পরিকল্পনার প্রকারভেদসমূহ উলেখ কর ।
অথবা, পরিকল্পনা কত প্রকার ও কী কী?
অথবা, পরিকল্পনার শ্রেণিবিভাগ দেখাও।
অথবা, পরিকল্পনার শ্রেণিবিভাগসমূহ লিখ।
অথবা, পরিকল্পনার প্রকারভেদসমূহ তুলে ধর।
অথবা, পরিকল্পনার প্রকারভেদগুলো কী কী লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : কোনো সুনির্দিষ্ট ও সুবিন্যস্ত প্রক্রিয়া বা প্রণালি অনুসারে কাজ সম্পাদন করাই হচ্ছে পরিকল্পনা। পরিকল্পনা হচ্ছে ভবিষ্যৎ কর্মধারার ভিত্তি উদ্ভাবনের এক বিশেষ প্রক্রিয়া।
পরিকল্পনার প্রকারভেদসমূহ : অতীত ও বর্তমান অভিজ্ঞতার আলোকে ভবিষ্যৎ কার্যসম্পাদনের সুচিন্তিত ও কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে পরিকল্পনা। আধুনিক উন্নয়ন আলোচনায় বিভিন্ন প্রকার উন্নয়ন পরিকল্পনার লক্ষ্য করা যায়। যথা :
১. বার্ষিক ও প্রেক্ষিত পরিকল্পনা : বার্ষিক পরিকল্পনার সবচেয়ে পরিচিত উদাহরণ হচ্ছে বার্ষিক বাজেট। এছাড়াও বিভিন্নভাবে বার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। প্রেক্ষিত পরিকল্পনা হচ্ছে সামগ্রিক পরিকল্পনা যা দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করে প্রণয়ন করা হয়। এ ধরনের পরিকল্পনার মেয়াদকাল ১৫, ২০, ২৫ এমনকি ৩০ বছরও হতে পারে।
২. কেন্দ্রীয় এবং আঞ্চলিক পরিকল্পনা : কেন্দ্রীয় পরিকল্পনায় রাষ্ট্র কর্তৃক কেন্দ্রীয়ভাবে গৃহীত পরিকল্পনা রাষ্ট্রীয়ভাবে বাস্তবায়ন করা হয়। সামাজিক, রাজনৈতিক বাস্তবতার নিরিখে প্রতিটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যপূর্ণ অঞ্চলগুলোর বিশেষ ধরনের প্রয়োজনের প্রকৃতির উপর গুরুত্ব দিয়ে অঞ্চলভিত্তিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। যা আঞ্চলিক বা স্থানীয় পরিকল্পনা হিসেবে পরিচিত।
৩. অর্থনৈতিক এবং বস্তুগত পরিকল্পনা : অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বলতে বুঝানো হয় এমন এক ধরনের পরিকল্পনা কৌশল যেখানে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্পদ বরাদ্দ দেয়া হয় টাকা বা অর্থের বিবেচনায়। বস্তুগত পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রকৃত সম্পদের অর্থাৎ কাঁচামাল, মানব সম্পদ ইত্যাদি সরবরাহের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেয়া হয় ।
৪. নির্দেশিত পরিকল্পনা এবং নিয়ন্ত্রিত পরিকল্পনা : নির্দেশিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় ব্যক্তি খাতের
উপর সীমিত নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে সরকারি খাতে পথ প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে আর ব্যক্তি খাতকে কাজের সুযোগ করে দেয়া হয়। নিয়ন্ত্রিত পরিকল্পনায় সমস্ত সম্পদকে নিয়োজিত করা হয় রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে।
৫. অংশগ্রহণমূলক ও অ-অংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনা : অংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনা বলতে বুঝায় পরিকল্পনা প্রণয়নের
বিভিন্ন স্তরে উপকারভোগী (Stakcholder) এর সক্রিয় অংশগ্রহণ। অ-অংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনাতে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ ব্যতীত শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞগণ জনগণের চাহিদা নিরূপণ এবং তার সমাধানে লক্ষ্যে প্রকল্প প্রণয়ন করে থাকে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, পরিকল্পনার কতকগুলো বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়
যেগুলো পরিকল্পনা গঠন, বাস্তবায়ন, কার্যক্রম প্রভৃতি দিককে নির্দেশ করে থাকে। এর ভিত্তিতে পরিকল্পনাকে বিভিন্ন
শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়।