Answer

মনুষ্যত্বের অন্তহীন প্রতিকারহীন পরাভবকে চরম বলে বিশ্বাস করাকে আমি অপরাধ মনে করি।” – ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিরচিত ‘সভ্যতার সংকট’ প্রবন্ধ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : মানুষ ও মনুষ্যত্বের পরাজয় কখনো চরম বলে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না- এ বিশ্বাসকে ব্যক্ত করা হয়েছে উল্লিখিত ব্যাখ্যাংশে।
বিশ্লেষণ : একদিন বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে ইংরেজরা ভারতবর্ষে এসে স্বীয় বুদ্ধি ও কৌশলের দ্বারা এদেশের শাসন ক্ষমতা দখল করেছিল। তখন ইংরেজ সভ্যতার মহত্ত্ব ও ঔদার্যের কারণে ভারতীয়রা শাসনকে আশীর্বাদ বলে মেনে নিয়েছিল। ইংরেজি ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির উৎকর্ষতায় মুগ্ধ হয়েছিল ভারতবাসী। কিন্তু অচিরেই তাদের সাম্রাজ্যবাদী শাসনের অন্তরালবর্তী নগ্নতার প্রকাশ ঘটল নিপীড়ন ও নির্যাতনের মধ্য দিয়ে। ইংরেজরা পদে পদে মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে লাগল। তারা ভারতীয়দের উন্নতির পথ অবরুদ্ধ করে দিয়ে জগদ্দল পাথরের মত এদেশের বুকে চেপে বসল। মোহভঙ্গ হলো ভারতের জনসাধারণের। একদিন ইংরেজদের মহত্ত্বের পরিচয় পেয়ে যে মানুষেরা তাদেরকে হৃদয়ের উচ্চাসনে বসিয়েছিল সে তারাই বিশ্বাসভঙ্গের কারণে বিদ্রোহী হয়ে উঠল। যে রবীন্দ্রনাথ আশৈশব ইংরেজ অনুরাগী ছিলেন তিনিও তাঁর বিশ্বাস হারিয়ে পরিত্রাণের পথের সন্ধান করলেন। তিনি অপরাজিত ভারতবাসীর জয়যাত্রার সাফল্য কামনা করে নিজের ভুল স্বীকার করলেন। তিনি মনুষ্যত্বের অন্তহীন প্রতিকারহীন পরাজয়কে চরম বলে মেনে নিতে পারলেন না। তিনি বললেন, মানুষের পরাজয় অন্তহীন নয়- মনুষ্যত্বের পরাভব প্রতিকারহীন নয়। পরাজয়কে অন্তহীন ও প্রতিকারহীন বলে মনে করা অপরাধ। সুতরাং আত্মমর্যাদা ফিরে পাওয়ার জন্য সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হবে।
মন্তব্য : মানুষ ও মনুষ্যত্বের পরাভব কখনো অন্তহীন ও প্রতিকারহীন হতে পারে নামনুষ্যত্বের জয় অনিবার্য।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!