ব্যাধের আদিম সাজে কে বলে তোমাকে চিনবো না নিষাদ কি কোনদিন পক্ষিণীর গোত্র ভুল করে?”- ব্যাখ্যা কর।
উৎস : আলোচ্য অংশটুকু আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম কবি আল মাহমুদ বিরচিত ‘সোনালী কাবিন : ৫’ শীর্ষক কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে নর-নারীর প্রেমসত্তার স্বরূপ প্রকাশিত করেছেন।
বিশ্লেষণ : মানবমানবীর জৈবিক প্রেমকামনা কেউ অস্বীকার করতে পারে না। একমাত্র সম্ভোগের মাধ্যমে নর-নারীর পূর্ণমিলন ঘটে। যারা বনে পশুপাখি শিকার করে তাদের পশুপাখি চিনতে ভুল হয় না। কবিপ্রিয়ার ভয় হচ্ছে যদি ব্যাধের আদিম সাজে তাকে চিনতে না পারে। যারা ব্যাধ তারা যেমন পশু পাখি চিনতে ভুল করে না তেমনি কবিও তাঁর প্রেমিকাকে চিনতে ভুল করবেন না। কবিও এ শরীরী আবেদনকে অস্বীকার করেননি। কবিদের ভিতর যাদু আছে, আশৈশব নিসর্গ হতে তাঁরা এ পাঠ নেন- ‘প্রেমকে ভেদ করে সর্বভেদী সবুজের মূল’। প্রকৃতির সমস্ত রহস্য যেমন করে খনা খুলে দিয়েছেন- তেমনি ভাবে সর্বরূপের ভেতর দিয়ে প্রেমিক তার প্রিয়াকে চিনতে পারবে। এটিই প্রেমের চিরন্তন সত্য। ব্যাধের বিষাক্ত অস্ত্র পশু-পাখির নরম বুক বিদ্ধ করতে ভুল করে না। একইভাবে কবিপ্রিয়া যেভাবে সজ্জিত হোন তাকে চিনতে ভুল হবে না।
মন্তব্য : কবি মানব-মানবীর প্রেমের চিরন্তন সত্য উপলব্ধি করতে পেরেছেন। এমন কি যৌন উন্মাদনার মধ্যে তিনি খুঁজে পেয়েছেন পার্থিব সৌন্দর্য।