Answer

বাড়ির সেই লোভী মেয়েটির স্মৃতি পাতায় পাতায়, শিরায় শিরায় জড়াইয়া তাহার কত সাধের নিজের হাতে পোঁতা পুঁই গাছটি মাচা জুড়িয়া বাড়িয়া উঠিয়াছে- বর্ষার জল ও কার্তিকের শিশির লইয়া কচি কচি সবুজ ডগাগুলি মাচাতে সব ধরে নাই, মাচা হইতে বাহির হইয়া দুলিতেছে -সুপুষ্ট নধর প্রবর্ধমান জীবনের লাবণ্যে ভরপুর।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু ত্রিশোত্তর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম রূপকার বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ‘পুঁইমাচা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : পুঁইভক্ত ক্ষেন্তির রোপণ করা পুঁই গাছটির বর্তমান অবস্থা বর্ণনা প্রসঙ্গে গল্পকার এখানে এই দীর্ঘ উক্তির অবতারণা করেছেন।
বিশ্লেষণ : দরিদ্র ব্রাহ্মণ সহায়হরি চাটুয্যের বড় মেয়ে ক্ষেন্তি পুঁইশাক খেতে ভালোবাসত। খাওয়ার সময় তরকারি হিসেবে পুঁইশাক পেলে তার আর কিছুর প্রয়োজন হতো না। পুঁইশাকের প্রতি অসম্ভব আসক্তির কারণে ক্ষেন্তি বাড়ির উঠানের পাঁচিলের কাছে একটি ছোট্ট মাচা বেঁধে একটি শীর্ণদেহী পুঁইচারা রোপণ করেছিল। গাছটি বেড়ে উঠার আগেই ক্ষেন্তির বিয়ে হয়ে গেল। বছর যেতে না যেতেই বসন্ত রোগে ভুগে মেয়েটি মারা গেল। ইতোমধ্যে তার রোপণ করা পুঁই গাছটি খুব বেড়ে উঠেছে। ক্ষুদ্র মাচাটি ঘিরে ধরার পর জায়গা না পেয়ে ডগাগুলো বাতাসে দুলছে। পৌষ পার্বণে পিঠে খেতে বসে পুঁটি যখন দিদির কথা স্মরণ করল তখন তাদের সকলের চোখ গিয়ে পড়ল পুঁইমাচার দিকে। ক্ষেন্তি পুঁইশাক খাবে বলে ওই মাচাটি রচনা করেছিল। আজ তা প্রবর্ধমান জীবনের লাবণ্যে ভরপুর। তার রচয়িতা সেই লোভী মেয়েটি নেই। সে আর কোনদিন আসবে না।
মন্তব্য : পুঁইভক্ত মেয়েটির স্মৃতিকে পাতায় পাতায়, শিরায়-শিরায় জড়িয়ে পুঁইমাচাটি সুসজ্জিত হয়েছে। অথচ সেই মেয়েটি আজ নেই ।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!