পৃথিবীর আলো আজ পর্যন্ত তাহার নাগাল পায় নাই, কোনদিন পাইবেও না।”— বিশ্লেষণ কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু ত্রিশোত্তর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম রূপকার মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বিরচিত ‘প্রাগৈতিহাসিক’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে ভিখু ও পাঁচীর সম্ভাব্য উত্তরসূরিরা কোন অন্ধকার বুকে ধারণ করে পৃথিবীতে আগমন করবে সে সম্পর্কে গল্পকার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
বিশ্লেষণ : ভিখু ছিল এক দুর্ধর্ষ ডাকাত সর্দার। ডাকাতি করতে গিয়ে কাঁধে বর্শার খোঁচা খেয়ে তার ডান হাতটা পঙ্গু হয়ে যাওয়ার কারণে ভিখু ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে বাধ্য হয়। ভিক্ষালব্ধ পয়সায় পেট ভরে খেয়ে ও নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে অল্পদিনের মধ্যেই সে তার পূর্বের স্বাস্থ্য ফিরে পায়। আর পূর্বের স্বাস্থ্য ফিরে পাওয়ার সাথে সাথে তার আদিম কামস্পৃহা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। কিন্তু পাঁচী থাকে বসিরের সাথে। সে ভিখুর সাথে থাকতে রাজি না হওয়ায় ভিখু ক্ষুব্ধ হলো। অগত্যা ভিখু বসিরকে খুন করার সিদ্ধান্ত নিল । এক অমাবস্যার রাতে ভিখু একটা লোহার শিক নিয়ে বসিরের ঘরে প্রবেশ করল। কৌশলে এক হাত দিয়েই সে লোহার শিকটা বসিরের মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে তাকে হত্যা করল। পাঁচী ভিখুর হিংস্রতা দেখে ভয়ে চুপসে গিয়েছিল । ভিখুর ধমক খেয়ে পাঁচী পোটলা-পুটলী নিয়ে ভিখুর সাথে রাস্তায় বেরিয়ে এল। আকাশে তখন নবমীর চাঁদ উঠেছে। ঐ চাঁদ আর পৃথিবীর ইতিহাস আছে। কিন্তু অন্ধকার জগতের মানুষ ভিখু ও পাঁচী নতুন জীবন শুরু করে যে সন্তানের জন্ম দেবে তা হবে প্রাগৈতিহাসিক। পৃথিবীর আলো আজ পর্যন্ত তার নাগাল পায়নি, ভবিষ্যতেও পাবে না।
মন্তব্য : অন্ধকার জগতের মানুষ ভিখু ও পাঁচী ভবিষ্যতে যে সন্তান জন্ম দেবে তাদের রক্তে থাকবে ঐ প্রাগৈতিহাসিক যুগের অন্ধকার ও আদিমতা।

পরবর্তী পরীক্ষার রকেট স্পেশাল সাজেশন পেতে হোয়াটস্যাপ করুন: 01979786079

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!