পিতৃতান্ত্রিক সমাজের বৈশিষ্ট্য কী?
অথবা, পিতৃতান্ত্রিক সমাজের বিশেষত্ব কী?
অথবা, পিতৃতান্ত্রিক সমাজের নিয়ামকসমূহ উল্লেখ কর।
অথবা, পিতৃতান্ত্রিক সমাজের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
অথবা, পিতৃতান্ত্রিক সমাজের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য লিখ।
অথবা, পিতৃতান্ত্রিক সমাজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর।
ভূমিকা : সৃষ্টির শুরু থেকেই মানব সমাজ দুভাগে বিভক্ত হয়ে গড়ে; যথা : পুরুষ সমাজ ও নারী সমাজ। ফলে উভয় ধরনের সমাজব্যবস্থার কিছু স্বতন্ত্র বিশেষত্ব পরিলক্ষিত হয়। আমাদের সমাজের এসব পুরুষতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য সবসময় নারীদের অধস্তন করে রেখেছে। তাই আমাদের সমাজব্যবস্থায় যখন কোন শিশু জন্মগ্রহণ করে তখন সে তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে বড় হয়।
পিতৃতান্ত্রিক সমাজের বৈশিষ্ট্য : নিম্নে পিতৃতান্ত্রিক সমাজের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো :
১. পুরুষপ্রধান সমাজ : পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার মূল বৈশিষ্ট্য হলো পুরুষপ্রধান সমাজ। এ সমাজব্যবস্থায় পুরুষরাই শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকে। তাদের দ্বারাই সবকিছু পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। এ ধরনের সমাজব্যবস্থায় নারীদের ভূমিকার কোন গুরুত্ব দেয়া হয় না।
২. বংশ পরিচয় বাবার নামে : পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় ছেলে মেয়েরা বড় হয় বাবার বংশ পরিচয়ে। এখানে মায়ের বংশ পরিচয়ের কোন গুরুত্ব নেই। সমাজে পিতার সন্তান হিসেবেই তারা পরিচিতি লাভ করে। মায়ের কোন পরিচিতির দরকার হয় না।
৩. পরিচয়ে পরিচিতি লাভ করে : পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারীরা বিয়ের পর স্বামীর পরিচয়ে পরিচিতি লাভ করে। নিজেদের স্বতন্ত্র কোন পরিচয় নেই। জন্মের পর বাবার পরিচয়ে বিয়ের পর স্বামীর পরিচয়ে পরিচিত হওয়া পিতৃতান্ত্রিক সমাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
৪. নারী শিক্ষার প্রতি অনীহা : পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারীদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হয়। এ সমাজে মনে করা হয় মেয়েরা যতই শিক্ষিত হোক না কেন তারা সারা জীবন স্বামীর সেবা, সন্তান লালন পালন, সংসার দেখাশুনা ছাড়া অন্য কোন দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি, উপর্যুক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো যখন কোন সমাজব্যবস্থায় আমরা দেখবো তখন তাকে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ বলে অভিহিত করব। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে সুশাসন ব্যবস্থায় অধিক মাত্রায় নারীদের অংশগ্রহণ কাম্য।