নারী ক্ষমতায়নে শিক্ষার ভূমিকা কী?
অথবা, শিক্ষার অভাবে নারীর ক্ষমতায়নের প্রধান বাধা সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, ‘নারীর ক্ষমতায়নের প্রধান বাধা শিক্ষার অভাব’ -ব্যাখ্যা কর।
অথবা, নারীর ক্ষমতায়নে শিক্ষার ভূমিকা বিশ্লেষণ কর।
অথবা, নারীর ক্ষমতায়নে শিক্ষা কী ভূমিকা পালন করে থাকে?
উত্তর ভূমিকা : বর্তমান বিশ্ব গণতান্ত্রিক। এখানে নারী-পুরুষ সবাই সমান। নারীকে পিছনে ফেলে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ বেশি দূর অগ্রসর হতে পারে না। কিন্তু আমাদের সমাজব্যবস্থা কোনভাবেই নারীর ক্ষমতায়নকে মেনে নিতে রাজি নয়। আমাদের সমাজে নারীর ক্ষমতায়নের পিছনে যেসব প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান তার মধ্যে শিক্ষার অভাব অন্যতম। কেননা ক্ষমতায়নে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই।
নারী সমাজে শিক্ষার অভাব : শিক্ষা মানুষকে আত্মসচেতন করে তুলে, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ সৃষ্টি করে ও সামাজিক মর্যাদা বাড়ায়। কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের তুলনায় অনেক পিছিয়ে। অথচ শিক্ষাই উন্নতির মূলতন্ত্র । বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলে নারী শিক্ষার অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। গ্রামের আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারের মেয়েদের লেখাপড়ার সুযোগ খুব সীমিত। তারা মনে করে মেয়েদের পড়ালেখা শিখিয়ে কি লাভ, বিয়ের পরে তারা শ্বশুর বাড়ি চলে যাবে এবং মেয়েদের যতই শিক্ষিত করা হোক না কেন রান্না ঘরই তাদের শেষ ঠিকানা। এছাড়াও গ্রাম অঞ্চলের নারীদের মধ্যে বিভিন্ন কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি, সামাজিক বাধানিষেধ তাদেরকে শিক্ষা থেকে সরিয়ে দিচ্ছে। ফলে এসব অশিক্ষিত নারী সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এমনকি নিজের ব্যক্তিগত অধিকার সম্পর্কে সচেতন নয়। তাই সমাজের সকল স্তরে সে ক্ষমতায়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
উপসংহার:আমরা বলতে পারি, উপরের আলোচনায় নারী ক্ষমতায়নে শিক্ষার অভাবের যে চিত্র তুলে ধরা হলো তা অত্যন্ত দুঃখজনক। যদিও বর্তমানে নারী শিক্ষার হার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে তবে তা নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে যথেষ্ট নয়। তাই নারীর ক্ষমতায়নে ব্যাপক শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে।