নিসর্গের গ্রন্থ থেকে, আশৈশব শিখেছি এ পড়া প্রেমকেও ভেদ করে সর্বভেদী সবুজের মূল।”- ব্যাখ্যা কর।
উৎস : ব্যাখ্যেয় চরণ দুটি ঐতিহ্যপ্রিয় আধুনিক কবি আল মাহমুদ বিরচিত ‘সোনালী কাবিন’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘সোনালী কাবিন : ৫’ শীর্ষক কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : কবি এখানে প্রকৃতিভাবনা ও প্রকৃতিচেতনার স্বরূপ প্রশ্ন করেছেন।
বিশ্লেষণ : কবির ভাবনায় নর-নারীর প্রেমের স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে। কোন কোন কবি তাঁর অশরীরী মানস প্রিয়ার রোমান্সে মশগুল থাকেন। আবার অনেক কবি তাঁর মানস প্রিয়ার শরীরী উন্মাদনায় মশগুল হয়েছেন। কবি আল মাহমুদ তাঁর প্রিয়াকে শরীরী আকর্ষণে অবগাহন করেছেন। বাংলার চিরন্তন নিসর্গ ও ঐতিহ্যকে অবলম্বন করে তিনি কামনাসিক্ত প্রেমকে লালন করেছেন। কবির এ কামাসক্ত প্রেমভাবনার মূলে রয়েছে ঐতিহ্যভাবনা। চর্যাপদের রচয়িতাদের প্রেম চেতনায় শবর-শবরীর যৌন-উন্মাদনা প্রকাশ পেয়েছে। বাংলার নিসর্গ সৌন্দর্য চেতনায় শবর-শবরী আত্মলীন হয়ে উঠে। বৃক্ষ যেমন ভূমিগর্ভ হতে রস গ্রহণ করে যৌবন প্রাপ্ত হয় তেমনি মানব জীবনেও জৈবিক প্রেমের আকর্ষণে নর-নারী আত্মলীন হয়ে যায়। নর-নারীর কামচেতনাকে অস্বীকার করে নয়, শরীরী আকর্ষণকে অবগাহন করে কবি-চেতনা প্রবহমান। তবে কবির এ প্রেমভাবনা শুধু লীলা নয়। এটা নিসর্গ চেতনার মধ্যে জৈবিক কামনা উপভোগের প্রয়াসী। দেহ দিয়ে দেহকে জয় করার প্রেরণা কবি নিসর্গ সৌন্দর্যের মধ্যে খুঁজে পেয়েছেন।
মন্তব্য: কবি প্রেমভাবনা খুঁজে পেয়েছেন নিসর্গ চেতনার মধ্যে।