নারী নির্যাতনে বাল্যবিবাহ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, বাল্যবিবাহের মাধ্যমে নারীকে কিভাবে নির্যাতন করা হয়।
উত্তরায় ভূমিকা : আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় নারীদের যেভাবে অত্যাচার নির্যাতন করা হয় তাতে প্রমাণিত হয় নারীদের কোন মূল্য নেই। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় বিভিন্নভাবে নারীদের নির্যাতন করা হয়। নারী নির্যাতনের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো বাল্যবিবাহ। এটা একজন নারীকে অকালেই মৃত্যুমুখে পতিত করে। নিম্নে বাল্যবিবাহ সম্পর্কে
আলোচনা করা হলো :
নারী নির্যাতনে বাল্যবিবাহ : সাধারণভাবে বাল্যবিবাহ বলতে আমরা বলতে পারি অপরিণত বয়সে যে বিয়ে হয় তাকে বাল্য বিবাহ বলে। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা এমন যে এখানে মেয়েদের বোঝা হিসেবে দেখা হয়। বিপরীতে ছেলেদের দেখা হয় সম্পদ হিসেবে। তাই আমাদের পিতৃতান্ত্রিক সমাজ মেয়েদের পড়াশুনার প্রতি নজর দেয় না। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়। যেমন ১৮৮৯ সালে কলকাতার হরিমোহন মাইত তার ১১ বছর বয়সের স্ত্রীর মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে ঝামেলামুক্ত হয়। আর এসব অল্প বয়সী মেয়েরা প্রাপ্ত বয়সের আগে বিয়ের কারণে সাথে জোর করে সহবাস করতে গেলে স্ত্রী ফুলমনির মৃত্যু হয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বাল্যবিবাহ বেশি লক্ষ্য করা যায়। কারণ এখানে সামাজিক রীতিনীতি, দারিদ্র্য ও সামাজিক নিরাপত্তা নিম্ন মানের। বাংলাদেশে অধিকাংশ মেয়ের বিয়ের গড় বয়স ১৬.৯ বছর। BDHS এর তথ্যমতে বাংলাদেশে ১০-১৪ বছরের শতকরা ৫ জন এবং ১৫-১৯ বছরের বয়সের শতকরা ৪৮ জন বিবাহিত। ইউনিসেফের তথ্যমতে ১৯ বছর বয়সের মধ্যেই মাতৃত্ব লাভ করে শতকরা ৪৮ জন কিশোরী। আরেকটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে বাংলাদেশে ১০-১৪ বছর বয়সের কোন
ছেলে শিশুর বিয়ে হয় না বললেই চলে। এ হার মাত্র প্রতিহাজারে ০.১। অপরদিকে, ঐ বয়সের কন্যা শিশুর বিয়ে গড়ে ১১.৬ জনের। ১৫-১৯ বছর বয়সী ছেলের বিয়ের হার যেখানে প্রতি হাজারে ৮.৫ সেখানে মেয়ে শিশুর হার ১৯৪.৮ জন।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি, অপরিণত বয়সে বিয়ে শুধু নারী ও শিশু মৃত্যুহার বাড়ায় না বরং মও
শিশু উভয়ই পুষ্টিহীনতায় ভোগে। তাই নারী পুরুষ সাম্যভিত্তিক সুষম সমাজ প্রতিষ্ঠায় বাল্যবিবাহ রোধ করতে হবে।