয়োজিত ছিল। যুদ্ধে পরামর্শ ও প্রণোদনা দানের কাজটিতে দেশব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানসিকতাসম্পন্ন প্রায় প্রতি ঘরেই নারীরা যুক্ত হন। নারীর এ মৌন সম্মতি মুক্তিযুদ্ধকে আরো বেগবান করে তোলে।
২. পত্রিকা প্রকাশ : ঢাকা শহরের সাংবাদিক সেলিনা পারভিন ‘শিলালিপি’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। এর সর্বশেষ সংখ্যার প্রচ্ছদে ছিল স্বাধীন বাংলার পতাকা। তিনি নিজে কবিতা ও কলাম লিখতেন মুক্তিযুদ্ধাদের প্রেরণা যোগাতে। সাংবাদিকতায় তার ন্যায় আরো অনেক নারী স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসী ভূমিকা রাখে ।
৩. স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় নারীদের অবদান ছিল অসামান্য। এটি প্রতিষ্ঠা পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতারের নিয়মিত কর্মী বেগম মুশতারী শফীর অবদান ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪. নার্সিংয়ের প্রশিক্ষণ গ্রহণ : একাত্তরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জেলায় ও ভারতের সীমান্ত এলাকায় নারীরা নার্সিং প্রশিক্ষণ নেয়। সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়া সব নারীরা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলে। এভাবে নারীরা বিভিন্ন সহযোগিতামূলক কাজে হাত বাড়িয়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে আরো বেগবান করে।
উপসংহার : আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। নারী, পুরুষ, কৃষক, ধনী, দরিদ্র সবার অংশগ্রহণ ছিল গর্ব করার মতো। রক্তের প্রবাহ আরো দীর্ঘ হতো যদি ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে প্রতিষেধক না লাগিয়ে দিতেন এ মহিয়সী নারীরা।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!