“বলেছে সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন? পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।” কে, কাকে এবং কেন এমন বলেছে?

উত্তর : উদ্ধৃত অংশটুকু প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশ বিরচিত ‘বনলতা সেন’ শীর্ষক কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে। কবি তাঁর মানস প্রতিমা বনলতা সেনের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় যে প্রশ্নটি শুনেছেন তার বর্ণনা দিতে গিয়ে এ পক্তি দুটি রচনা করেছেন। কবির নীড়হারা মন হাজার বছর ধরে ভারতবর্ষের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে ফিরেছে। সিংহল সমুদ্র থেকে সুদূরের মালয় সাগর পরিক্রমণ করেও কবি তাঁর কাঙ্ক্ষিত নারীসত্তার সন্ধান পাননি। অবশেষে উত্তরবঙ্গের নাটোরে এসে তিনি তার সাক্ষাৎ পেয়েছেন। বনলতা সেনকে আবিষ্কার করে কবি বিস্ময় বিমুগ্ধ চিত্তে তার রূপমাধুরী পান করেছেন। আবছা অন্ধকারের মধ্যে তিনি তাকে দেখতে পেয়ে পুলকিত হয়েছেন। তাঁর চির আকাঙ্ক্ষিত নারী-সত্তা তাঁকে প্রশ্ন করেছে- ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’ কবি এ প্রশ্নে চমকে উঠে তার দিকে তাকিয়ে থেকে তাকে বুঝাতে চেষ্টা করেছেন। তিনি বনলতা সেনের চোখে দেখেছেন পাখির নীড়ের অপলকতা। পাখির বাসা সবসময় থাকে খোলা। তা বন্ধ করার কোন কপাট নেই। তেমনি বনলতা সেনের চোখও খোলা। তাতে পলক নেই, তাতে বন্ধ করার কপাট বা পাতাও যেন নেই। এ অপলক চোখের দৃষ্টি কবিকে মুগ্ধ করেছে। উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে একথা বলা যায় যে, আলোচ্য প্রশ্নটি শোনার জন্য পৃথিবীর সমস্ত প্রেমিক-মন যুগ যুগ ধরে অপেক্ষা করে আসছে।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!